শুভ জন্মদিন জিয়াউর রহমান

  • দৈনিক টার্গেট
  • প্রকাশ: ০৯:২১:৫২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৯ জানুয়ারি ২০২৫
  • ৭৭ বার পঠিত হয়েছে

জিয়াউর রহমান

পনেরো বছরেরও অধিক সময় পর রাষ্ট্রশক্তি ও তার দোসরদের বিরুদ্ধপ্রচারণামুক্ত পরিবেশে উদযাপিত হতে যাচ্ছে বহুদলীয় গণতন্ত্রের রূপকার, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের জন্মদিন। আজ বীর উত্তম খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযুদ্ধের এই অন্যতম সংগঠকের ৮৯তম জন্মবার্ষিকী। দিবসটি উপলক্ষে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) একদিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বাণী দিয়েছেন।

জিয়াউর রহমান ১৯ জানুয়ারি ১৯৩৬ সালে বগুড়া জেলার গাবতলীতে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা রসায়নবিদ মনসুর রহমান। মা জাহানারা খাতুন রানী। ৫ ভাইয়ের মধ্যে দ্বিতীয় জিয়াউর রহমানের ডাকনাম কমল। ১৯৫৩ সালে তৎকালীন পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে যোগ দেন তিনি। মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সেক্টর কমান্ডার হিসেবে বীরত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।

দায়িত্ব পালন করেন মুক্তিযুদ্ধের একটি স্বতন্ত্র সেক্টরের। তার নামে গড়ে ওঠে জেড ফোর্স। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর ২৫ আগস্ট তিনি সেনাবাহিনীর প্রধান নিযুক্ত হন। ৭৫ সালের ৭ নভেম্বর রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে অধিষ্ঠিত হন। ৭৬ সালের ২৯ নভেম্বর প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক হিসেবে নিযুক্ত হন তিনি। এরপর ৭৭ সালের ২১ এপ্রিল প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। ১৯৮১ সালের ৩০ মে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে বিপথগামী একদল সেনা সদস্যের হাতে শাহাদত বরণ করেন তিনি।

১৯৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর জিয়াউর রহমান বিএনপি প্রতিষ্ঠা করেন। তার প্রতিষ্ঠিত দলটি তিনবার রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় ছিল। এই দল প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ‍দেশে উন্নয়ন ও উৎপাদনের রাজনীতি শুরু করেন তিনি। তবে ২০০৯ সাল থেকে ৫ আগস্ট ক্ষমতাচ্যুত হয়ে পালানোর আগ পর্যন্ত শেখ হাসিনার সরকার জিয়াউর রহমানকে নিয়ে বিরুদ্ধপ্রচারণায় লিপ্ত হয়ে পড়ে। শেখ হাসিনা থেকে শুরু করে একেবারে আওয়ামী লীগের একেবারে ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরাও জিয়াউর রহমানের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকে কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা করেছেন।

তবে জিয়াউর রহমানকে নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতাদের এমন আচরণ দেশের মানুষ গ্রহণ করেনি বলে মনে করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষক ও বাংলাদেশ পলিটিক্যাল সায়েন্স নেটওয়ার্কের সাধারণ সম্পাদক ড. সাব্বীর আহমদ। তিনি বলেন, তাদের সেই প্রচারণার কোনো ভিত্তি ছিল না। তিনি যেভাবেই ক্ষমতায় আসুন না কেন- সেটা তো অন্য প্রশ্ন। কিন্তু তার রাজনীতি দেশের জনগণ গ্রহণ করেছে।

তিনি বলেন, তার (জিয়াউর রহমান) রাজনীতির মূল দর্শনটাই ছিল বাংলাদেশের আইডেন্টিটির ওপর নির্ভর করে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বকে উচ্চে তুলে ধরা। যে কারণে তিনি গঙ্গার ইস্যুকে জাতিসংঘ পর্যন্ত নিয়ে গিয়েছিলেন। মূলত তার অবদানের জন্যই বিএনপির রাজনীতিটা দাঁড়িয়ে গেছে।

