ঢাকা ১২:৫৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ২১ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রাজশাহীতে নির্যাতিত হচ্ছে কন্যাশিশু

  • দৈনিক টার্গেট
  • প্রকাশের সময়: ০১:৪৪:৩৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ অক্টোবর ২০২৪
  • ৫৮ বার পঠিত

দেশে বাল্যবিবাহ কাগজে কলমে কমালেও তার বাস্তবতা বলছে অন্যরকম কথা। বিশেষ ক্ষেত্রে বর্তমান কিশোরীদের বয়স বেশি দেখিয়ে বিয়ে দিচ্ছেন তাদের অভিভাবকরা। ১২ থেকে ১৪ বছরের মেয়েদের বয়স ১৮ দেখিয়ে জন্মনিবন্ধন করিয়ে নিচ্ছেন তারা এরপর বাল্যবিবাহের শিকার হচ্ছে শিশুরা।

এসব ক্ষেত্রে সহযোগীর ভূমিকায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। শুধু গ্রামেই নয়, শহরেও অহরহ ঘটছে এমন ঘটনা।অথচ অভিভাবক, স্থানীয় প্রশাসন এবং সরকার যথাযথ ও কঠোর হলে কিশোরীরা এমন পরিস্থিতি থেকে রক্ষা পেতে পারে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

কন্যাশিশুর উন্নয়নে নানা স্লোগান প্রচারিত হলেও সমাজে তার কোন প্রভাব পড়ছে না কিছুতেই। শিশুদের শিক্ষা, স্বাস্থ্যে এবং অধিকার নিশ্চিতে রাষ্ট্র ও পরিবার থেকে নেই পর্যাপ্ত পরিমাণে বিনিয়োগও। এ অবস্থায় কন্যাশিশুর স্বপ্ন ভবিষ্য আগামীর বাংলাদেশ প্রতিপাদ্যকে নিয়ে আজ পালিত হচ্ছে জাতীয় কন্যাশিশু দিবস।

বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, কম বয়সে বিয়ের পিঁড়িতে না বসে কন্যাশিশুরা যাতে তাদের শিক্ষাজীবন অব্যাহতি রাখতে পারেন, সেজন্য সরকারের সুনির্দিষ্ট প্রকল্প থাকা দরকারি। সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীতে কন্যাশিশু ও তাদের অভিভাবকদেরও অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা বলা হলেও তার কোন বাস্তবায়ন নেই বর্তমানে।

রাজশাহীতে কন্যাশিশুর নির্যাতিতা হয়েছে গত ৯ মাসে ৩০ জন। এর মধ্যে রয়েছে ধর্ষনে ৪ জন, গনধর্ষনে ১ জন, ধর্ষণের চেষ্টা ৪ জন, যৌননির্যাতন ৪ জন, হত্যার চেষ্টা ১ জন, আত্মহত্যা ৬ জন, আত্মহত্যার চেষ্টা ১ জন, অপহরণ ১ জন, নিখোঁজ ২ জন, নির্যাতন ৬ জন কন্যাশিশু।

মাঠ পর্যায়ে দেখা যায়, অনেক এলাকাতেই এখনো ১৮ বছরের কম বয়সী মেয়েদের বিয়ে দেওয়ার প্রচলন আছে। বিয়ের কথাবার্তা শুরু হলেই মেয়েদের জন্মনিবন্ধন প্রক্রিয়া শুরু করেন অভিভাবকরা। কম বয়সীদের ১৮ বছর বা তার বেশি দেখিয়ে নিবন্ধন করানো হয় বা নানা চলছাতুরির করে বিয়ের ব্যবস্থা করে। এজন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা দেওয়ার অভিযোগও আছে কিছু স্থানে। পরে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এ নিবন্ধন ব্যবহার করে জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি হয় বলে সেসব বাল্যবিবাহ রোধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়াও সম্ভব হয় না।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ইউনিয়ন চেয়ারম্যান বাল্যবিয়ের খবর শোনামাত্র তা ঠেকানোর উদ্যোগ নেন। তবে সেসবের ক্ষেত্রে বিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে বন্ধ হলেও পরবর্তী সময়ে গোপনেই আবারও ব্যবস্থা করেন অভিভাবকরাই।

লফসের নির্বাহী পরিচালক শাহানাজ পারভীন বলেন, বাল্যবিবাহ বন্ধের আহ্বান প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারীবাহিনীর নজরদারি বৃদ্ধির পাশাপাশি সামাজিক ও রাষ্ট্রীয়ভাবে ব্যাপক প্রচার কার্যক্রম বাড়াতে হবে। যৌন ও প্রজনন শিক্ষাসহ মানসম্পন্ন শিক্ষায়তনে বেশি করে বিনিয়োগ করতে হবে। লিঙ্গবৈষম্যের ও কুসংস্কারের থেকে বেরিয়ে এসে এবং নারীর জন্য উপযুক্তভাবে কাজ ও কাজের পরিবেশ নিশ্চিত করে তাদের জন্য এমন ভবিষ্যতের ও ব্যবস্থা করতে হবে তাদের অধিকার।

