ভারতে খুন হওয়া ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার ‘স্বর্ণ চোরাচালানকারী’ ছিলেন- দেশটির গণমাধ্যমে উঠে আসা এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘সে কী ছিল বড় কথা নয়। আনোয়ারুলকে তৃতীয়বার মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিল তার জনপ্রিয়তার জন্য। এলাকায় গিয়ে দেখেন তার জন্য শোকার্ত এলাকার মানুষেরা।’
বৃহস্পতিবার (২৩ মে) তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে আওয়ামী লীগের নবগঠিত যুব ও ক্রীড়া উপকমিটির সদস্যদের পরিচিতি সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ভারতে নিহত এমপি অপকর্মে জড়িত ছিল কি না- তা তদন্তে বেরিয়ে আসবে। তদন্ত শেষ হওয়ার আগে কিছু বলতে পারছি না। আওয়ামী লীগে অপরাধীদের কোনো ঠাঁই নেই।
তিনি আরও বলেন, ‘ভেতরে সে কোনো অপকর্ম করে কি না এসব যখন প্রমাণ হয় তখন শেখ হাসিনা কাউকে ছাড় দেন না, দলের লোক হলেও। জিরো টলারেন্স নীতি তার।’
‘ভারতের গণমাধ্যমে এসেছে চোরাচালানের কথা। তার মৃত্যুর আগে দেশের কোনো সাংবাদিকের অনুসন্ধান প্রতিবেদনে কেন বিষয়টা এলো না?’ প্রশ্ন রাখেন তিনি।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘১৫ আগস্টে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জিয়াউর রহমান জড়িত না থাকলে খুনিদের কেন নিরাপদে বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ দিলেন? বিভিন্ন দূতাবাসে খুনিদের চাকরি দিয়েছেন। সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনী এনে খুনিদের দায়মুক্তি দিতে বিচারের পথ রুদ্ধ করেছেন। সাংবিধানিকভাবে খুনিদের বিচারের পথ কেন রুদ্ধ করলেন? মির্জা ফখরুলের কাছে জানতে চাই।’
বিএনপি প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান বাকশালের সদস্য হয়েছিলেন দাবি করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সেনাবাহিনীর প্রধানের বাকশালের সদস্য পদ হওয়ার নিয়ম ছিল। কিন্তু উপ-সেনাপ্রধানের সে সুযোগ ছিল না। জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুর কাছে দরখাস্ত করে কাকুতি মিনতি করে বাকশালের সদস্য হয়েছিলেন। এর প্রমাণ আছে। বাকশালের ৭১ নম্বর সদস্য। ইতিহাস নিয়ে বিএনপি বারবার মিথ্যাচার করছে।’
মন্ত্রী আরও বলেন, ‘বিএনপি বলছে আজকে ছাত্রলীগ যুবলীগ নাকি অর্থ পাচার করছে। অর্থ পাচারে বিএনপি সুপরিচিত। সিঙ্গাপুর আমেরিকায় কে অর্থ পাচার করেছে? তারেক রহমান ও কোকো। সিঙ্গাপুরে পাচার হওয়া অর্থের একটা অংশ উদ্ধার করা হয়েছে। এফবিআই ঢাকায় এসে সাক্ষ্য দিয়ে গেছে। নিজেরা যে অপরাধে অপরাধী তার দায় তারা ছাত্রলীগ যুবলীগের ওপর চাপাতে চায়। এরা কত মিথ্যাচার অপপ্রচার করতে পারে!’
ডলার সংকট নিয়ে তিনি বলেন, ‘বৈশ্বিক নানাবিধ কারণে ডলার সংকট, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি। সরকার বসে নেই। কাজ করে যাচ্ছে।’
বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গন নিয়ে হতাশার কোনো কারণ নেই জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘ক্রিকেট অনেক এগিয়ে গেছে। ফুটবলটা আরও এগোতে পারত। বিশ্বকাপ ফুটবলে যখন দেখি আইসল্যান্ডের মতো দেশ খেলছে, তখন ভাবি আমরা কেন পারি না।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, তার যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকার সময় বাংলাদেশ সাফ ফুটবলে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে, বিশ্বকাপ ক্রিকেটে বাংলাদেশ খেলার সুযোগ পেয়েছে।
সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ যখন মালদ্বীপের সঙ্গে হারে তখন খারাপ লাগে। বাংলাদেশের মেয়েরা ভালো করছে। ক্রীড়াবান্ধব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খেলোয়াড়দের পুরস্কৃত করেন, সহযোগিতা করেন, বিভিন্নভাবে উৎসাহিত করার চেষ্টা করেন। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী আমাদের সকলের চেয়ে ডায়নামিক। সে কারণে বাংলাদেশ আজকে বিশ্বের বিস্ময়।’
যুব ও ক্রীড়া উপকমিটির চেয়ারম্যান মোজাফফর হোসেন পল্টুর সভাপতিত্বে পরিচিত সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন উপকমিটির কো-চেয়ারম্যান হারুনুর রশিদ, যুব ও ক্রীড়া উপকমিটির সদস্য সচিব ও হুইপ মাশরাফি বিন মর্তুজা, সংস্কৃতিবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী নাহিদ ইজহার খানসহ উপকমিটির সদস্যরা।