ঢাকা ০৯:৪৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সফলতার মূল চাবিকাঠি কী ইসলামে?

  • দৈনিক টার্গেট
  • প্রকাশের সময়: ১০:১৭:০৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪
  • ৮৯ বার পঠিত

জীবনযাত্রায় অবিচ্ছেদ্য অংশ হলো জীবিকা অর্জন। ইসলামের এটি একান্তই ফরজ হিসেবেই গণ্য করা হয়েছে এবং এ অর্জনের পথে কঠোরতা পরিশ্রমী সফলতার চাবিকাঠি। কুরআন ও হাদিসে পরিশ্রমের গুরুত্ব এবং জীবিকা অর্জনের মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের ওপর বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে।

ইসলামে পরিশ্রমী করা, কাজের প্রতিবাদ নিষ্ঠাবান এবং সততার সঙ্গে জীবনধারণ করা আমাদের কাছে এক ধর্মীয় কর্তব্য। কঠোরতা পরিশ্রমের মাধ্যমেই একদিকেই যেমনটি আমরাও নিজেরাই জীবিকা অর্জন করি, তেমনি সমাজে সম্মান ও উপকারিতা লাভ করি, যা আমাদের আখিরাতেও সফলতার দিকে নিয়ে যায়।

জীবন যাত্রার অবিচ্ছেদ্য অংশ হলো জীবিকা অর্জন। ইসলামে একে ফরজ বলে গণ্য করা হয়। এই অর্জনের পথে কঠোর পরিশ্রমই হলো সফলতার একমাত্র চাবিকাঠি। কোরআনের সূরা নাজিয়াতে বলা হয়েছে মানুষকে তার কৃত কর্ম অনুযায়ী ফল দেয়া হবে। অর্থাৎ, আমরা যত পরিশ্রম করব, তার ফল ততই ভোগ করব।

দুনিয়াতে জীবন যাপনের অর্থ হল এক অবিরাম সংগ্রাম। এই সংগ্রামে সফল হতে হলে কঠোর পরিশ্রমই একমাত্র মন্ত্র। রোদের তাপে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে, ঘাম ঝরিয়ে নিজেকে গড়ে তুলতে হবে। এই পরিশ্রমই আমাদেরকে নিজের লক্ষ্যের কাছে পৌঁছে দেবে।

یٰۤاَیُّہَا الۡاِنۡسَانُ اِنَّکَ کَادِحٌ اِلٰی رَبِّکَ کَدۡحًا فَمُلٰقِیۡہِ ۚ

কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেছেন, হে মানুষ! তুমি নিজ প্রতিপালকের কাছে না পৌঁছা পর্যন্ত নিরবচ্ছিন্নভাবে পরিশ্রম করে যাবে, পরিশেষে তুমি তাঁর সঙ্গে সাক্ষাত করবে। (সুরা ইনশিরাহ :৬)

یٰۤاَیُّہَا الۡاِنۡسَانُ اِنَّکَ کَادِحٌ اِلٰی رَبِّکَ کَدۡحًا فَمُلٰقِیۡہِ ۚ কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেছেন, হে মানুষ! তুমি নিজ প্রতিপালকের কাছে না পৌঁছা পর্যন্ত নিরবচ্ছিন্নভাবে পরিশ্রম করে যাবে, পরিশেষে তুমি তাঁর সঙ্গে সাক্ষাত করবে। (সুরা ইনশিরাহ :৬)

এই আয়াত আমাদেরকে জানিয়ে দেয়, দুনিয়ার জীবন মাত্র একটা পরীক্ষা। এই পরীক্ষায় সফল হতে হলে আমাদেরকে ক্রমাগত পরিশ্রম করে যেতে হবে।নিজের কাজে লজ্জা করা যাবে না। লজ্জা করতে হবে নিজের অলসতা নিয়ে আর নিজের ফুটানি নিয়ে ।

