০৪:৩৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আজ জাতীয় কবি নজরুলের ১২৫তম জন্মবার্ষিকী

  • দৈনিক টার্গেট
  • প্রকাশের সময় : ০৫:৪৭:৩৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ মে ২০২৪
  • ৮৫ বার পঠিত

আজ ১১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৫তম জন্মবার্ষিকী। ১৩০৬ বঙ্গাব্দের ১১ জ্যৈষ্ঠ (২৫ মে ১৮৯৯) এক ঝড়ের রাতে অবিভক্ত বাংলার বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন মহান এই প্রতিভা।

মম এক হাতে বাঁকা বাঁশের বাঁশরী আর হাতে রণতূর্য। বাংলা ও বাঙালির অহংকার বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের একদিকে অনন্ত প্রেম, অন্যদিকে বিদ্রোহ। কী কবিতায়, কী গানে, উপন্যাসে, গল্পে সর্বত্রই মানবমুক্তি প্রেমময় বাণী ও দ্রোহের বাণী। দুই-ই ঝঙ্কৃত হয়েছে জাতীয় কবি নজরুলের সৃষ্টিতে। পরাধীনতার শৃঙ্খল ভাঙার পাশাপাশি সামাজিক বৈষম্য, শোষণ, বঞ্চনা, কুসংস্কার, হীনম্মন্যতার বিরুদ্ধেও শিখিয়েছেন রুখে দাঁড়াতে

জাতীয় কবি নজরুল দরিদ্র পরিবারে জন্ম নিয়েও ছিলেন অসাম্য, অসুন্দর ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে অক্লান্ত বিদ্রোহী চির উন্নত শির। বাংলা কাব্যে এক নতুন যুগের স্রষ্টা নজরুল পরাধীন ব্রিটিশ ভারতে মুক্তির বাণী বয়ে এনেছিলেন তার কাব্যে। সূচনা করেছিলেন এক নতুন যুগের। ‘অগ্নিবীণা, ‘বিষের বাঁশী, আর ‘ভাঙ্গার গান’ ‘যৌবনের জয়গান’ গেয়ে জাগিয়ে তুলেছিলেন তিনি গোটা উপমহাদেশের মানুষকে। ১৯২১ সালে ‘বিদ্রোহী’ কবিতা লিখে সে সময়ে ব্রিটিশ শাসনের ভিত কাঁপিয়ে দিয়েছেন। ব্রিটিশ বিরোধী কবিতার জন্য করেছিলেন কারাবরণ। কিন্তু কখনোই ঔপনিবেশিক শাসনের কাছে মাথা নত করেননি। ঔপনিবেশিক শাসনের শৃঙ্খল থেকে মুক্তির জন্য উজ্জ্বীবিত করতে বারবার গেয়েছেন বলবীর, বল উন্নত মম শির। শির নেহারি আমারি নতশির, ওই শিখর হিমাদ্রির।’ বাংলা গানের জগতে নজরুল সুর ও বাণীর ক্ষেত্রে ঘটিয়েছেন এক অনন্য বিপ্লব।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালের ২৪ মে কাজী নজরুল ইসলামকে সপরিবারে বাংলাদেশে নিয়ে আসেন। কবিকে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব প্রদান করে ঘোষণা করা হয় জাতীয় কবি হিসেবে। ১৯৭৬ সালে মৃত্যু বরণ করলে কবিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে সমাধিস্থ করা হয়। মৃত্যুর আগে তিনি লিখেছিলেন- “মসজিদেরই পাশে আমার কবর দিও ভাই, যেন গোরে হতে মুয়াজ্জিনের আযান শুনতে পাই।

চরম দারিদ্র্য ও বহু বাধা অতিক্রম করে একসময় তিনি বাংলা সাহিত্যের অন্যতম পুরোধা হয়ে ওঠেন। কবিতায় বিদ্রোহী সুরের জন্য তার পরিচিতি বিদ্রোহী কবি। জাতীয় কবির জন্মদিন উপলক্ষে পৃথক পৃথক বাণী দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট মো. সাহাবুদ্দিন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এছাড়া বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন নানা কর্মসূচির আয়োজন করেছে।

