ঢাকা ১২:১৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রাস্তায় বাজার

  • দৈনিক টার্গেট
  • প্রকাশের সময়: ০৩:১৩:০৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ মে ২০২৪
  • ১১৬ বার পঠিত

আমাদের দেশের অনেক কিছুই যে চলে ফ্রি স্টাইলে, তার একটি উদাহরণ হলো ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক। যাঁরা এই মহাসড়কে চলাচল করেন, তাঁদের অনেকেই জানেন, মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে সবজির হাট বসে এবং সেই হাটের প্রসার এতটাই হয়েছে যে মহাসড়কের যান চলাচলও বিঘ্নিত হয়। যানজট যখন হয়, তখন সেটা কাটিয়ে তুলতে পারত যারা, তাদের তৎপরতা দেখা যায় না। ফলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা স্থবির হয়ে থাকে রাস্তা; কিংবা যদি যান চলাচল হয়, তাহলেও তা হয় শম্বুকগতিতে।

ধরুন, কোনো চলচ্চিত্রকার এ অব্যবস্থা নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণ করতে চান। তাহলে তাঁকে সরেজমিনে হাজির হতে হবে অকুস্থলে। তাঁরা শুরুতেই খেয়াল করবেন, নরসিংদীর জঙ্গি শিবপুর, বারৈচা ও মরজাল বাসস্ট্যান্ডে উপচে উঠছে বাজার। হাটবারেই যাওয়া ভালো। তাহলে ঠিকঠাকভাবে চোখে পড়বে অনিয়মগুলো। পরিচালক মহাশয় অনায়াসে দেখতে পাবেন, সবজির বাজারটা বাজার থেকে বের হয়ে রওনা দিয়েছে মহাসড়কের দিকে। সেখানে মৌসুমি ফলগুলো দেখে তাঁর মন প্রশান্ত হয়ে যেতে পারে। কিন্তু একটু পরই তিনি বুঝতে পারবেন, সামনে এগোনোর কোনো উপায় নেই। এত মানুষ কোথা থেকে এসেছে, এ কথা কাউকে জিজ্ঞেস করলে জানতে পারবেন, দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে সবজি কিনতে চলে এসেছেন পাইকারি ব্যবসায়ীরা। এখান থেকে সবজি কেনা হলে লাভ থাকে বেশি। আর তাই বাজার ছড়িয়ে পড়ে মহাসড়কে। শত শত সবজিবোঝাই ভ্যানগাড়ি দাঁড়িয়ে থাকে মহাসড়কে। তাদের সরাবে, সাধ্যি কার?

হ্যাঁ, কারও একেবারে সাধ্য নেই, সেটা অবশ্য ঠিক নয়। এই তীব্র যানজটের কারণ যেহেতু জানা, সেহেতু কারণটা সরিয়ে দিলেই মহাসড়ক দিব্যি যানজটমুক্ত হয়ে উঠতে পারে। কারা এই সংকট হটিয়ে দিতে পারে? অবশ্যই হাইওয়ে পুলিশ। এই মহাসড়কের সমস্যা মোকাবিলার দায়িত্ব এই হাইওয়ে পুলিশের। শুধু তাদেরই-বা হবে কেন, স্থানীয় প্রভাবশালী মহলও তো যানজট হটিয়ে দেওয়ার কাজটা করতে পারে। কেন মহাসড়কেই উঠে আসবে হাট-বাজার, সেটা জেনে কোথায় তা সরিয়ে নেওয়া যায়, সে ভাবনা তো তাদেরই করতে হবে। কিন্তু ক্রেতা-বিক্রেতাদের এ ব্যাপারে সচেতন করে তুলবে যারা, তারাই তো উদাসীন হয়ে বসে আছে!

এখানে এসে থামতে হয়। মুশকিল হলো, যার যে কাজ, সেটা সে করবে না কেন? হাইওয়েতে স্বাভাবিকভাবে যান চলাচল করতে পারছে কি না, সেটা দেখার দায়িত্ব যাদের, তারা যদি যানজটকেই স্বাভাবিক বলে ভেবে বসে থাকে, তাহলে সমস্যার সমাধান হবে কী করে? শর্ষের মধ্যে থাকা এই ভূতকে সরানো তো সহজ কথা নয়। এ আলস্য, এ উদাসীনতা তো বছরের পর বছর ধরে রপ্ত করা হয়েছে। হঠাৎ করে ‘কর্তব্যের আহ্বানে’ সাড়া দেওয়ার মতো কিছু তো ঘটেনি।

এই যে ‘কিছু ঘটেনি’ তার দায় কিন্তু নিতে হবে পুলিশের ওপরওয়ালাদের। স্থানীয় রাজনৈতিক নেতারাও এ ক্ষেত্রে হস্তক্ষেপ করতে পারেন। মহাসড়ক স্বাভাবিক এবং সচল করাটা খুব সহজ ব্যাপার। কিন্তু বিড়ালের গলায় ঘণ্টা বাঁধবে কে?

