রাজনৈতিক চাপে বিশেষ সুবিধায় পুনর্গঠন করা ৯টি গ্রুপের ঋণই এখন খেলাপির তালিকায়। ১১টি শিল্পগ্রুপের প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকার ঋণ দিয়ে মহাবিপাকে পড়েছে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলো। পতিত শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের চাপে দেওয়া বিপুল অংকের এ ঋণ ফিরে আসা এখন পুরোপুরি অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। পুনর্গঠনের বিশেষ সুবিধার নীতিমালাও হয় সালমান রহমানের মালিকানাধীন বেক্সিমকো গ্রুপের অফিসে বসে।
২০১৪ সালের ভোটের পর বড় ঋণ পুনর্গঠনের বিশেষ সুবিধা দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। ওই সুবিধার আওতায় দেশের বড় এসব ঋণে সুদহার কমানো, নতুন করে এক বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ নানা সুবিধা দেওয়া হয়।
পুনর্গঠনের পরপরই এসব ঋণ খেলাপি হলেও রাজনৈতিক প্রভাব ও খেলাপি ঋণ কম দেখানোর জন্য এতদিন বেশিরভাগের তথ্য আড়ালে ছিল। ওই সময় বিশেষ এই সুবিধা দেওয়া হয় মূলত বেক্সিমকো গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমানের বিশেষ দাবির পরিপ্রেক্ষিতে। তিনি ছাত্র-জনতার আন্দোলেনর মুখে দেশ ছেড়ে পলাতক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা ছিলেন। ২০১৪ সালের ভোট আয়োজনে প্রধান অর্থ জোগানদাতা হিসেবে তাকে বিবেচনা করা হয়। বেক্সিমকো গ্রুপ রাষ্ট্রীয় মালিকানার জনতাসহ বিভিন্ন ব্যাংক থেকে অন্তত ৫০ হাজার ৫০০ কোটি টাকার ঋণ নিয়েছে। সেই ঋণের বড় অংশই এখন খেলাপি।
বিপুল অঙ্কের এই ঋণ পরিশোধ তো দূরে থাক, প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন দেওয়ার মতো আয়ও নেই। যে কারণে বিশেষ বিবেচনায় ঋণ দিয়ে বেক্সিমকোর কর্মীদের বেতন দেওয়া হচ্ছে। বিশেষ সুবিধা নিয়ে এখন খেলাপি হওয়া ৯ গ্রুপ হলো- বেক্সিমকো, সিকদার, এসএ, এননটেক্স, কেয়া, রতনপুর, থার্মেক্স, এমআর ও রাইজিং গ্রুপ। এর বাইরে পুনর্গঠন সুবিধা নিয়েও নিয়মিত আছে কেবল যমুনা ও আবদুল মোনেম গ্রুপের ঋণ।
যেভাবে দেয়া হয় পুনর্গঠন সুবিধা
২০১৪ সালের একতরফা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশে আন্দোলন চলছিল। ব্যবসায়ীদের খুশি রাখতে ২০১৩ সালে বিশেষ সুবিধায় ঋণ পুনঃতফশিলের একটি নীতিমালা করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ সুবিধা নিয়ে তখন পাঁচ শতাংশ ডাউন পেমেন্টে ঋণ পুনঃতফশিলের সুযোগ দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ওই সময় সাধারণভাবে একটি ঋণ নিয়মিত করতে ১০ থেকে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত ডাউন পেমেন্ট দিতে হতো।
এর মধ্যে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি ভোটারবিহীন নির্বাচনে উতরে যায় সরকার। এরপর সালমান এফ রহমান ২০১৪ সালের ৫ আগস্ট বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে বেক্সিমকো গ্রুপের সব ঋণ পুনর্গঠনের আবেদন করেন। কিছু আনুষ্ঠানিকতা শেষে ২০১৫ সালের ২৯ জানুয়ারি ঋণ পুনর্গঠনের নীতিমালা জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংক খাতে ৫০০ কোটি টাকার বেশি ঋণ আছে- এরকম গ্রাহকদের জন্য এই সুযোগ দেওয়া হয়। কথিত আছে, এই নীতিমালাটি খসড়া প্রস্তুত হয় সালমান রহমানের বেক্সিমকো গ্রুপে বসে।