জাতীয়ভাবে নজরুল জয়ন্তী পালনসহ দেশে-বিদেশে বিভিন্ন সংগঠন দিনটিকে স্মরণ করবে নানা আয়োজনে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন মসজিদ প্রাঙ্গণে নজরুলের মাজারে সকালে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদনের মধ্য দিয়ে শুরু হবে জš§দিনের কর্মসূচি। পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে কবিকে নিয়ে নিবন্ধ। বাংলাদেশ বেতার, টেলিভিশনসহ বিভিন্ন বেসরকারি টেলিভিশনে প্রচারিত হচ্ছে বিশেষ অনুষ্ঠান মালা।

‘অসাম্প্রদায়িক চেতনা এবং নজরুল’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে এবার জাতীয় কবির জন্মবার্ষিকী উদযাপিত হচ্ছে। সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় তিন দিনব্যাপি (২৫ থেকে ২৭ মে) অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী দিনে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থাকবেন জাতীয় সংসদের সংসদ উপনেতা বেগম মতিয়া চৌধুরী। আজ বিকেল ৪টায় রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরে অনুষ্ঠান উদ্বোধন করা হবে। এছাড়াও ময়মনসিংহ, জাতীয় কবির স্মৃতি বিজড়িত কুমিল্লার দৌলতপুরসহ বিভিন্ন স্থানে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় ও স্থানীয় প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় যথাযোগ্য মর্যাদায় জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৫ তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন করা হবে। এ উপলক্ষে আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে স্থানীয় প্রশাসন।

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৫তম জন্মবার্ষিকী যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনের লক্ষ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- কবির মাজারে পুষ্পস্তবক অর্পণ, আলোচনা সভা ও সঙ্গীতানুষ্ঠান।

আজ জাতীয় কবি নজরুলের ১২৫তম জন্মবার্ষিকী

প্রকাশের সময় : ০৫:৪৭:৩৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ মে ২০২৪

আজ ১১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৫তম জন্মবার্ষিকী। ১৩০৬ বঙ্গাব্দের ১১ জ্যৈষ্ঠ (২৫ মে ১৮৯৯) এক ঝড়ের রাতে অবিভক্ত বাংলার বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন মহান এই প্রতিভা।

মম এক হাতে বাঁকা বাঁশের বাঁশরী আর হাতে রণতূর্য। বাংলা ও বাঙালির অহংকার বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের একদিকে অনন্ত প্রেম, অন্যদিকে বিদ্রোহ। কী কবিতায়, কী গানে, উপন্যাসে, গল্পে সর্বত্রই মানবমুক্তি প্রেমময় বাণী ও দ্রোহের বাণী। দুই-ই ঝঙ্কৃত হয়েছে জাতীয় কবি নজরুলের সৃষ্টিতে। পরাধীনতার শৃঙ্খল ভাঙার পাশাপাশি সামাজিক বৈষম্য, শোষণ, বঞ্চনা, কুসংস্কার, হীনম্মন্যতার বিরুদ্ধেও শিখিয়েছেন রুখে দাঁড়াতে

