‘একজন করে নয়, অসংখ্য আজিজ-বেনজীর তৈরি করেছে এই আওয়ামী লীগ’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বুধবার (২৯ মে) রাজধানীর রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪৩তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এ আলোচনা সভার আয়োজন করে বিএনপি।
সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদ ও পুলিশের সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের প্রসঙ্গ তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘মার্কিন নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার পরও বেনজীরকে পুলিশপ্রধান বানিয়েছিল আওয়ামী লীগ। একজন আজিজ নয়, বেনজীর নয়; হাজার হাজার আজিজ, বেনজীর তৈরি করেছে আওয়ামী লীগ সরকার। এরা বর্গিতে পরিণত হয়েছে, টাকা পাচার করে দেশকে শূন্য করেছে। লুটপাট, লুণ্ঠন করে সব শেষ করেছে। বেনজীরকে লালন করেছে সরকার, তাই এ দায় সরকারকেই নিতে হবে। এ জন্য সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে।’
‘জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে কে, কার বিচার করবে’- সরকারের প্রতি এমন মন্তব্য ছুড়ে দিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘ইতোমধ্যে বিচার হয়েই গেছে। নির্বাচন দেন না কেন? আমরা বলিনি আমাদের ক্ষমতায় বসিয়ে দাও। আমরা বলি, নিরপেক্ষ নির্বাচন দাও, জনগণ সিদ্ধান্ত নেবে। তারা জানে, নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে তারা ১০ শতাংশ ভোটও পাবে না।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আওয়ামী লীগের পুনর্জন্ম হয়েছিল জিয়াউর রহমানের হাত ধরেই। তিনি বলেছিলেন রাজনীতি হবে কৃষকের, শ্রমিক জনতার। তৃণমূল থেকে রাজনীতিতে উঠে আসবে। জিয়াউর রহমানের কৃতিত্ব কখনো জাতি অস্বীকার করবে না। আওয়ামী লীগ আজ এই মহান নেতাকে খলনায়ক বানানোর চেষ্টা করেছে। ক্ষণজন্মা মানুষটিকে নিয়ে তারা উল্টাপাল্টা কথা বলে। শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের শাহাদতের দিনে ঢাকার অলিগলি ছিল নীরব। পুরো দেশে নেমেছিল শোকের ছায়া। যেদিন তার লাশ ঢাকায় আনা হয়েছিল, সেদিন সেনাসদস্যরা কোনো প্রোটোকল না মেনে হুমড়ি খেয়ে পড়েছিল। কান্নায় ভেঙে পড়েছিল সবাই।’
তিনি বলেন, ‘এ দেশে সংসদীয় গণতন্ত্র চালু করেছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। তিনি জনগণের চাওয়াকে প্রাধান্য দিয়ে কেয়ারটেকার সরকারব্যবস্থা চালু করেছিলেন।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, ‘এই দেশ রাঘববোয়ালদের হাতে চলে যাচ্ছে, গিলে ফেলার চেষ্টা করা হচ্ছে। এ দেশের গণতন্ত্র নস্যাৎ করা হচ্ছে। এই অগণতান্ত্রিক সরকার যা করছে কোনোটাই দেশের পক্ষে যাচ্ছে না। তারা নিজের জন্য সব করে যাচ্ছে। এ সরকার কখনো মানুষের মঙ্গল চায়নি। নিষিদ্ধ হওয়া আওয়ামী লীগকে জিয়াউর রহমানই রাজনীতি করার সুযোগ করে দিয়েছিলেন।’
সভাপতির বক্তব্যে মেজর (অব.) হাফিজউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘সাবেক সেনাপ্রধান আর পুলিশপ্রধান চোর। এটাই হলো দেশ। মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্ন ধূলিসাৎ করেছে আওয়ামী লীগ।’
বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানীর সঞ্চালনায় সভায় আরও বক্তব্য রাখেন ড. মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, শামসুজ্জামান দুদু, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুস সালাম। উপস্থিত ছিলেন ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু, যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মোনায়েম মুন্না, সিনিয়র সহসভাপতি মামুন হাসান, ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব প্রমুখ।