নীতিমালা অনুযায়ী পরপর দুই কিস্তি পরিশোধে ব্যর্থ হলে তা খেলাপি হয়ে যাবে। বিশেষ সুবিধা নেওয়া কোনো প্রতিষ্ঠানের ঋণ খেলাপি হলে দেউলিয়া আইনে তার বিরুদ্ধে মামলা করতে পারবে ব্যাংক। তবে আজ অবধি কোনো মামলা করা হয়নি। বরং এতদিন কিস্তি পরিশোধ না করলেও কারো কারো ঋণ নিয়মিত দেখানো হয়েছে। উল্টো বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এসব গ্রুপ নতুন ঋণ পেয়েছে। যে কারণে পুনর্গঠিত ঋণের স্থিতি দাঁড়িয়েছে ১৫ হাজার ৩৬৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে মেয়াদোত্তীর্ণ ঋণ ছয় হাজার ৫৭৫ কোটি টাকা। এ পর্যন্ত ঋণ আদায় হয়েছে আট হাজার ১৪৯ কোটি টাকা। অর্থাৎ গ্রুপগুলো থেকে যে ঋণ আদায় হয়েছে, তা সুদ পরিশোধে চলে গেছে। যদি এই পরিমাণ অর্থ আদায় না হতো, তাহলে পুনর্গঠিত ঋণের বকেয়া স্থিতি ২৩ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যেত। এছাড়া পুনর্গঠিত ঋণ সুবিধা নেওয়ার পরও নতুন করে আরও তিন হাজার ৯২২ কোটি টাকা ঋণ নেয় কয়েকটি গ্রুপ।
সংশ্লিষ্টদের ধারণা, ২০১৪ সালের নির্বাচনি খরচ সংগ্রহের দায়িত্বে ছিলেন সালমান এফ রহমান। তার নেতৃত্বেই ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন বাহিনীকে সরবরাহের জন্য বিপুল অঙ্কের তহবিল জোগান দেয়। যে কারণে একেবারে নিয়মনীতি বহির্ভূতভাবে ওই সুবিধা দিতে বাধ্য হয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। যদিও বাংলাদেশ ব্যাংক শুরুর দিকে এরকম সুবিধা দিতে রাজি হয়নি।
তবে শেষ পর্যন্ত বিশেষ একটি বাহিনীর চাপে ওই নীতিমালা করা হয়। মূলত একদিকে ব্যবসায়ীদের খুশি রাখা, অন্যদিকে তহবিল জোগানের বিষয়টি পুষিয়ে দিতেই বিশেষ এই সুবিধা দেওয়া হয়। এর কিছুদিন আগেও ন্যূনতম ডাউন পেমেন্ট দিয়ে ঋণ পুনঃতফসিল সুযোগ দেয়।
বেক্সিমকো গ্রুপ
পুনর্গঠিত ঋণের সবচেয়ে বেশি সুবিধা নেয় বেক্সিমকো গ্রুপ। তথ্য অনুযায়ী বিশেষ সুবিধায় বেক্সিমকো গ্রুপ সরকারি-বেসরকারি আট ব্যাংকের পাঁচ হাজার ২১৬ কোটি টাকার ঋণ পুনর্গঠন করে। পুনর্গঠিত সুবিধার পরও নতুন করে আরও এক হাজার ৮০ কোটি টাকার ঋণ নেয়। বর্তমানে গ্রুপটির কাছে বকেয়া ঋণের স্থিতি দাঁড়িয়েছে পাঁচ হাজার ৭২২ কোটি টাকা।
এখন পর্যন্ত বেক্সিমকো পাঁচ হাজার ১৩১ কোটি টাকা পরিশোধ করেছে। যদিও তা সুদ পরিশোধ হিসাবে গণ্য হয়েছে। যার কারণে মূল ঋণের স্থিতি কমেনি। এতদিন গ্রুপটি খেলাপি ছিল না। তবে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর এখন গ্রুপটি ঋণখেলাপির তালিকায় যুক্ত হয়েছে।
বেক্সিমকো গ্রুপের পুনর্গঠিত ঋণের মধ্যে জনতার এক হাজার ৮৪৯ কোটি টাকা, সোনালীর এক হাজার ৭৫ কোটি, ন্যাশনালের ৪৭৭ কোটি ও এবির ৪৮৩ কোটি, ব্যাংক এশিয়ার ৩০ কোটি, এক্সিমের ২৩৩ কোটি, অগ্রণীর ৮০১ কোটি ও রূপালী ব্যাংকের ৬৯২ কোটি টাকার ঋণ রয়েছে।
যমুনা গ্রুপ
যমুনা গ্রুপ বিশেষ সুবিধায় ১০ ব্যাংকের এক হাজার ৬৮৪ কোটি টাকার খেলাপি ঋণ পুনর্গঠন করে। এরপর নতুন করে আরও ২৬৬ কোটি টাকার ঋণ নেয়। বর্তমানে গ্রুপের বকেয়া স্থিতি দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৫৫ কোটি টাকা। যমুনা গ্রুপ ঋণ পরিশোধ করার কারণে বকেয়া স্থিতি কিছুটা কমেছে। গত আট বছরে এক হাজার ৫৮২ কোটি টাকার ঋণ পরিশোধ করেছে। নিয়মিত ঋণ পরিশোধ করায় যমুনা গ্রুপ খেলাপি হয়নি।
