০২:৪৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভারতে অস্ত্র চোরাকারবারির রুট বন্ধ করেছে আমার সরকার : প্রধানমন্ত্রী

  • দৈনিক টার্গেট
  • প্রকাশের সময় : ০২:০৮:৪৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ মে ২০২৪
  • ৬৯ বার পঠিত

আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে ভারতে অস্ত্র চোরাকারবারির রুট বন্ধ করেছে বলে জানিয়েছেন দলটির সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২৫ মে) সকালে বঙ্গবাজারে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বাস্তবায়নাধীন বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে এ দেশে অস্ত্র চোরাকারবারির যে রুট, সেটা বন্ধ করেছে। ভারতে উলফা থেকে শুরু করে যেখানে যেখানে যারা অস্ত্র সাপ্লাই দিত, সেগুলো বন্ধ করা হয়েছে। তাদেরও যাতে শান্তি আসে, সেভেন সিস্টার্সে সেই ব্যবস্থাটা আওয়ামী লীগ করেছে। এটা সব থেকে বড় কাজ।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের যে ল্যান্ড বাউন্ডারি (ছিটমহল), সেটাও বিনিময় করে সারা বিশ্বে একটা দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছি। বিশাল সমুদ্রসীমা আমরা জয় করেছি। যারা আগে ক্ষমতায় ছিল, তারা (বিএনপি) তো এ ব্যাপারে কোনো উদ্যোগই নেয়নি। জানতই না।’

বিএনপি সরকারের সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘তারা আসছিল লুটপাট করতে, দুর্নীতি করতে, অস্ত্র চোরাকারবারি করতে, সে কাজেই ব্যস্ত ছিল, আর মানুষ খুন করতে। ২১ আগস্টে গ্রেনেড হামলা থেকে শুরু করে, যত রকমের মানুষ, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর অত্যাচার, ধরে নিয়ে গিয়ে অত্যাচার, দিনের পর দিন অত্যাচারই করতে পেরেছে।’

তিনি বলেন, ‘এ দেশটাকে তারা কোথায় নিয়ে গিয়েছিল! সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, অস্ত্র চোরাকারবারি; ওই তারেক জিয়া তো অস্ত্র চোরাকারবার মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি। ওখানে (লন্ডনে) বসে এখন নানাভাবে ওই অগ্নিসন্ত্রাস দিয়ে মানুষ মারা, মানুষ খুন করা, আগুন দিয়ে মানুষকে পোড়ানো—এসব করে বেড়ায়।’

টানা তিন মেয়াদে সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন ও উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পাওয়ার কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের উন্নয়নের ধারাটা অব্যাহত রেখে এগিয়ে যেতে হবে, সেভাবে আমরা এগিয়ে যাব।’

ঢাকায় কোনো বস্তি থাকবে না

সরকারপ্রধান বলেন, ‘ঢাকায় কোনো কাঁচা বস্তি, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ থাকবে না। শুধু বড়লোকেরাই ফ্ল্যাটে থাকবে সেটা হতে পারে না। আমাদের রিকশাওয়ালা থেকে শুরু করে দিনমজুররাও ফ্ল্যাটে থাকবে। সুন্দর পরিবেশে সবাই বসবাস করবে। সে ব্যবস্থা করে দেব। এ পদক্ষেপও আমরা নিয়েছি। মানুষের কল্যাণে কাজ করা, এটাই আমাদের লক্ষ্য। এ লক্ষ্য নিয়েই আমরা কাজ করছি।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের জন্য ফ্ল্যাট করে দিচ্ছি। বস্তিবাসীদের জন্য ভাড়াভিত্তিক ফ্ল্যাট নির্মাণ করে দিচ্ছি। বস্তিতে যেরকম ভাড়া সেরকম ভাড়াই দেবে, কিন্তু তারা ফ্ল্যাটে থাকবে। শুধু বড়লোকেরাই ফ্ল্যাটে থাকবে সেটা হতে পারে না। আমাদের রিকশাওয়ালা থেকে শুরু করে দিনমজুররাও ফ্ল্যাটে থাকবে। স্বল্প ভাড়া, কেউ যদি প্রতিদিন ভাড়া দিতে চায়, সেই ব্যবস্থা আছে। কেউ যদি সাত দিনের ভাড়া দিতে চায়, সে ব্যবস্থা আছে। কেউ মাসের ভাড়া দিতে চাইলে সে ব্যবস্থাও হবে। আমরা ইতোমধ্যে ৩০০ পরিবার তুলেছি।’

পরিবেশ রক্ষায় গাছ লাগানোর আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যাদের একটুকরো জমি আছে, তারা একটা ফুলের গাছ, একটা ফলের গাছ হলেও লাগান। যাদের গ্রামের বাড়ি আছে, সেখানে যেন অনাবাদি জমি না থাকে, সেদিকে দৃষ্টি দিতে হবে।’

