ঢাকা ০৯:২৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

তরুণদের চোখে কেন আসেনা বিদেশিনী পর্যটক বাংলাদেশে

  • দৈনিক টার্গেট
  • প্রকাশের সময়: ১০:২১:২২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪
  • ১২৭ বার পঠিত

প্রাকৃতিকভাবে সৌন্দর্যের অরুপ লীলাভূমি এই বাংলাদেশ। অপরুপা এ দেশের সবুজ বন বনানী, সুবিশাল ম্যানগ্রোভ বনরাজি, নদনদী, শ্যামল পাহাড়, বিস্তীর্ণ সমুদ্রের সৈকত, প্রাচীনতম ঐতিহাসিক ও প্রত্নতাত্ত্বিকদের নিদর্শন সমূহ যুগান্তর ধরে পৃথিবীর বিভিন্নস্থানে দেশের ভ্রমণের পিপাসুদের উৎসাহী মানুষকেই আকৃষ্ট করে আসছেন।

বাংলাদেশেরই প্রাকৃতিকভাবে সৌন্দর্য্য দেখে দুচোখ ঝুড়িয়ে যায়। তাই রূপমুগ্ধ, বিষয়-পুলকিত কবি তার আবেগ- স্নিগ্ধ উচ্চারণে বাংলাকে বলেছেন- ‘রূপসি বাংলা’। ছয় ঋতুর দেশ এই রুপসি বাংলাদেশ। ৫৬ হাজার বর্গমাইলের দেশটি যেন প্রাকৃতিকভাবে সৌন্দর্যের এক মিউজিয়াম।

রাবিপ্রবি ট্যুরিজম এন্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থী জান্নাতুল ফেরদাউস বলেন,

সুজলা সুফলা নদীমাতৃক এই সুন্দর বাংলাদেশে রয়েছে অসংখ্য দর্শনীয় স্থান বা পর্যটন কেন্দ্র। বাংলাদেশে রয়েছে হাজারও বেশি দর্শনীয় স্থান বা পর্যটন কেন্দ্র।এর মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য কয়েকটা দর্শনীয় স্থান হলো- কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত, সেন্টমার্টিন, সাজেক, কাপ্তাই লেক, রাতারগুল ফরেস্ট, সুন্দরবন, কুয়াকাটা, নাফাকুম, নিঝুম দীপ, টাঙ্গুয়ারহাওর ইত্যাদি।

পাহাড়ে- আহারে, নদীতে নৌকা ভ্রমণ, সবুজের মাঝে জ্যোৎস্নার খেলা, এমনকি মেঘের রাজ্যে নিজেকে হারিয়ে ফেলার মতো চোখ জুড়ানো পর্যটন স্থান রয়েছে এই বাংলাদেশে । অপরূপ সৌন্দর্যের এই দেশের প্রায় প্রতিটি জেলাতেই রয়েছে বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান। এই জন্য দেশ-বিদেশের বহু পর্যটক তাই ঘুরে বেড়ানোর জন্য প্রতিবছর ভিড় জমিয়ে থাকেন বাংলাদেশে।

তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ পর্যটন বোর্ড তথ্য মতে,গত ২০২৩ সালে ৬.৫ লক্ষ ট্যুরিস্ট বাংলাদেশে ভ্রমণ করেন। যা ২০১০ সাল থেকে সবচেয়ে বেশি। ২.৯ লক্ষ ট্যুরিস্ট আসে ভারত থেকে। এরপর আসে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া এবং ইতালি।

বাংলাদেশে আশানুরূপ বিদেশি ট্যুরিস্ট না আসার কারণ হিসাবে অন্যতম কারণ হলো: ভিসার জটিলতা, অব্যবস্থাপনা, দেশের অসুস্থ রাজনৈতিক পরিবেশ।

তাছাড়া আরো রয়েছে – বাংলাদেশে ট্যুরিস্ট স্পট গুলাতে সেবার মানের তুলনায় ব্যয় অনেক বেশী।তারপরের অসুবিধা হলো নিরাপত্তার অভাব। এছাড়াও অবকাঠামোগত সমস্যা, পরিবহন সমস্যা, প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত বিনোদন কর্মীর অভাব, দর্শনীয় স্থানের ধারন ক্ষমতার বেশী পর্যটক ইত্যাদি।