জাতীয় কবি নজরুল দরিদ্র পরিবারে জন্ম নিয়েও ছিলেন অসাম্য, অসুন্দর ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে অক্লান্ত বিদ্রোহী চির উন্নত শির। বাংলা কাব্যে এক নতুন যুগের স্রষ্টা নজরুল পরাধীন ব্রিটিশ ভারতে মুক্তির বাণী বয়ে এনেছিলেন তার কাব্যে। সূচনা করেছিলেন এক নতুন যুগের। ‘অগ্নিবীণা, ‘বিষের বাঁশী, আর ‘ভাঙ্গার গান’ ‘যৌবনের জয়গান’ গেয়ে জাগিয়ে তুলেছিলেন তিনি গোটা উপমহাদেশের মানুষকে। ১৯২১ সালে ‘বিদ্রোহী’ কবিতা লিখে সে সময়ে ব্রিটিশ শাসনের ভিত কাঁপিয়ে দিয়েছেন। ব্রিটিশ বিরোধী কবিতার জন্য করেছিলেন কারাবরণ। কিন্তু কখনোই ঔপনিবেশিক শাসনের কাছে মাথা নত করেননি। ঔপনিবেশিক শাসনের শৃঙ্খল থেকে মুক্তির জন্য উজ্জ্বীবিত করতে বারবার গেয়েছেন বলবীর, বল উন্নত মম শির। শির নেহারি আমারি নতশির, ওই শিখর হিমাদ্রির।’ বাংলা গানের জগতে নজরুল সুর ও বাণীর ক্ষেত্রে ঘটিয়েছেন এক অনন্য বিপ্লব।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালের ২৪ মে কাজী নজরুল ইসলামকে সপরিবারে বাংলাদেশে নিয়ে আসেন। কবিকে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব প্রদান করে ঘোষণা করা হয় জাতীয় কবি হিসেবে। ১৯৭৬ সালে মৃত্যু বরণ করলে কবিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে সমাধিস্থ করা হয়। মৃত্যুর আগে তিনি লিখেছিলেন- “মসজিদেরই পাশে আমার কবর দিও ভাই, যেন গোরে হতে মুয়াজ্জিনের আযান শুনতে পাই।

চরম দারিদ্র্য ও বহু বাধা অতিক্রম করে একসময় তিনি বাংলা সাহিত্যের অন্যতম পুরোধা হয়ে ওঠেন। কবিতায় বিদ্রোহী সুরের জন্য তার পরিচিতি বিদ্রোহী কবি। জাতীয় কবির জন্মদিন উপলক্ষে পৃথক পৃথক বাণী দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট মো. সাহাবুদ্দিন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এছাড়া বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন নানা কর্মসূচির আয়োজন করেছে।

জাতীয়ভাবে নজরুল জয়ন্তী পালনসহ দেশে-বিদেশে বিভিন্ন সংগঠন দিনটিকে স্মরণ করবে নানা আয়োজনে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন মসজিদ প্রাঙ্গণে নজরুলের মাজারে সকালে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদনের মধ্য দিয়ে শুরু হবে জš§দিনের কর্মসূচি। পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে কবিকে নিয়ে নিবন্ধ। বাংলাদেশ বেতার, টেলিভিশনসহ বিভিন্ন বেসরকারি টেলিভিশনে প্রচারিত হচ্ছে বিশেষ অনুষ্ঠান মালা।

‘অসাম্প্রদায়িক চেতনা এবং নজরুল’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে এবার জাতীয় কবির জন্মবার্ষিকী উদযাপিত হচ্ছে। সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় তিন দিনব্যাপি (২৫ থেকে ২৭ মে) অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী দিনে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থাকবেন জাতীয় সংসদের সংসদ উপনেতা বেগম মতিয়া চৌধুরী। আজ বিকেল ৪টায় রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরে অনুষ্ঠান উদ্বোধন করা হবে। এছাড়াও ময়মনসিংহ, জাতীয় কবির স্মৃতি বিজড়িত কুমিল্লার দৌলতপুরসহ বিভিন্ন স্থানে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় ও স্থানীয় প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় যথাযোগ্য মর্যাদায় জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৫ তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন করা হবে। এ উপলক্ষে আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে স্থানীয় প্রশাসন।

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৫তম জন্মবার্ষিকী যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনের লক্ষ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- কবির মাজারে পুষ্পস্তবক অর্পণ, আলোচনা সভা ও সঙ্গীতানুষ্ঠান।