لَقَدۡ خَلَقۡنَا الۡاِنۡسَانَ فِیۡ کَبَدٍ ؕ আল্লাহ তায়ালা অপর আয়াতে স্পষ্টভাবে বলেছেন, “নিশ্চয় আমি মানুষকে কষ্ট ও পরিশ্রম নির্ভর করে তৈরি করেছি। (সুরা আল-বালাদ ৪)। অর্থাৎ, মানুষের স্বভাবই হল পরিশ্রম করা। পৃথিবীতে টিকে থাকার জন্য, সফল হওয়ার জন্য মানুষকে অবশ্যই কঠোর পরিশ্রম করতে হবে।

وَّجَعَلۡنَا النَّهَارَ مَعَاشًا‏ আল্লাহ তায়ালা দিনকে সৃষ্টি করেছেন কাজ করার জন্য। সূরা নাবাতে তিনি বলেন, আর দিনকে বানিয়েছি কাজের জন্য। (সুরা নাবা ১১) এ আয়াত থেকে স্পষ্ট বোঝা যায় যে, দিনের আলো আমাদেরকে কাজ করার জন্য দেওয়া হয়েছে। রাতকে বিশ্রামের জন্য দেওয়া হয়েছে যাতে আমরা নতুন করে কাজ করার জন্য শক্তি অর্জন করতে পারি।

وَعَنِ الْمِقدَامِ بنِ مَعْدِيْكَرِبَ عَنِ النَّبِيِّ ﷺ قَالَ مَا أكَلَ أَحَدٌ طَعَامًا قَطُّ خَيْرًا مِنْ أنْ يَأكُلَ مِنْ عَمَلِ يَدِه وَإنَّ نَبيَّ الله دَاوُدَ كَانَ يَأكُلُ مِنْ عَمَلِ يَدِهِ رواه البخاري

ইসলাম ধর্ম মানুষকে পরিশ্রমী করতে উৎসাহিত করেন। হাদিসের বলা হয়েছে, নিজের উপার্জন থেকে উত্তমের খাবার কেউই কখনো খায়নি। হযরত দাউদ (আ.) নিজ হাতে বর্মা বানিয়ে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। (বুখারি শরিফ ২০৭২) এই উদাহরণ গুলো থেকে বোঝা যায় যে, ইসলামে পরিশ্রমকে খুব গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

শ্রমজিবী যারা আছেন তারা সমাজের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তাই তাদের মন খারাপ করার কোন কারণ নেই। তারা যেন নিজেদের কাজকে গর্বের সাথে করেন। আল্লাহ তায়ালা তাদের পরিশ্রমের স্বীকৃতি দিবেন এবং তাদের জন্য সুন্দর জীবন ব্যবস্থা করবেন।

فَاِذَا قُضِیَتِ الصَّلٰوۃُ فَانۡتَشِرُوۡا فِی الۡاَرۡضِ وَابۡتَغُوۡا مِنۡ فَضۡلِ اللّٰہِ وَاذۡکُرُوا اللّٰہَ کَثِیۡرًا لَّعَلَّکُمۡ تُفۡلِحُوۡنَ ইসলামের সৌন্দর্য দেখুন নামাজের পরের কাজ ও সফলতার পথে ছুটতে বলেছেন যখন তোমাদের নামায শেষ হয়ে গেলে তোমরা যমীনে ছড়িয়ে পড় এবং আল্লাহর অনুগ্রহ সন্ধান কর, এবং আললাহকে স্মরণ কর বেশি বেশি যাতে তোমরা সফলকাম হও।

আল্লাহ তা’আলা পবিত্র কোরআনে এই আয়াতের মাধ্যমে আমাদেরকে নামাজের পরের করণীয় সম্পর্কে স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছেন। ইসলাম শুধুমাত্র মসজিদে দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করা নয়; বরং পার্থিব জীবনের সকল দিককেও গুরুত্ব দেয়।

وَعَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ ﷺ قَالَ مَا بَعَثَ اللهُ نَبِيّاً إِلاَّ رَعَى الْغَنَمَ فَقَالَ أصْحَابُهُ : وأنْتَ ؟ قَالَ نَعَمْ كُنْتُ أرْعَاهَا عَلَى قَرَارِيطَ لأَهْلِ مَكَّةَ رواه البخاري

বিশ্ব নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) কেবলমাত্র একজন ধর্মীয় নেতা ছিলেন তা নয়, বরং তিনি ছিলেন একজন কঠোর পরিশ্রমই ছিলেন তিনি পরিশ্রমই করতে পছন্দ করতেন। বিশ্বনবী (সা.) খুবই কম বয়স থেকে পরিশ্রমী করতে শুরু করেছিলেন। প্রথম তার কর্ম জীবন ছিলো রাখাল হিসেবে।

তিনি মক্কাবাসীদের জন্য বকরী চরাতেন। হাদিস শরিফে এসেছে, আল্লাহ তাআলা এমন কোন নবী প্রেরণ করেননি, যিনি বকরী চরাননি। তিনি নিজেও বলেছেন, “আমিও কয়েক ক্বীরাত্বের বিনিময়ে মক্কাবাসীদের বকরী চরাতাম।

কেন নবীগণ বকরী চরাতেন?

একটি প্রশ্ন জাগতেই পারে, কেন নবীগণ বকরী চরাতেন? এর উত্তর হল, আল্লাহ তায়ালা প্রত্যেকটি নবীদের দিয়ে ছাগল চড়িয়েছেন যাতে করে তার কিছু দিন পর মানুষকে চড়াতে পারে। অর্থাৎ, নবীগণের এই কাজ মানুষের জন্য একটি উদাহরণস্বরূপ ছিল। তারা দেখিয়েছেন যে, যে কোনো কাজেই সম্মানজনকভাবে হতে পারে।

বিশ্বনবী (সা.) এর সাহাবীগণও পরিশ্রমী ছিলেন কেউ খেজুর বাগানে কাজ করতেন কেউ কৃষি কাজ করত কেউ ব্যবসা করতেন হাড় ভাঙ্গা পরিশ্রম করেছেন প্রত্যেকটা সাহাবা তারা আমাদের মডেল তারদের পরিশ্রমী জীবন আমাদেরকে অনুপ্রাণিত করে।তারা আমাদের অনুপ্ররণার বাতি ঘড় । তাই যে, সফল হতে হলে কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। কোনো কাজই ছোট নয়। সব কাজই সম্মানজনক।

ইসলাম একটি ভারসাম্যপূর্ণ জীবনযাত্রার শিক্ষা দেয়, যেখানে আধ্যাত্মিকতা ও পার্থিব কর্মের মধ্যে কোনও বিরোধ নেই। কুরআন ও হাদিসে যেভাবে পরিশ্রমের গুরুত্ব তুলে ধরা হয়েছে, তাতে আমাদের জন্য এক মহান পথপ্রদর্শক তৈরি হয়েছে। কঠোর পরিশ্রম, সততা ও দায়িত্ববোধের মাধ্যমে আমরা নিজেদের জীবিকা নির্বাহ করতে পারি এবং একই সাথে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করতে পারি।

ইসলামেরও প্রতিটি দিকেই আমাদেরকে পরিশ্রমের প্রতি সম্মানবোধ প্রদর্শনী করা হয়েছে, এবং নবী (সা.) ও তাঁর সাহাবীগণের জীবনে এটি ছিল একটি অনুকরণীয় আদর্শ। যে কোন কাজই সম্মানজনক, যদি তা আল্লাহর জন্য করা হয়। তাই, সফলতা অর্জনের জন্য আমাদের অঙ্গীকার করতে হবে কঠোর পরিশ্রমের, যাতে দুনিয়া ও আখিরাতে আমরা আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করতে পারি।

সফলতার মূল চাবিকাঠি কী ইসলামে?