আগামিতে বাংলাদেশে আশানুরূপ বিদেশে পর্যটক আকর্ষন করা জন্য প্রথমে যা করতে হবে বলে আমার মনে হয় তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে – বিদেশি পর্যটকদের জন্য আমাদের দেশের ভিসা পদ্ধতি সহজ করতে হবে। যাতে বিদেশি পর্যটকদের ভিসা পেতে হেনস্তার স্বীকার হতে না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। সেবার মান উন্নত করতে হবে সাথে অবকাঠামো উন্নত করতে হবে।

দক্ষমানব সম্পদ তৈরি করতে হবে। মাত্রাতিরিক্ত বিল্ডিং, স্থাপনা তৈরি করতে না পারে সে ব্যবস্থা করতে হবে। ধারণক্ষমতার বাইরে ট্যুরিস্ট যাওয়া বন্ধ করতে হবে।

সিবিসিসি ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থী সিদ্দিকুর রহমান বলেন, বিদেশি পর্যটক বাড়াতে হলে বর্তমানের চেয়ে আরো বেশি সেবার মান বাড়ানোর বিকল্প নেই। এই সেবার মান বাড়াতে হলে এই বিষয়ে যোগ্য অভিজ্ঞ সেই বিষয়ে পড়াশোনা করা যোগ্য ব্যক্তি দরকার সেটা কি আমরা তৈরি করেছি? আর এই সেক্টরের জন্য দক্ষ জনশক্তির ব্যবহারও নিশ্চিত করেছি?

সাধারণ গড়পড়তার সেবা দিয়ে দেশের পর্যটনের খাতকে উন্নতি করা যাবেনা। যারা এ সংশ্লিষ্ট বিভাগে পড়াশোনা করছেন হয় তাদের পর্যটন কেন্দ্রিক উদ্যোক্তারাও হওয়ার সুযোগ দিতে হবে, আর না হলে তাদের এ সংক্রান্ত খাতে ভালো চাকরির ব্যবস্থা করতে হবে।

বাংলাদেশের অর্থনৈতিকভাবে প্রভাবিত হয়ে মোট জিডিপির সাড়ে ৩ থেকে ৪ শতাংশ আসে পর্যটন খাত থেকে যা দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশের তুলনায় অপ্রতুল। দক্ষিণ এশিয়ার দেশ মালদ্বীপের পর্যটনের খাত থেকে আসা আয় জিডিপির প্রায় ৩০ শতাংশ। এছাড়া শ্রীলঙ্কার সাড়ে ১২ শতাংশ, নেপালের ৬ শতাংশ, ভূটানের সাড়ে ৫ শতাংশ এবং ভারতের সাড়ে ৪ শতাংশ জিডিপির আয় আসে পর্যটনের থেকে।

বাংলাদেশকে নিয়ে বিদেশি পর্যটকরা মনে করেন বাংলাদেশের চিন্তাধারা পর্যটনবান্ধব না। বাংলাদেশে চাইলেই একজন নারী পর্যটক ভারতের মতো তাজমহল কিংবা লাল কেল্লায় মিনি স্কার্ট পরে যেতে পারবে না। নিজের সঙ্গীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে ছবিও তুলতে পারবেন।তার প্রেক্ষিতে বাংলাদেশের নির্দিষ্ট কয়েকটি জায়গা ছাড়া এ ধরনের পোশাক পরা বিদেশি পর্যটকের সঙ্গে এখনও স্থানীয়রা অভ্যস্ত হতে পারেন নি। অন্যদিকে আলাদা আলাদা রাষ্ট্রে আলাদা আলাদা সংস্কৃতি যেমন বাংলাদেশে পানীয়ের দিক থেকে নানা নিষেধাজ্ঞার কারণে বিদেশি পর্যটকরা দেশে দ্বিতীয়বার ঘুরতে আসার আকর্ষণ হারিয়ে ফেলেন।