রাস্তায় বাজার

প্রকাশের সময়: ০৩:১৩:০৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ মে ২০২৪

আমাদের দেশের অনেক কিছুই যে চলে ফ্রি স্টাইলে, তার একটি উদাহরণ হলো ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক। যাঁরা এই মহাসড়কে চলাচল করেন, তাঁদের অনেকেই জানেন, মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে সবজির হাট বসে এবং সেই হাটের প্রসার এতটাই হয়েছে যে মহাসড়কের যান চলাচলও বিঘ্নিত হয়। যানজট যখন হয়, তখন সেটা কাটিয়ে তুলতে পারত যারা, তাদের তৎপরতা দেখা যায় না। ফলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা স্থবির হয়ে থাকে রাস্তা; কিংবা যদি যান চলাচল হয়, তাহলেও তা হয় শম্বুকগতিতে।

ধরুন, কোনো চলচ্চিত্রকার এ অব্যবস্থা নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণ করতে চান। তাহলে তাঁকে সরেজমিনে হাজির হতে হবে অকুস্থলে। তাঁরা শুরুতেই খেয়াল করবেন, নরসিংদীর জঙ্গি শিবপুর, বারৈচা ও মরজাল বাসস্ট্যান্ডে উপচে উঠছে বাজার। হাটবারেই যাওয়া ভালো। তাহলে ঠিকঠাকভাবে চোখে পড়বে অনিয়মগুলো। পরিচালক মহাশয় অনায়াসে দেখতে পাবেন, সবজির বাজারটা বাজার থেকে বের হয়ে রওনা দিয়েছে মহাসড়কের দিকে। সেখানে মৌসুমি ফলগুলো দেখে তাঁর মন প্রশান্ত হয়ে যেতে পারে। কিন্তু একটু পরই তিনি বুঝতে পারবেন, সামনে এগোনোর কোনো উপায় নেই। এত মানুষ কোথা থেকে এসেছে, এ কথা কাউকে জিজ্ঞেস করলে জানতে পারবেন, দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে সবজি কিনতে চলে এসেছেন পাইকারি ব্যবসায়ীরা। এখান থেকে সবজি কেনা হলে লাভ থাকে বেশি। আর তাই বাজার ছড়িয়ে পড়ে মহাসড়কে। শত শত সবজিবোঝাই ভ্যানগাড়ি দাঁড়িয়ে থাকে মহাসড়কে। তাদের সরাবে, সাধ্যি কার?

হ্যাঁ, কারও একেবারে সাধ্য নেই, সেটা অবশ্য ঠিক নয়। এই তীব্র যানজটের কারণ যেহেতু জানা, সেহেতু কারণটা সরিয়ে দিলেই মহাসড়ক দিব্যি যানজটমুক্ত হয়ে উঠতে পারে। কারা এই সংকট হটিয়ে দিতে পারে? অবশ্যই হাইওয়ে পুলিশ। এই মহাসড়কের সমস্যা মোকাবিলার দায়িত্ব এই হাইওয়ে পুলিশের। শুধু তাদেরই-বা হবে কেন, স্থানীয় প্রভাবশালী মহলও তো যানজট হটিয়ে দেওয়ার কাজটা করতে পারে। কেন মহাসড়কেই উঠে আসবে হাট-বাজার, সেটা জেনে কোথায় তা সরিয়ে নেওয়া যায়, সে ভাবনা তো তাদেরই করতে হবে। কিন্তু ক্রেতা-বিক্রেতাদের এ ব্যাপারে সচেতন করে তুলবে যারা, তারাই তো উদাসীন হয়ে বসে আছে!

এখানে এসে থামতে হয়। মুশকিল হলো, যার যে কাজ, সেটা সে করবে না কেন? হাইওয়েতে স্বাভাবিকভাবে যান চলাচল করতে পারছে কি না, সেটা দেখার দায়িত্ব যাদের, তারা যদি যানজটকেই স্বাভাবিক বলে ভেবে বসে থাকে, তাহলে সমস্যার সমাধান হবে কী করে? শর্ষের মধ্যে থাকা এই ভূতকে সরানো তো সহজ কথা নয়। এ আলস্য, এ উদাসীনতা তো বছরের পর বছর ধরে রপ্ত করা হয়েছে। হঠাৎ করে ‘কর্তব্যের আহ্বানে’ সাড়া দেওয়ার মতো কিছু তো ঘটেনি।

এই যে ‘কিছু ঘটেনি’ তার দায় কিন্তু নিতে হবে পুলিশের ওপরওয়ালাদের। স্থানীয় রাজনৈতিক নেতারাও এ ক্ষেত্রে হস্তক্ষেপ করতে পারেন। মহাসড়ক স্বাভাবিক এবং সচল করাটা খুব সহজ ব্যাপার। কিন্তু বিড়ালের গলায় ঘণ্টা বাঁধবে কে?