তথ্য অনুযায়ী, জনতা ব্যাংকের ৫৯৮ কোটি টাকা, ইউসিবিএলের ১৭৪ কোটি, আইএফআইসির ১৪১ কোটি, ডাচ্-বাংলার ১৭৫ কোটি, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ৮৬ কোটি, সোশ্যাল ইসলামীর ৭৩ কোটি, মার্কেন্টাইলের ৫১ কোটি, ইসলামী ব্যাংকের ১৮৭ কোটি, অগ্রণীর ৩২ কোটি ও প্রাইম ব্যাংকের ১৬৩ কোটি টাকার খেলাপি ঋণ পুনর্গঠন করে যমুনা গ্রুপ।
সিকদার গ্রুপ
শিকদার গ্রুপ তিন ব্যাংকে এক হাজার ৭৭৬ কোটি টাকার খেলাপি ঋণ পুনর্গঠন সুবিধা নেয়। গত আট বছরে গ্রুপটি মাত্র ৩৪২ কোটি টাকা পরিশোধ করছে। বর্তমানে দুই হাজার ২৮২ কোটি টাকা বকেয়া স্থিতি দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে এক হাজার ৮৯ টাকা মেয়াদোত্তীর্ণ। ঋণ পরিশোধ না করেও খেলাপিমুক্ত থেকেছে গ্রুপটি। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, পুনর্গঠিত ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ায় গ্রুপটি এখন ঋণখেলাপি হয়েছে।
এসএ গ্রুপ
এসএ গ্রুপের এক হাজার ১৫৩ কোটি টাকার ঋণ পুনর্গঠন করে ছয়টি ব্যাংক। এই গ্রুপটিও গত আট বছরে নামমাত্র ২০০ কোটি টাকার ঋণ পরিশোধ করেছে। ফলে মূল ঋণের সঙ্গে সুদ যোগ হয়ে বকেয়া স্থিতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৫৬৮ কোটি টাকা। ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ায় ব্যাংকগুলো গ্রুপকে ঋণখেলাপি হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
এননটেক্স গ্রুপ
ঋণ কেলেঙ্কারির ঘটনায় বছরের পর বছর খবরের শিরোনাম হয়ে আসছে এননটেক্স। গ্রুপটির ২০১৫ সালে এক হাজার ৯৪ কোটি টাকা ঋণ পুনর্গঠন করে জনতা ব্যাংক। এখন পর্যন্ত গ্রুপটি পুনর্গঠিত ঋণের মাত্র ১০৬ কোটি টাকা পরিশোধ করেছে। ঋণ পরিশোধ না করার কারণে বর্তমানে বকেয়া স্থিতি দাঁড়িয়েছে এক হাজার ১৭৬ কোটি টাকায়, যার পুরোটাই মেয়াদোত্তীর্ণ।
তথ্য অনুযায়ী, পুনর্গঠিত ঋণসহ বর্তমানে জনতা ব্যাংকে এননটেক্সের খেলাপি ঋণ রয়েছে সাত হাজার ৭০৮ কোটি টাকা। ব্যাংক খেলাপি ঋণ আদায় না করতে পেরে এননটেক্স গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান সিমরান কম্পোজিট লিমিটেডের বন্ধকি সম্পদ নিলামে তুলে এক হাজার ১৬০ কোটি টাকা মন্দঋণ আদায়ের উদ্যোগ নিয়েছে। জনতা ব্যাংকে খেলাপি হওয়ার পরও এননটেক্সকে প্রায় ৮০০ কোটি টাকা ঋণ দিয়েছে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ। তখন ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান ছিলেন এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলমের ছেলে আহসানুল আলম।
কেয়া গ্রুপ
কেয়া গ্রুপ তার সাবান দিয়ে গ্রামীণ বাংলাদেশে জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিল; কিন্তু সাফল্যের গল্পটি তিক্ত হয়ে যায় যখন এর গার্মেন্টস উদ্যোগটি ফ্লপ হয়ে যায় এবং কয়েক ডজন ব্যাংক ঋণের অর্থ আদায়ে ঘুরতে থাকে। এই গ্রুপটিও ২০১৫ সালে পুনর্গঠিত ঋণের সুবিধা নেয়। কেয়া গ্রুপের ৮৭৩ কোটি টাকার ঋণ পুনর্গঠন করে পূবালী, সাউথইস্টসহ পাঁচটি ব্যাংক।
অন্যান্য গ্রুপের মতো এই গ্রুপটিও ঋণ ফেরত দিতে ব্যর্থ হয়। গত আট বছরে ব্যাংকগুলো মাত্র ৩১৮ কোটি টাকা আদায় করতে সক্ষম হয়। বর্তমানে গ্রুপটির পুনর্গঠিত বকেয়া ঋণস্থিতি দাঁড়িয়েছে ৮৭৯ কোটি টাকা।