দেশে শুধু প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দিয়ে একজন বিদেশি পর্যটককে বারবার টানা যাবে না। এজন্য তাকে অন্যান্য বিনোদনের ব্যবস্থা করে দিতে হবে। পর্যটকরা কোন ভ্রমণে বের হলে তারা নতুন কিছু শিখতে এবং আনন্দ, বিনোদনের জন্য যায়। তারা আগ্রহী হয়ে টাকা খরচ করতে চাই নতুন নতুন অভিজ্ঞতা নিতে চাই সেটা যদি আমরা এই খাতকে কাজে লাগিয়ে এমন ইউনিক কোন কিছু সৃষ্টি না করতে পারি তা হলে বিদেশি পর্যটক আসবে কেন? আর আসলে ও প্রথম বারে এসে কোন মতে চলে যাবে নতুন কিছু না থাকলে দ্বিতীয় বার আসবে কিসের জন্য? বলতে গেলে পাশের দেশ ইন্দোনেশিয়া বা মালয়েশিয়া বাংলাদেশের মতোই মুসলিম দেশ। সেখানেও ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী অ্যালকোহল পান করা হারাম। কিন্তু এ নিয়ম শুধু তাদের দেশের মানুষের জন্য। বিদেশি পার্সপোর্টধারীরা নিজেদের পছন্দমতো আনন্দ-উল্লাস করতে পারেন।

দেশে বিদেশি পর্যটক আনতে চাইলে পর্যটন খাতে দক্ষ জনশক্তি বিনিয়োগকারী এবং উদ্যোগক্তা তৈরি করতে হবে। দেশে বিদেশি পর্যটক আনতে হলে কেন আসছে না, কোন কোন জায়গায় উন্নতি করা দরকার সে বিষয়ে একটি গবেষণার প্রয়োজন আছে। এসব বিষয়ে আমাদের বড় কোনো গবেষণা নেই। বিদেশি পর্যটকদের কেন্দ্র করে এ খাতকে কীভাবে আরও আকর্ষণীয় করে তোলা যায় সে বিষয়েও চোখে পড়ার মতো বড় কোনো উদ্যোগ নেই।

তরুণদের চোখে কেন আসেনা বিদেশিনী পর্যটক বাংলাদেশে

প্রকাশের সময়: ১০:২১:২২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪

প্রাকৃতিকভাবে সৌন্দর্যের অরুপ লীলাভূমি এই বাংলাদেশ। অপরুপা এ দেশের সবুজ বন বনানী, সুবিশাল ম্যানগ্রোভ বনরাজি, নদনদী, শ্যামল পাহাড়, বিস্তীর্ণ সমুদ্রের সৈকত, প্রাচীনতম ঐতিহাসিক ও প্রত্নতাত্ত্বিকদের নিদর্শন সমূহ যুগান্তর ধরে পৃথিবীর বিভিন্নস্থানে দেশের ভ্রমণের পিপাসুদের উৎসাহী মানুষকেই আকৃষ্ট করে আসছেন।

বাংলাদেশেরই প্রাকৃতিকভাবে সৌন্দর্য্য দেখে দুচোখ ঝুড়িয়ে যায়। তাই রূপমুগ্ধ, বিষয়-পুলকিত কবি তার আবেগ- স্নিগ্ধ উচ্চারণে বাংলাকে বলেছেন- ‘রূপসি বাংলা’। ছয় ঋতুর দেশ এই রুপসি বাংলাদেশ। ৫৬ হাজার বর্গমাইলের দেশটি যেন প্রাকৃতিকভাবে সৌন্দর্যের এক মিউজিয়াম।

রাবিপ্রবি ট্যুরিজম এন্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থী জান্নাতুল ফেরদাউস বলেন,

সুজলা সুফলা নদীমাতৃক এই সুন্দর বাংলাদেশে রয়েছে অসংখ্য দর্শনীয় স্থান বা পর্যটন কেন্দ্র। বাংলাদেশে রয়েছে হাজারও বেশি দর্শনীয় স্থান বা পর্যটন কেন্দ্র।এর মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য কয়েকটা দর্শনীয় স্থান হলো- কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত, সেন্টমার্টিন, সাজেক, কাপ্তাই লেক, রাতারগুল ফরেস্ট, সুন্দরবন, কুয়াকাটা, নাফাকুম, নিঝুম দীপ, টাঙ্গুয়ারহাওর ইত্যাদি।