প্রকাশের সময়: ১০:১৭:০৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪

জীবনযাত্রায় অবিচ্ছেদ্য অংশ হলো জীবিকা অর্জন। ইসলামের এটি একান্তই ফরজ হিসেবেই গণ্য করা হয়েছে এবং এ অর্জনের পথে কঠোরতা পরিশ্রমী সফলতার চাবিকাঠি। কুরআন ও হাদিসে পরিশ্রমের গুরুত্ব এবং জীবিকা অর্জনের মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের ওপর বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে।

ইসলামে পরিশ্রমী করা, কাজের প্রতিবাদ নিষ্ঠাবান এবং সততার সঙ্গে জীবনধারণ করা আমাদের কাছে এক ধর্মীয় কর্তব্য। কঠোরতা পরিশ্রমের মাধ্যমেই একদিকেই যেমনটি আমরাও নিজেরাই জীবিকা অর্জন করি, তেমনি সমাজে সম্মান ও উপকারিতা লাভ করি, যা আমাদের আখিরাতেও সফলতার দিকে নিয়ে যায়।

জীবন যাত্রার অবিচ্ছেদ্য অংশ হলো জীবিকা অর্জন। ইসলামে একে ফরজ বলে গণ্য করা হয়। এই অর্জনের পথে কঠোর পরিশ্রমই হলো সফলতার একমাত্র চাবিকাঠি। কোরআনের সূরা নাজিয়াতে বলা হয়েছে মানুষকে তার কৃত কর্ম অনুযায়ী ফল দেয়া হবে। অর্থাৎ, আমরা যত পরিশ্রম করব, তার ফল ততই ভোগ করব।

দুনিয়াতে জীবন যাপনের অর্থ হল এক অবিরাম সংগ্রাম। এই সংগ্রামে সফল হতে হলে কঠোর পরিশ্রমই একমাত্র মন্ত্র। রোদের তাপে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে, ঘাম ঝরিয়ে নিজেকে গড়ে তুলতে হবে। এই পরিশ্রমই আমাদেরকে নিজের লক্ষ্যের কাছে পৌঁছে দেবে।

یٰۤاَیُّہَا الۡاِنۡسَانُ اِنَّکَ کَادِحٌ اِلٰی رَبِّکَ کَدۡحًا فَمُلٰقِیۡہِ ۚ

কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেছেন, হে মানুষ! তুমি নিজ প্রতিপালকের কাছে না পৌঁছা পর্যন্ত নিরবচ্ছিন্নভাবে পরিশ্রম করে যাবে, পরিশেষে তুমি তাঁর সঙ্গে সাক্ষাত করবে। (সুরা ইনশিরাহ :৬)

یٰۤاَیُّہَا الۡاِنۡسَانُ اِنَّکَ کَادِحٌ اِلٰی رَبِّکَ کَدۡحًا فَمُلٰقِیۡہِ ۚ কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেছেন, হে মানুষ! তুমি নিজ প্রতিপালকের কাছে না পৌঁছা পর্যন্ত নিরবচ্ছিন্নভাবে পরিশ্রম করে যাবে, পরিশেষে তুমি তাঁর সঙ্গে সাক্ষাত করবে। (সুরা ইনশিরাহ :৬)

এই আয়াত আমাদেরকে জানিয়ে দেয়, দুনিয়ার জীবন মাত্র একটা পরীক্ষা। এই পরীক্ষায় সফল হতে হলে আমাদেরকে ক্রমাগত পরিশ্রম করে যেতে হবে।নিজের কাজে লজ্জা করা যাবে না। লজ্জা করতে হবে নিজের অলসতা নিয়ে আর নিজের ফুটানি নিয়ে ।