আসন্ন ঈদুল আজহায় যেখানে-সেখানে পশু কোরবানি না করার নির্দেশনা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, কোরবানির জন্য সারা দেশে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবস্থা করবে সরকার।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘পুরান ঢাকার সঙ্গে আলাদা নাড়ির টান আছে। এ অঞ্চলের মানুষ ভালো থাকুক সেটাই চাই। একসময় ঢাকায় বিদ্যুৎ-পানি ছিল না। এজন্য বিএনপির এক নেতা ধাওয়াও খায়। আমরা ক্ষমতায় এসে পানি পরিস্থিতির অনেক উন্নতি করেছি।’

সরকারপ্রধান বলেন, ‘ছয় মাস পরপর পানির ট্যাংক পরিষ্কার করতে হবে। কোথাও যেন পানি না জমে, মশার প্রজননক্ষেত্র না হয় সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে। বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে চাহিদাও বেড়েছে। বিদ্যুৎ ও পানি ব্যবহারে সাশ্রয়ী হতে হবে। বিদ্যুতে অনেক ভর্তুকি দিতে হয়। বিল কমাতে চাইলে বিদ্যুৎ, পানি ব্যবহারে সাশ্রয়ী হতে হবে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দালাল ধরে টাকা খরচ করে ভূমধ্যসাগরে ডুবে যাওয়ার চেয়ে দেশে কিছু করা ভালো। মাদক-সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ থেকে যুবসমাজকে দূরে থাকতে হবে।’ এ সময় পার্ক যেন মাদক সেবনের জায়গা না হয়, কাউন্সিলরদের সেদিকে সচেষ্ট হওয়ার নির্দেশ দেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশ যত উন্নত হচ্ছে, মানুষের কাজকর্ম তত বাড়ছে। আধুনিকতার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হয়। ইতোমধ্যে রাজধানীবাসীর যাতায়াতের জন্য ঢাকায় একটি মেট্রোরেলপথ তৈরি করা হয়েছে। আরও কয়েকটি মেট্রোরেলপথ নির্মাণ করা হবে। কিছু ওপর দিয়ে যাবে, আবার কিছু পাতাল দিয়ে যাবে। সেভাবেই পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।’

স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে এতে আরও বক্তব্য দেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস, সংসদ সদস্য আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম ও স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মোহাম্মদ ইব্রাহীম।

ভারতে অস্ত্র চোরাকারবারির রুট বন্ধ করেছে আমার সরকার : প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশের সময় : ০২:০৮:৪৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ মে ২০২৪

আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে ভারতে অস্ত্র চোরাকারবারির রুট বন্ধ করেছে বলে জানিয়েছেন দলটির সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২৫ মে) সকালে বঙ্গবাজারে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বাস্তবায়নাধীন বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে এ দেশে অস্ত্র চোরাকারবারির যে রুট, সেটা বন্ধ করেছে। ভারতে উলফা থেকে শুরু করে যেখানে যেখানে যারা অস্ত্র সাপ্লাই দিত, সেগুলো বন্ধ করা হয়েছে। তাদেরও যাতে শান্তি আসে, সেভেন সিস্টার্সে সেই ব্যবস্থাটা আওয়ামী লীগ করেছে। এটা সব থেকে বড় কাজ।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের যে ল্যান্ড বাউন্ডারি (ছিটমহল), সেটাও বিনিময় করে সারা বিশ্বে একটা দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছি। বিশাল সমুদ্রসীমা আমরা জয় করেছি। যারা আগে ক্ষমতায় ছিল, তারা (বিএনপি) তো এ ব্যাপারে কোনো উদ্যোগই নেয়নি। জানতই না।’

বিএনপি সরকারের সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘তারা আসছিল লুটপাট করতে, দুর্নীতি করতে, অস্ত্র চোরাকারবারি করতে, সে কাজেই ব্যস্ত ছিল, আর মানুষ খুন করতে। ২১ আগস্টে গ্রেনেড হামলা থেকে শুরু করে, যত রকমের মানুষ, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর অত্যাচার, ধরে নিয়ে গিয়ে অত্যাচার, দিনের পর দিন অত্যাচারই করতে পেরেছে।’

তিনি বলেন, ‘এ দেশটাকে তারা কোথায় নিয়ে গিয়েছিল! সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, অস্ত্র চোরাকারবারি; ওই তারেক জিয়া তো অস্ত্র চোরাকারবার মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি। ওখানে (লন্ডনে) বসে এখন নানাভাবে ওই অগ্নিসন্ত্রাস দিয়ে মানুষ মারা, মানুষ খুন করা, আগুন দিয়ে মানুষকে পোড়ানো—এসব করে বেড়ায়।’