পাহাড়ে- আহারে, নদীতে নৌকা ভ্রমণ, সবুজের মাঝে জ্যোৎস্নার খেলা, এমনকি মেঘের রাজ্যে নিজেকে হারিয়ে ফেলার মতো চোখ জুড়ানো পর্যটন স্থান রয়েছে এই বাংলাদেশে । অপরূপ সৌন্দর্যের এই দেশের প্রায় প্রতিটি জেলাতেই রয়েছে বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান। এই জন্য দেশ-বিদেশের বহু পর্যটক তাই ঘুরে বেড়ানোর জন্য প্রতিবছর ভিড় জমিয়ে থাকেন বাংলাদেশে।

তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ পর্যটন বোর্ড তথ্য মতে,গত ২০২৩ সালে ৬.৫ লক্ষ ট্যুরিস্ট বাংলাদেশে ভ্রমণ করেন। যা ২০১০ সাল থেকে সবচেয়ে বেশি। ২.৯ লক্ষ ট্যুরিস্ট আসে ভারত থেকে। এরপর আসে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া এবং ইতালি।

বাংলাদেশে আশানুরূপ বিদেশি ট্যুরিস্ট না আসার কারণ হিসাবে অন্যতম কারণ হলো: ভিসার জটিলতা, অব্যবস্থাপনা, দেশের অসুস্থ রাজনৈতিক পরিবেশ।

তাছাড়া আরো রয়েছে – বাংলাদেশে ট্যুরিস্ট স্পট গুলাতে সেবার মানের তুলনায় ব্যয় অনেক বেশী।তারপরের অসুবিধা হলো নিরাপত্তার অভাব। এছাড়াও অবকাঠামোগত সমস্যা, পরিবহন সমস্যা, প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত বিনোদন কর্মীর অভাব, দর্শনীয় স্থানের ধারন ক্ষমতার বেশী পর্যটক ইত্যাদি।

আগামিতে বাংলাদেশে আশানুরূপ বিদেশে পর্যটক আকর্ষন করা জন্য প্রথমে যা করতে হবে বলে আমার মনে হয় তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে – বিদেশি পর্যটকদের জন্য আমাদের দেশের ভিসা পদ্ধতি সহজ করতে হবে। যাতে বিদেশি পর্যটকদের ভিসা পেতে হেনস্তার স্বীকার হতে না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। সেবার মান উন্নত করতে হবে সাথে অবকাঠামো উন্নত করতে হবে।

দক্ষমানব সম্পদ তৈরি করতে হবে। মাত্রাতিরিক্ত বিল্ডিং, স্থাপনা তৈরি করতে না পারে সে ব্যবস্থা করতে হবে। ধারণক্ষমতার বাইরে ট্যুরিস্ট যাওয়া বন্ধ করতে হবে।

সিবিসিসি ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থী সিদ্দিকুর রহমান বলেন, বিদেশি পর্যটক বাড়াতে হলে বর্তমানের চেয়ে আরো বেশি সেবার মান বাড়ানোর বিকল্প নেই। এই সেবার মান বাড়াতে হলে এই বিষয়ে যোগ্য অভিজ্ঞ সেই বিষয়ে পড়াশোনা করা যোগ্য ব্যক্তি দরকার সেটা কি আমরা তৈরি করেছি? আর এই সেক্টরের জন্য দক্ষ জনশক্তির ব্যবহারও নিশ্চিত করেছি?

