দৈনিক পাঁচ বার নামাজ পড়া প্রত্যেক মুসলমানের ওপর ফরজ। সেই নামাজ আদায় করতে হলে অজু করতে হয়। এই অজু করলে গুনাহ ঝরে যায়। এ ছাড়াও অন্যান্য ফজিলতের কথা এসেছে হাদিসসমূহে।
রসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘কোনো মুসলিম কিংবা মুমিন বান্দা অজুর সময় যখন মুখমণ্ডল ধৌত করে তখন তার চোখ দিয়ে কৃত গুনাহ পানির সঙ্গে বা পানির শেষ বিন্দুর সঙ্গে বের হয়ে যায়। যখন সে দুই হাত ধৌত করে তখন তার দুই হাতের স্পর্শের মাধ্যমে সব গুনাহ পানি অথবা পানির শেষ বিন্দুর সঙ্গে ঝরে যায়। এরপর যখন সে দুই পা ধৌত করে, তখন তার দুই পা দিয়ে হাঁটার মাধ্যমে অর্জিত সব গুনাহ পানির সঙ্গে অথবা পানির শেষ বিন্দুর সঙ্গে ঝরে যায়, এমনকি সে যাবতীয় গুনাহ থেকে মুক্ত ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন হয়ে যায়।’ (মুসলিম ৪৬৫)
অজুর ফজিলত সম্পর্কে রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘আমি কি তোমাদের এমন কাজ সম্পর্কে জানাবো না, যা করলে আল্লাহ তার বান্দার পাপরাশি দূর করে দেন এবং মর্যাদা বৃদ্ধি করেন?’ লোকেরা বলল, হে আল্লাহর রসুল, অবশ্যই আপনি তা বলুন। তখন তিনি বললেন, ‘অসুবিধা ও কষ্ট থাকা সত্ত্বেও পরিপূর্ণভাবে অজু করা। এক নামাজ আদায়ের পর পরবর্তী ওয়াক্তের নামাজ পড়ার জন্য অপেক্ষায় থাকা। আর এগুলোই হলো সীমান্ত প্রহরা (অর্থাৎ আল্লাহর আনুগত্যের গণ্ডির মধ্যে নিজেকে আবদ্ধ রাখা)।’ (মুসলিম ২৫১)
অপর এক হাদিসে রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আমার এ অজুর মতো (সুন্দর করে) অজু করে দুরাকাত (তাহিয়্যাতুল অজু) নামাজ আদায় করবে এর মধ্যে অন্য কোনো চিন্তা মনে আনবে না, আল্লাহ তাআলা তার আগে হয়ে যাওয়া সব (সগিরা) গুনাহ ক্ষমা করে দেবেন। (বুখারি ১৬৪, ১৬০)
গুনাহ মাফ হওয়া ছাড়াও অজুর কারণে অন্যান্য ফজিলত রয়েছে। রসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে স্থান পর্যন্ত অজুর পানি পৌঁছবে, সে স্থান পর্যন্ত মুমিন ব্যক্তির ঔজ্জ্বল্য বা সৌন্দর্য পৌঁছবে।’ (মুসলিম ৪৭৪)
অজু করলে শয়তানের প্রভাবও দূর হয়। রসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমাদের কেউ যখন ঘুমিয়ে পড়ে, তখন শয়তান তার ঘাড়ের পিছনে তিনটি গিঁট দেয়। প্রতি গিঁটে সে এই বলে ঘুমাও, তোমার সামনে রয়েছে দীর্ঘ রাত, অতএব তুমি শুয়ে থাকো। এরপর সে যদি জাগ্রত হয়ে আল্লাহকে স্মরণ করে তখন একটি গিঁট খুলে যায়, অজু করলে আরেকটি গিঁট খুলে যায়, এরপর নামাজ আদায় করলে আরেকটি গিঁট খুলে যায়। তখন তার প্রভাত হয়, উৎফুল্ল মনে ও অনাবিল চিত্তে। অন্যথায় সে সকালে উঠে কলুষ কালিমা ও আলস্য সহকারে।’ (বুখারি ১১৪২)