টানা তিন মেয়াদে সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন ও উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পাওয়ার কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের উন্নয়নের ধারাটা অব্যাহত রেখে এগিয়ে যেতে হবে, সেভাবে আমরা এগিয়ে যাব।’

ঢাকায় কোনো বস্তি থাকবে না

সরকারপ্রধান বলেন, ‘ঢাকায় কোনো কাঁচা বস্তি, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ থাকবে না। শুধু বড়লোকেরাই ফ্ল্যাটে থাকবে সেটা হতে পারে না। আমাদের রিকশাওয়ালা থেকে শুরু করে দিনমজুররাও ফ্ল্যাটে থাকবে। সুন্দর পরিবেশে সবাই বসবাস করবে। সে ব্যবস্থা করে দেব। এ পদক্ষেপও আমরা নিয়েছি। মানুষের কল্যাণে কাজ করা, এটাই আমাদের লক্ষ্য। এ লক্ষ্য নিয়েই আমরা কাজ করছি।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের জন্য ফ্ল্যাট করে দিচ্ছি। বস্তিবাসীদের জন্য ভাড়াভিত্তিক ফ্ল্যাট নির্মাণ করে দিচ্ছি। বস্তিতে যেরকম ভাড়া সেরকম ভাড়াই দেবে, কিন্তু তারা ফ্ল্যাটে থাকবে। শুধু বড়লোকেরাই ফ্ল্যাটে থাকবে সেটা হতে পারে না। আমাদের রিকশাওয়ালা থেকে শুরু করে দিনমজুররাও ফ্ল্যাটে থাকবে। স্বল্প ভাড়া, কেউ যদি প্রতিদিন ভাড়া দিতে চায়, সেই ব্যবস্থা আছে। কেউ যদি সাত দিনের ভাড়া দিতে চায়, সে ব্যবস্থা আছে। কেউ মাসের ভাড়া দিতে চাইলে সে ব্যবস্থাও হবে। আমরা ইতোমধ্যে ৩০০ পরিবার তুলেছি।’

পরিবেশ রক্ষায় গাছ লাগানোর আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যাদের একটুকরো জমি আছে, তারা একটা ফুলের গাছ, একটা ফলের গাছ হলেও লাগান। যাদের গ্রামের বাড়ি আছে, সেখানে যেন অনাবাদি জমি না থাকে, সেদিকে দৃষ্টি দিতে হবে।’

আসন্ন ঈদুল আজহায় যেখানে-সেখানে পশু কোরবানি না করার নির্দেশনা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, কোরবানির জন্য সারা দেশে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবস্থা করবে সরকার।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘পুরান ঢাকার সঙ্গে আলাদা নাড়ির টান আছে। এ অঞ্চলের মানুষ ভালো থাকুক সেটাই চাই। একসময় ঢাকায় বিদ্যুৎ-পানি ছিল না। এজন্য বিএনপির এক নেতা ধাওয়াও খায়। আমরা ক্ষমতায় এসে পানি পরিস্থিতির অনেক উন্নতি করেছি।’

সরকারপ্রধান বলেন, ‘ছয় মাস পরপর পানির ট্যাংক পরিষ্কার করতে হবে। কোথাও যেন পানি না জমে, মশার প্রজননক্ষেত্র না হয় সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে। বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে চাহিদাও বেড়েছে। বিদ্যুৎ ও পানি ব্যবহারে সাশ্রয়ী হতে হবে। বিদ্যুতে অনেক ভর্তুকি দিতে হয়। বিল কমাতে চাইলে বিদ্যুৎ, পানি ব্যবহারে সাশ্রয়ী হতে হবে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দালাল ধরে টাকা খরচ করে ভূমধ্যসাগরে ডুবে যাওয়ার চেয়ে দেশে কিছু করা ভালো। মাদক-সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ থেকে যুবসমাজকে দূরে থাকতে হবে।’ এ সময় পার্ক যেন মাদক সেবনের জায়গা না হয়, কাউন্সিলরদের সেদিকে সচেষ্ট হওয়ার নির্দেশ দেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশ যত উন্নত হচ্ছে, মানুষের কাজকর্ম তত বাড়ছে। আধুনিকতার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হয়। ইতোমধ্যে রাজধানীবাসীর যাতায়াতের জন্য ঢাকায় একটি মেট্রোরেলপথ তৈরি করা হয়েছে। আরও কয়েকটি মেট্রোরেলপথ নির্মাণ করা হবে। কিছু ওপর দিয়ে যাবে, আবার কিছু পাতাল দিয়ে যাবে। সেভাবেই পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।’

স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে এতে আরও বক্তব্য দেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস, সংসদ সদস্য আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম ও স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মোহাম্মদ ইব্রাহীম।