গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার ৯ নং সাতপাড় ইউনিয়ন পরিষদের ৯ জন ইউপি সদস্য একযোগে অনাস্থা প্রস্তাব এনেছেন একই ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান প্রনব বিশ্বাস বাপি’র বিরুদ্ধে।
সদস্যরা অভিযোগ করেন, চেয়ারম্যান এলাকার একজন বড় বংশীয় ও প্রভাবশালী লোক। বংশের ভয় ও প্রভাব খাটিয়ে পরিষদের প্রশাসনিক কাজ করেন। নিয়মিতভাবে মাসিক সভা করেন না। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট থেকে কোনো বরাদ্দ পাওয়া গেলে তা পরিষদের সভায় সঠিকভাবে উত্থাপন করেন না। তিনি তার নিজের মতো করে কাজ ভাগ করেন। টাকার বিনিময় ব্যতীত কোন ভিজিডি কার্ড, বয়স্ক ভাতা, মৃত্যু ভাতা জাতীয় কোন সেবা প্রদান করেন না। ইউপি সদস্যরা আরো জানান, স্থাবর সম্পত্তি হস্তান্তর করের প্রাপ্ত অর্থ তিনি কোনো উন্নয়ন কাজে ব্যয় না করে নগদ উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেছেন। আবুল কালাম মোল্যা ও দেলো হাওলাদারের বাড়ির পাশের বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করেন নাই।
২০২১-২২, ২০২২-২৩ অর্থবছরে সাতপাড় ইউনিয়নের হাট-বাজারের কোনো কাজ করেন নাই। বুদ্ধদেবের বাড়ি হতে কৃষ্ণ মন্দির পর্যন্ত রাস্তার উন্নয়নের জন্য বরাদ্দকৃত অর্থের কোনো কাজ করেন নাই। কাবিটা প্রকল্পের বরাদ্দকৃত চামটা বেল্লাল মেম্বারের পুরাতন বাড়ি হতে সাধারণ সম্পাদক দয়াল রায় এর বাড়ী পর্যন্ত নতুন রাস্তার কোন কাজ না করেই তিনি টাকা উত্তোলন করে নিয়েছেন।
যেখানে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের আইনে সুস্পষ্ট করে বলা আছে, স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন, ২০০৯ এর ৩৪ (৪) (খ) (ঘ) ধারা অনুসারে কোন চেয়ারম্যান বা সদস্য পরিষদ বা রাষ্ট্রের জন্য ক্ষতিকর কাজে যুক্ত বলে দায়ী হলে তাকে পদ থেকে অপসারণ করা যাবে। যেখানে ইউনিয়ন পর্যায়ে প্রকল্প বা কার্যক্রম বাছাইয়ের ক্ষেত্রে নিম্নরূপ খাতভিত্তিক বিভাজন করা হয়- কৃষি ও ক্ষুদ্র সেচ ১০-১৫%, মৎস্য ও পশু সম্পদ ৫-১০%, ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প ৫-৭%, বস্তুগত অবকাঠামো ১২-২০%, গৃহ নির্মাণ বস্তুগত পরিকল্পনা ৪-৭%, জনস্বাস্থ্য ১৫-২০%, ক্রীড়া ও সংস্কৃতি ১০-২০%, বিধি ১০-২০%। সেখানে চেয়ারম্যান কোন প্রকার আইনের তোয়াক্কা না করে নিজের মনের মতো করে কাজ পরিচালনা করছেন।
এ ব্যাপারে ১নং ওয়ার্ডের প্যানেল চেয়ারম্যান কৌশিক কীর্ত্তনীয়ার মুখোমুখি হলে তিনি জানান, আমরা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর অনাস্থা প্রস্তাব দিয়েছি। এখন রায় দেখার জন্য অপেক্ষায় আছি।
৪নং ওয়ার্ডের মেম্বার দীপক বিশ্বাসের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, সুপেয় পানির জন্য যে ট্যাংকি ৮৫০ টাকা রেটে পাওয়ার কথা সেখানে ২২৫০ টাকা চেয়ারম্যানের কাছে জমা দিয়ে নিতে হবে। আর মেম্বাররা যদি এর বেশি নেয় নিতে পারে। তিনি আরো জানান, ট্যাংকি বাবদ আমার একলক্ষ টাকা অগ্রীম জমা দেওয়া আছে। ৮নং ওয়ার্ড মেম্বার মো. বেল্লাল এর মুখোমুখি হলে তিনি জানান, ভিজিডি কার্ডে মুসলমানদের তিনশত কার্ডের বিপরীতে ১২০টি কার্ড বরাদ্দ করতে চেয়ারম্যান রাজি হয়েছে।
চেয়ারম্যানের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, প্রত্যেকটি কাজের সিবিসি হচ্ছে মেম্বার। আর সব উন্নয়ন কাজের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে প্রমাণিত হয়েছে। প্রত্যেকটি কাজই সম্পন্ন করা হয়েছে।