থার্মেক্স গ্রুপ
রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন জনতাসহ বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে দীর্ঘদিন ফেরত দিচ্ছে না আলোচিত আরেক গ্রুপ থার্মেক্স। এই গ্রুপও ২০১৫ সালে খেলাপি ঋণ পুনর্গঠিত করার সুবিধা নেয়। থার্মেক্স গ্রুপের পক্ষে ঋণ পুনর্গঠনের আবেদন করে জনতা ব্যাংক। যার পরিমাণ ছিল ৬৪২ কোটি টাকা। থার্মেক্স গ্রুপ এখন পর্যন্ত ২০১ কোটি টাকা পরিশোধ করেছে। বর্তমানে গ্রুপটির বকেয়া ঋণের স্থিতি দাঁড়িয়েছে ৫৬৯ কোটি টাকা। ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ায় গ্রুপটি এখন খেলাপি ঋণগ্রহীতা হিসেবে পরিচিত।
সম্প্রতি আলোচিত থার্মেক্স গ্রুপের সব ব্যাংকঋণের চিত্র খতিয়ে দেখতে শুরু করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ জন্য প্রতিটি ব্যাংক থেকে গ্রুপটির দায়দেনার তথ্য নেওয়া হচ্ছে। থার্মেক্স গ্রুপের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হলেন আবদুল কাদির মোল্লা। তিনি সাউথ বাংলা অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান। ব্যাংক খাতে আলোচিত গ্রাহকদের মধ্যে থার্মেক্স গ্রুপ একটি। এই গ্রুপের কারখানার বেশিরভাগই নরসিংদীতে।
রতনপুর গ্রুপ
রতনপুর গ্রুপ ৮১২ কোটি টাকার খেলাপি ঋণ পুনর্গঠন সুবিধা নেন। গ্রুপটি সুবিধা নেওয়ার শুরু থেকে ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মাত্র ৪১ কোটি টাকা পরিশোধ করে। বর্তমানে গ্রুপটির বকেয়া ঋণের স্থিতি দাঁড়িয়েছে এক হাজার ২৩৩ কোটি টাকা, যার পুরোটাই খেলাপি ঋণ।
এম আর গ্রুপ
এম আর গ্রুপ ৫৯৪ কোটি টাকার খেলাপি ঋণ পুনর্গঠন সুবিধা নেয়। গ্রুপটি এখন পর্যন্ত মাত্র ৬৯ কোটি টাকা পরিশোধ করে। ফলে এম আর গ্রুপের বকেয়া স্থিতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৭৫ কোটি টাকা।
রাইজিং গ্রুপ
রাইজিং গ্রুপ ৫২৩ কোটি টাকা বিশেষ সুবিধায় ঋণ পুনর্গঠন করেছিল। এই গ্রুপটিও ঋণ পরিশোধ করেনি। গত আট বছরে মাত্র ১১ কোটি টাকার ঋণ পরিশোধ করেছে। ফলে গ্রুপটির পুরো ঋণ এখন খেলাপি হয়ে গেছে।
এছাড়া আবদুল মোনেম লিমিটেড চার ব্যাংকে ৫৭৭ কোটি টাকার ঋণ পুনর্গঠন করে। গ্রুপটির নিয়মিত ঋণ পরিশোধ করায় বকেয়া স্থিতি কমে ৬৫ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। গ্রুপটির ঋণ এখনও নিয়মিত রয়েছে।
জানতে চাইলে সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শওকত আলী খান দৈনিক টার্গেটকে বলেন, পুনর্গঠিত ঋণ আদায়ে গ্রুপগুলোর সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি। যারা ঋণ পরিশোধ করতে চায়, তাদের বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়মের মধ্যে থেকে সুবিধা দেয়া হবে। আমরা খেলাপি ঋণ আদায়ে মাসব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা করেছি। তা এখনও চলমান আছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র হুসনে আরা শিখা দৈনিক টার্গেটকে বলেন, পুনর্গঠিত ঋণ পরিশোধের অবস্থা সন্তোষজনক নয়। তাই পুনর্গঠিত সুবিধা অনেক গ্রাহকের ক্ষেত্রে বাতিল করা হয়েছে। অন্যান্য গ্রাকের ক্ষেত্রেও সুবিধা বাতিলের ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।