لَقَدۡ خَلَقۡنَا الۡاِنۡسَانَ فِیۡ کَبَدٍ ؕ আল্লাহ তায়ালা অপর আয়াতে স্পষ্টভাবে বলেছেন, “নিশ্চয় আমি মানুষকে কষ্ট ও পরিশ্রম নির্ভর করে তৈরি করেছি। (সুরা আল-বালাদ ৪)। অর্থাৎ, মানুষের স্বভাবই হল পরিশ্রম করা। পৃথিবীতে টিকে থাকার জন্য, সফল হওয়ার জন্য মানুষকে অবশ্যই কঠোর পরিশ্রম করতে হবে।

وَّجَعَلۡنَا النَّهَارَ مَعَاشًا‏ আল্লাহ তায়ালা দিনকে সৃষ্টি করেছেন কাজ করার জন্য। সূরা নাবাতে তিনি বলেন, আর দিনকে বানিয়েছি কাজের জন্য। (সুরা নাবা ১১) এ আয়াত থেকে স্পষ্ট বোঝা যায় যে, দিনের আলো আমাদেরকে কাজ করার জন্য দেওয়া হয়েছে। রাতকে বিশ্রামের জন্য দেওয়া হয়েছে যাতে আমরা নতুন করে কাজ করার জন্য শক্তি অর্জন করতে পারি।

وَعَنِ الْمِقدَامِ بنِ مَعْدِيْكَرِبَ عَنِ النَّبِيِّ ﷺ قَالَ مَا أكَلَ أَحَدٌ طَعَامًا قَطُّ خَيْرًا مِنْ أنْ يَأكُلَ مِنْ عَمَلِ يَدِه وَإنَّ نَبيَّ الله دَاوُدَ كَانَ يَأكُلُ مِنْ عَمَلِ يَدِهِ رواه البخاري

ইসলাম ধর্ম মানুষকে পরিশ্রমী করতে উৎসাহিত করেন। হাদিসের বলা হয়েছে, নিজের উপার্জন থেকে উত্তমের খাবার কেউই কখনো খায়নি। হযরত দাউদ (আ.) নিজ হাতে বর্মা বানিয়ে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। (বুখারি শরিফ ২০৭২) এই উদাহরণ গুলো থেকে বোঝা যায় যে, ইসলামে পরিশ্রমকে খুব গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

শ্রমজিবী যারা আছেন তারা সমাজের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তাই তাদের মন খারাপ করার কোন কারণ নেই। তারা যেন নিজেদের কাজকে গর্বের সাথে করেন। আল্লাহ তায়ালা তাদের পরিশ্রমের স্বীকৃতি দিবেন এবং তাদের জন্য সুন্দর জীবন ব্যবস্থা করবেন।

فَاِذَا قُضِیَتِ الصَّلٰوۃُ فَانۡتَشِرُوۡا فِی الۡاَرۡضِ وَابۡتَغُوۡا مِنۡ فَضۡلِ اللّٰہِ وَاذۡکُرُوا اللّٰہَ کَثِیۡرًا لَّعَلَّکُمۡ تُفۡلِحُوۡنَ ইসলামের সৌন্দর্য দেখুন নামাজের পরের কাজ ও সফলতার পথে ছুটতে বলেছেন যখন তোমাদের নামায শেষ হয়ে গেলে তোমরা যমীনে ছড়িয়ে পড় এবং আল্লাহর অনুগ্রহ সন্ধান কর, এবং আললাহকে স্মরণ কর বেশি বেশি যাতে তোমরা সফলকাম হও।

আল্লাহ তা’আলা পবিত্র কোরআনে এই আয়াতের মাধ্যমে আমাদেরকে নামাজের পরের করণীয় সম্পর্কে স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছেন। ইসলাম শুধুমাত্র মসজিদে দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করা নয়; বরং পার্থিব জীবনের সকল দিককেও গুরুত্ব দেয়।

وَعَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ ﷺ قَالَ مَا بَعَثَ اللهُ نَبِيّاً إِلاَّ رَعَى الْغَنَمَ فَقَالَ أصْحَابُهُ : وأنْتَ ؟ قَالَ نَعَمْ كُنْتُ أرْعَاهَا عَلَى قَرَارِيطَ لأَهْلِ مَكَّةَ رواه البخاري

বিশ্ব নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) কেবলমাত্র একজন ধর্মীয় নেতা ছিলেন তা নয়, বরং তিনি ছিলেন একজন কঠোর পরিশ্রমই ছিলেন তিনি পরিশ্রমই করতে পছন্দ করতেন। বিশ্বনবী (সা.) খুবই কম বয়স থেকে পরিশ্রমী করতে শুরু করেছিলেন। প্রথম তার কর্ম জীবন ছিলো রাখাল হিসেবে।

তিনি মক্কাবাসীদের জন্য বকরী চরাতেন। হাদিস শরিফে এসেছে, আল্লাহ তাআলা এমন কোন নবী প্রেরণ করেননি, যিনি বকরী চরাননি। তিনি নিজেও বলেছেন, “আমিও কয়েক ক্বীরাত্বের বিনিময়ে মক্কাবাসীদের বকরী চরাতাম।

কেন নবীগণ বকরী চরাতেন?

একটি প্রশ্ন জাগতেই পারে, কেন নবীগণ বকরী চরাতেন? এর উত্তর হল, আল্লাহ তায়ালা প্রত্যেকটি নবীদের দিয়ে ছাগল চড়িয়েছেন যাতে করে তার কিছু দিন পর মানুষকে চড়াতে পারে। অর্থাৎ, নবীগণের এই কাজ মানুষের জন্য একটি উদাহরণস্বরূপ ছিল। তারা দেখিয়েছেন যে, যে কোনো কাজেই সম্মানজনকভাবে হতে পারে।

বিশ্বনবী (সা.) এর সাহাবীগণও পরিশ্রমী ছিলেন কেউ খেজুর বাগানে কাজ করতেন কেউ কৃষি কাজ করত কেউ ব্যবসা করতেন হাড় ভাঙ্গা পরিশ্রম করেছেন প্রত্যেকটা সাহাবা তারা আমাদের মডেল তারদের পরিশ্রমী জীবন আমাদেরকে অনুপ্রাণিত করে।তারা আমাদের অনুপ্ররণার বাতি ঘড় । তাই যে, সফল হতে হলে কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। কোনো কাজই ছোট নয়। সব কাজই সম্মানজনক।

ইসলাম একটি ভারসাম্যপূর্ণ জীবনযাত্রার শিক্ষা দেয়, যেখানে আধ্যাত্মিকতা ও পার্থিব কর্মের মধ্যে কোনও বিরোধ নেই। কুরআন ও হাদিসে যেভাবে পরিশ্রমের গুরুত্ব তুলে ধরা হয়েছে, তাতে আমাদের জন্য এক মহান পথপ্রদর্শক তৈরি হয়েছে। কঠোর পরিশ্রম, সততা ও দায়িত্ববোধের মাধ্যমে আমরা নিজেদের জীবিকা নির্বাহ করতে পারি এবং একই সাথে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করতে পারি।

ইসলামেরও প্রতিটি দিকেই আমাদেরকে পরিশ্রমের প্রতি সম্মানবোধ প্রদর্শনী করা হয়েছে, এবং নবী (সা.) ও তাঁর সাহাবীগণের জীবনে এটি ছিল একটি অনুকরণীয় আদর্শ। যে কোন কাজই সম্মানজনক, যদি তা আল্লাহর জন্য করা হয়। তাই, সফলতা অর্জনের জন্য আমাদের অঙ্গীকার করতে হবে কঠোর পরিশ্রমের, যাতে দুনিয়া ও আখিরাতে আমরা আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করতে পারি।