বিশিষ্ট রাষ্ট্রবিজ্ঞানী তালুকদার মনিরুজ্জামান তার ‘পলিটিক্স অ্যান্ড সিকিউরিটি অব বাংলাদেশ’ বইতে জিয়াউর রহমানের ব্যাপারে বলেন, বাংলাদেশের রাজনীতিতে কোনো রাজনীতিবিদকে সফল হতে হলে কীভাবে এসব সমস্যার সমাধান করা যায় তা তাকে জানতে হবে। জিয়া এসব সমস্যার প্রকৃতি সম্পর্কে ভালোভাবেই বুঝতে পারতেন।

জিয়াউর রহমান ছিলেন ক্রান্তিকাল উত্তরণের দিশারী

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জিয়াউর রহমানের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে এক বিবৃতিতে বলেন, ‘শহীদ জিয়া ছিলেন তার জীবদ্দশায় দেশের সব ক্রান্তিকাল উত্তরণে জাতির দিশারী। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাকিস্তান সামরিক বাহিনী বাংলাদেশের জনগণের ওপর আক্রমণ করার পর তিনি পাকিস্তানি অধিনায়ককে বন্দি করে সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। ২৬ মার্চ তিনি চট্টগ্রাম কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে মুক্তিযুদ্ধ শুরু করেন অসীম বীরত্বে। জাতির এরকম এক মহাসংকটকালে ৭ নভেম্বর সৈনিক-জনতার ঐতিহাসিক বিপ্লবে শহীদ জিয়া রাষ্ট্রক্ষমতার হাল ধরেন। ক্ষমতায় এসেই তিনি বিচার বিভাগ ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ফিরিয়ে দিয়ে বহুদলীয় গণতন্ত্রের পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেন।

কর্মসূচি

জিয়াউর রহমানের ৮৯তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ১ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি। দিবসটি উপলক্ষে আজ বেলা ১১ টায় জিয়াউর রহমানের মাজারে সবপর্যায়ের নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন স্থায়ী কমিটির সদস্যরা। বেলা ২টায় রমনায় ইনস্টিটিউট অব ইঞ্জিনিয়ার্স-বাংলাদেশ মিলনায়তনে আলোচনা সভা হবে। এ ছাড়া সকাল ৯টা থেকে নয়াপল্টনে বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচতলায় বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা ও ওষুধ সরবরাহ করবে ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব)।

এ ছাড়া বিভিন্ন ইউনিটে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল হবে।

শুভ জন্মদিন জিয়াউর রহমান

প্রকাশ: ০৯:২১:৫২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৯ জানুয়ারি ২০২৫

পনেরো বছরেরও অধিক সময় পর রাষ্ট্রশক্তি ও তার দোসরদের বিরুদ্ধপ্রচারণামুক্ত পরিবেশে উদযাপিত হতে যাচ্ছে বহুদলীয় গণতন্ত্রের রূপকার, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের জন্মদিন। আজ বীর উত্তম খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযুদ্ধের এই অন্যতম সংগঠকের ৮৯তম জন্মবার্ষিকী। দিবসটি উপলক্ষে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) একদিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বাণী দিয়েছেন।

জিয়াউর রহমান ১৯ জানুয়ারি ১৯৩৬ সালে বগুড়া জেলার গাবতলীতে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা রসায়নবিদ মনসুর রহমান। মা জাহানারা খাতুন রানী। ৫ ভাইয়ের মধ্যে দ্বিতীয় জিয়াউর রহমানের ডাকনাম কমল। ১৯৫৩ সালে তৎকালীন পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে যোগ দেন তিনি। মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সেক্টর কমান্ডার হিসেবে বীরত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।

দায়িত্ব পালন করেন মুক্তিযুদ্ধের একটি স্বতন্ত্র সেক্টরের। তার নামে গড়ে ওঠে জেড ফোর্স। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর ২৫ আগস্ট তিনি সেনাবাহিনীর প্রধান নিযুক্ত হন। ৭৫ সালের ৭ নভেম্বর রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে অধিষ্ঠিত হন। ৭৬ সালের ২৯ নভেম্বর প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক হিসেবে নিযুক্ত হন তিনি। এরপর ৭৭ সালের ২১ এপ্রিল প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। ১৯৮১ সালের ৩০ মে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে বিপথগামী একদল সেনা সদস্যের হাতে শাহাদত বরণ করেন তিনি।