স্বদেশ প্রত্যাবর্তনে রাসেল ও সুইটকে জাতীয়তাবাদী পরিবার ৭ নং ওয়ার্ড সিলেট মহানগরের সংবর্ধনা

রাজশাহীতে নির্যাতিত হচ্ছে কন্যাশিশু

প্রকাশের সময়: ০১:৪৪:৩৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ অক্টোবর ২০২৪

দেশে বাল্যবিবাহ কাগজে কলমে কমালেও তার বাস্তবতা বলছে অন্যরকম কথা। বিশেষ ক্ষেত্রে বর্তমান কিশোরীদের বয়স বেশি দেখিয়ে বিয়ে দিচ্ছেন তাদের অভিভাবকরা। ১২ থেকে ১৪ বছরের মেয়েদের বয়স ১৮ দেখিয়ে জন্মনিবন্ধন করিয়ে নিচ্ছেন তারা এরপর বাল্যবিবাহের শিকার হচ্ছে শিশুরা।

এসব ক্ষেত্রে সহযোগীর ভূমিকায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। শুধু গ্রামেই নয়, শহরেও অহরহ ঘটছে এমন ঘটনা।অথচ অভিভাবক, স্থানীয় প্রশাসন এবং সরকার যথাযথ ও কঠোর হলে কিশোরীরা এমন পরিস্থিতি থেকে রক্ষা পেতে পারে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

কন্যাশিশুর উন্নয়নে নানা স্লোগান প্রচারিত হলেও সমাজে তার কোন প্রভাব পড়ছে না কিছুতেই। শিশুদের শিক্ষা, স্বাস্থ্যে এবং অধিকার নিশ্চিতে রাষ্ট্র ও পরিবার থেকে নেই পর্যাপ্ত পরিমাণে বিনিয়োগও। এ অবস্থায় কন্যাশিশুর স্বপ্ন ভবিষ্য আগামীর বাংলাদেশ প্রতিপাদ্যকে নিয়ে আজ পালিত হচ্ছে জাতীয় কন্যাশিশু দিবস।

বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, কম বয়সে বিয়ের পিঁড়িতে না বসে কন্যাশিশুরা যাতে তাদের শিক্ষাজীবন অব্যাহতি রাখতে পারেন, সেজন্য সরকারের সুনির্দিষ্ট প্রকল্প থাকা দরকারি। সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীতে কন্যাশিশু ও তাদের অভিভাবকদেরও অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা বলা হলেও তার কোন বাস্তবায়ন নেই বর্তমানে।

রাজশাহীতে কন্যাশিশুর নির্যাতিতা হয়েছে গত ৯ মাসে ৩০ জন। এর মধ্যে রয়েছে ধর্ষনে ৪ জন, গনধর্ষনে ১ জন, ধর্ষণের চেষ্টা ৪ জন, যৌননির্যাতন ৪ জন, হত্যার চেষ্টা ১ জন, আত্মহত্যা ৬ জন, আত্মহত্যার চেষ্টা ১ জন, অপহরণ ১ জন, নিখোঁজ ২ জন, নির্যাতন ৬ জন কন্যাশিশু।

মাঠ পর্যায়ে দেখা যায়, অনেক এলাকাতেই এখনো ১৮ বছরের কম বয়সী মেয়েদের বিয়ে দেওয়ার প্রচলন আছে। বিয়ের কথাবার্তা শুরু হলেই মেয়েদের জন্মনিবন্ধন প্রক্রিয়া শুরু করেন অভিভাবকরা। কম বয়সীদের ১৮ বছর বা তার বেশি দেখিয়ে নিবন্ধন করানো হয় বা নানা চলছাতুরির করে বিয়ের ব্যবস্থা করে। এজন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা দেওয়ার অভিযোগও আছে কিছু স্থানে। পরে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এ নিবন্ধন ব্যবহার করে জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি হয় বলে সেসব বাল্যবিবাহ রোধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়াও সম্ভব হয় না।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ইউনিয়ন চেয়ারম্যান বাল্যবিয়ের খবর শোনামাত্র তা ঠেকানোর উদ্যোগ নেন। তবে সেসবের ক্ষেত্রে বিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে বন্ধ হলেও পরবর্তী সময়ে গোপনেই আবারও ব্যবস্থা করেন অভিভাবকরাই।

লফসের নির্বাহী পরিচালক শাহানাজ পারভীন বলেন, বাল্যবিবাহ বন্ধের আহ্বান প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারীবাহিনীর নজরদারি বৃদ্ধির পাশাপাশি সামাজিক ও রাষ্ট্রীয়ভাবে ব্যাপক প্রচার কার্যক্রম বাড়াতে হবে। যৌন ও প্রজনন শিক্ষাসহ মানসম্পন্ন শিক্ষায়তনে বেশি করে বিনিয়োগ করতে হবে। লিঙ্গবৈষম্যের ও কুসংস্কারের থেকে বেরিয়ে এসে এবং নারীর জন্য উপযুক্তভাবে কাজ ও কাজের পরিবেশ নিশ্চিত করে তাদের জন্য এমন ভবিষ্যতের ও ব্যবস্থা করতে হবে তাদের অধিকার।