মহানবি হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর জন্ম সাল হিসেবে ৫৭১ খ্রিস্টাব্দকে উল্লেখ করা হয়। তবে আরবি হিজরি সাল অনুযায়ী তার জন্ম তারিখ নিয়ে মতভেদ রয়েছে। মহানবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জীবনী লেখকদের মধ্যে ইবনে ইসহাক প্রথম সারির জীবনীকার।
তিনি বলেন, মহানবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাতিবাহিনীর ঘটনার বছর ১২ রবিউল আউয়াল জন্মগ্রহণ করেছেন। (সিরাতে ইবনে হিশাম, খণ্ড-১, পৃ. ১৫৮)
আধুনিক যুগের সিরাতবিষয়ক গ্রন্থ ‘আর রহিকুল মাখতুম’-এর মতে নবীজি ৯ রবিউল আউয়াল জন্মগ্রহণ করেন।(আর রহিকুল মাখতুম, খণ্ড-১, পৃ. ৪৫)
মুফতি মুহাম্মদ শফি (রহ.) এর মতে, জন্মের দিনটি রবিউল আউয়াল মাসের সোমবারে নির্ধারিত হলেও তারিখ নিয়ে চারটি মত প্রচলিত রয়েছে। ২, ৮, ১০, ও ১২ রবিউল আউয়াল। হাফিজ মুগলতাই (রহ.) নবীজির জন্ম ২ তারিখ প্রধান্য দিয়েছেন। আবার তারিখে ইবনে আছির গ্রন্থে ১২ তরিখে জন্মের কথা উল্লেখ আছে। গবেষক মাহমুদ পাশা জ্যোতির্বিজ্ঞানের আলোকে ৯ তারিখ গ্রহণ করেছেন। (সিরাতে খাতামুল আম্বিয়া পৃষ্ঠা ১৭)
মহানবী হজরত মুহাম্মদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্ম তারিখ নিয়ে বিতর্ক থাকলেও দিন হিসেবে সোমবার সম্পর্কে কোনো মতভেদ নেই। কারণ জীবনচরিত রচয়িতারা একমত যে রবিউল আউয়াল মাসের ৮ থেকে ১২ তারিখের মধ্যে সোমবার দিন নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ পৃথিবীতে আগমন করেন।
রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জন্ম নিয়ে ইতিহাসবিদদের মধ্যে মতভেদ থাকলেও, মৃত্যুর তারিখ নিয়ে তেমন মতভেদ দেখা যায় না।
সিরাতের প্রসিদ্ধতম গ্রন্থ, আস-সিরাতুন নববিয়্যাহ, আল মাগাজি, আস-সিরাতুল হালাবিয়্যাহ, আল-রাহিকুল মাখতুম, যাদুল মাআদ, আল-সিরাতুল মুস্তাকিমসহ বিভিন্ন সিরাতের গ্রন্থে নবীজির মৃত্যুর তারিখ ১২ রবিউল আওয়ালই লেখা আছে। এজন্যই অনেক আলেমরা ১২ রবিউল আউয়ালে ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করতে দ্বিমত পোষণ করেন। নবীজির মৃত্যু দিবসে ঈদ তথা খুশি প্রকাশ করার যৌক্তকতা তারা দেখেন না।