১৯৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর জিয়াউর রহমান বিএনপি প্রতিষ্ঠা করেন। তার প্রতিষ্ঠিত দলটি তিনবার রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় ছিল। এই দল প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ‍দেশে উন্নয়ন ও উৎপাদনের রাজনীতি শুরু করেন তিনি। তবে ২০০৯ সাল থেকে ৫ আগস্ট ক্ষমতাচ্যুত হয়ে পালানোর আগ পর্যন্ত শেখ হাসিনার সরকার জিয়াউর রহমানকে নিয়ে বিরুদ্ধপ্রচারণায় লিপ্ত হয়ে পড়ে। শেখ হাসিনা থেকে শুরু করে একেবারে আওয়ামী লীগের একেবারে ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরাও জিয়াউর রহমানের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকে কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা করেছেন।

তবে জিয়াউর রহমানকে নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতাদের এমন আচরণ দেশের মানুষ গ্রহণ করেনি বলে মনে করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষক ও বাংলাদেশ পলিটিক্যাল সায়েন্স নেটওয়ার্কের সাধারণ সম্পাদক ড. সাব্বীর আহমদ। তিনি বলেন, তাদের সেই প্রচারণার কোনো ভিত্তি ছিল না। তিনি যেভাবেই ক্ষমতায় আসুন না কেন- সেটা তো অন্য প্রশ্ন। কিন্তু তার রাজনীতি দেশের জনগণ গ্রহণ করেছে।

তিনি বলেন, তার (জিয়াউর রহমান) রাজনীতির মূল দর্শনটাই ছিল বাংলাদেশের আইডেন্টিটির ওপর নির্ভর করে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বকে উচ্চে তুলে ধরা। যে কারণে তিনি গঙ্গার ইস্যুকে জাতিসংঘ পর্যন্ত নিয়ে গিয়েছিলেন। মূলত তার অবদানের জন্যই বিএনপির রাজনীতিটা দাঁড়িয়ে গেছে।

বিশিষ্ট রাষ্ট্রবিজ্ঞানী তালুকদার মনিরুজ্জামান তার ‘পলিটিক্স অ্যান্ড সিকিউরিটি অব বাংলাদেশ’ বইতে জিয়াউর রহমানের ব্যাপারে বলেন, বাংলাদেশের রাজনীতিতে কোনো রাজনীতিবিদকে সফল হতে হলে কীভাবে এসব সমস্যার সমাধান করা যায় তা তাকে জানতে হবে। জিয়া এসব সমস্যার প্রকৃতি সম্পর্কে ভালোভাবেই বুঝতে পারতেন।

জিয়াউর রহমান ছিলেন ক্রান্তিকাল উত্তরণের দিশারী

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জিয়াউর রহমানের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে এক বিবৃতিতে বলেন, ‘শহীদ জিয়া ছিলেন তার জীবদ্দশায় দেশের সব ক্রান্তিকাল উত্তরণে জাতির দিশারী। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাকিস্তান সামরিক বাহিনী বাংলাদেশের জনগণের ওপর আক্রমণ করার পর তিনি পাকিস্তানি অধিনায়ককে বন্দি করে সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। ২৬ মার্চ তিনি চট্টগ্রাম কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে মুক্তিযুদ্ধ শুরু করেন অসীম বীরত্বে। জাতির এরকম এক মহাসংকটকালে ৭ নভেম্বর সৈনিক-জনতার ঐতিহাসিক বিপ্লবে শহীদ জিয়া রাষ্ট্রক্ষমতার হাল ধরেন। ক্ষমতায় এসেই তিনি বিচার বিভাগ ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ফিরিয়ে দিয়ে বহুদলীয় গণতন্ত্রের পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেন।

কর্মসূচি

জিয়াউর রহমানের ৮৯তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ১ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি। দিবসটি উপলক্ষে আজ বেলা ১১ টায় জিয়াউর রহমানের মাজারে সবপর্যায়ের নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন স্থায়ী কমিটির সদস্যরা। বেলা ২টায় রমনায় ইনস্টিটিউট অব ইঞ্জিনিয়ার্স-বাংলাদেশ মিলনায়তনে আলোচনা সভা হবে। এ ছাড়া সকাল ৯টা থেকে নয়াপল্টনে বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচতলায় বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা ও ওষুধ সরবরাহ করবে ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব)।

এ ছাড়া বিভিন্ন ইউনিটে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল হবে।