সাধারণ গড়পড়তার সেবা দিয়ে দেশের পর্যটনের খাতকে উন্নতি করা যাবেনা। যারা এ সংশ্লিষ্ট বিভাগে পড়াশোনা করছেন হয় তাদের পর্যটন কেন্দ্রিক উদ্যোক্তারাও হওয়ার সুযোগ দিতে হবে, আর না হলে তাদের এ সংক্রান্ত খাতে ভালো চাকরির ব্যবস্থা করতে হবে।

বাংলাদেশের অর্থনৈতিকভাবে প্রভাবিত হয়ে মোট জিডিপির সাড়ে ৩ থেকে ৪ শতাংশ আসে পর্যটন খাত থেকে যা দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশের তুলনায় অপ্রতুল। দক্ষিণ এশিয়ার দেশ মালদ্বীপের পর্যটনের খাত থেকে আসা আয় জিডিপির প্রায় ৩০ শতাংশ। এছাড়া শ্রীলঙ্কার সাড়ে ১২ শতাংশ, নেপালের ৬ শতাংশ, ভূটানের সাড়ে ৫ শতাংশ এবং ভারতের সাড়ে ৪ শতাংশ জিডিপির আয় আসে পর্যটনের থেকে।

বাংলাদেশকে নিয়ে বিদেশি পর্যটকরা মনে করেন বাংলাদেশের চিন্তাধারা পর্যটনবান্ধব না। বাংলাদেশে চাইলেই একজন নারী পর্যটক ভারতের মতো তাজমহল কিংবা লাল কেল্লায় মিনি স্কার্ট পরে যেতে পারবে না। নিজের সঙ্গীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে ছবিও তুলতে পারবেন।তার প্রেক্ষিতে বাংলাদেশের নির্দিষ্ট কয়েকটি জায়গা ছাড়া এ ধরনের পোশাক পরা বিদেশি পর্যটকের সঙ্গে এখনও স্থানীয়রা অভ্যস্ত হতে পারেন নি। অন্যদিকে আলাদা আলাদা রাষ্ট্রে আলাদা আলাদা সংস্কৃতি যেমন বাংলাদেশে পানীয়ের দিক থেকে নানা নিষেধাজ্ঞার কারণে বিদেশি পর্যটকরা দেশে দ্বিতীয়বার ঘুরতে আসার আকর্ষণ হারিয়ে ফেলেন।

দেশে শুধু প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দিয়ে একজন বিদেশি পর্যটককে বারবার টানা যাবে না। এজন্য তাকে অন্যান্য বিনোদনের ব্যবস্থা করে দিতে হবে। পর্যটকরা কোন ভ্রমণে বের হলে তারা নতুন কিছু শিখতে এবং আনন্দ, বিনোদনের জন্য যায়। তারা আগ্রহী হয়ে টাকা খরচ করতে চাই নতুন নতুন অভিজ্ঞতা নিতে চাই সেটা যদি আমরা এই খাতকে কাজে লাগিয়ে এমন ইউনিক কোন কিছু সৃষ্টি না করতে পারি তা হলে বিদেশি পর্যটক আসবে কেন? আর আসলে ও প্রথম বারে এসে কোন মতে চলে যাবে নতুন কিছু না থাকলে দ্বিতীয় বার আসবে কিসের জন্য? বলতে গেলে পাশের দেশ ইন্দোনেশিয়া বা মালয়েশিয়া বাংলাদেশের মতোই মুসলিম দেশ। সেখানেও ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী অ্যালকোহল পান করা হারাম। কিন্তু এ নিয়ম শুধু তাদের দেশের মানুষের জন্য। বিদেশি পার্সপোর্টধারীরা নিজেদের পছন্দমতো আনন্দ-উল্লাস করতে পারেন।

দেশে বিদেশি পর্যটক আনতে চাইলে পর্যটন খাতে দক্ষ জনশক্তি বিনিয়োগকারী এবং উদ্যোগক্তা তৈরি করতে হবে। দেশে বিদেশি পর্যটক আনতে হলে কেন আসছে না, কোন কোন জায়গায় উন্নতি করা দরকার সে বিষয়ে একটি গবেষণার প্রয়োজন আছে। এসব বিষয়ে আমাদের বড় কোনো গবেষণা নেই। বিদেশি পর্যটকদের কেন্দ্র করে এ খাতকে কীভাবে আরও আকর্ষণীয় করে তোলা যায় সে বিষয়েও চোখে পড়ার মতো বড় কোনো উদ্যোগ নেই।