ইসলামে জুমার দিনকে অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ সাপ্তাহিক ঈদ হিসেবে গণ্য করা হয়। ‘জুমা’ শব্দটি আরবি ‘জাম’ থেকে উদ্ভূত, যার অর্থ একত্রিত হওয়া। এই দিনে মুমিনগণ মসজিদে মিলিত হয়ে জামাআতের সঙ্গে জুমার নামাজ আদায় করেন, যা আত্মিক উন্নতি ও আল্লাহর নৈকট্য লাভের অন্যতম মাধ্যম।
Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তাআলা সাফ বলেছেন: “হে ঈমানদারগণ! যখন জুমার দিনে নামাজের আহ্বান দেওয়া হবে, তখন দ্রুত আল্লাহর স্মরণের জন্য ছুটে আসো এবং ক্রয়-বিক্রয় বন্ধ করো। এটি তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা বোঝ।” (সূরা জুমা: ৯)
এই আয়াতের মাধ্যমে স্পষ্ট হয়ে যায় যে জুমার নামাজের গুরুত্ব শুধু আনুষ্ঠানিক নয়, বরং তা ঈমানদারদের জন্য একটি বিশেষ তাওফিক ও প্রশান্তির উৎস।
জুমার দিনে কিছু বিশেষ আমল রয়েছে যা আল্লাহর রহমত ও মাফ পাওয়ার ক্ষেত্রে অনন্য সুযোগ হিসেবে বিবেচিত। হাদিসে বর্ণিত আছে, হযরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে নবী করিম (সা.) বলেন: “যে ব্যক্তি জুমার দিন আসরের নামাজের পর নিচের দরুদটি ৮০ বার পাঠ করবে, আল্লাহ তার ৮০ বছরের গুনাহ মাফ করবেন এবং আমলনামায় ৮০ বছরের নফল ইবাদতের সওয়াব লিখবেন।”
দরুদটি হলো: “اللَّهُمَّ صَلِّ عَلَىٰ مُحَمَّدٍ النَّبِيِّ الأُمِّيِّ وَعَلَىٰ آلِهِ وَسَلِّم تَسْلِيمًا”
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা সাল্লি আলা মুহাম্মাদিন নাবিয়্যিল উম্মিয়্যি ওয়া আলা আলিহি ওয়া সাল্লিম তাসলীমা।
হাদিসে আরও উল্লেখ আছে, জুমার দিনে নবীর ওপর যত বেশি দরুদ পাঠ করা যাবে, তত বেশি মর্যাদা অর্জন হবে। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন:
“যে ব্যক্তি আমার ওপর সবচেয়ে বেশি দরুদ পাঠ করবে, সে কেয়ামতের দিনে আমার সবচেয়ে নিকটবর্তী হবে।” (আবু দাউদ: ১০৪৭)
অন্য এক হাদিসে হযরত আনাস (রা.) বর্ণনা করেছেন, জুমার দিনে একটি দরুদ পাঠ করলে আল্লাহ দশবার রহমত বর্ষণ করেন এবং ফেরেশতাগণ দশবার ইস্তিগফার করেন।
জুমার প্রতিটি মুহূর্ত বান্দার জন্য রহমতের সম্ভার। সঠিকভাবে নামাজ আদায়, আসরের পর দরুদ পাঠ, ইস্তিগফার ও নেক কাজ সব মিলিয়ে দিনটি আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের সোনালী সুযোগ। তাই মুসলমানদের উচিত এই দিনে অলসতা এড়িয়ে, সব কার্যক্রম থেকে বিরত হয়ে পূর্ণ মনোযোগ দিয়ে ইবাদত করা।
জুমা কেবল একটি নামাজের দিন নয়, এটি ঈমান ও নেক আমলের প্রতিফলন। এই দিনে আল্লাহর নৈকট্য অর্জন ও আত্মশুদ্ধির সুযোগ যেন সঠিকভাবে কাজে লাগানো হয়, সেটাই আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত।