ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের জন্য ঈদুল আযহার অন্যতম প্রধান ইবাদত হলো কুরবানী। তবে প্রশ্ন দেখা দেয়- সবার জন্য কি কুরবানী দেওয়া বাধ্যতামূলক? ইসলামী বিধান অনুযায়ী, নির্দিষ্ট কিছু শর্ত পূরণ করলেই একজন মুসলমানের ওপর কুরবানী ফরজ বা ওয়াজিব হয়।
ইসলামী দৃষ্টিকোণ থেকে কাদের জন্য কুরবানী বাধ্যতামূলক?
ইসলামী শরীয়তের বিধান অনুযায়ী, কুরবানী তখনই ওয়াজিব হয়, যখন নিম্নলিখিত শর্তগুলো পূরণ হয়:
১. মুসলমান হতে হবে: কুরবানী কেবল মুসলমানদের ওপর ফরজ।
২. বালেগ বা প্রাপ্তবয়স্ক হতে হবে: শিশুদের ওপর কুরবানী ওয়াজিব নয়।
৩. আকিল বা সুস্থ মস্তিষ্কসম্পন্ন হতে হবে: মানসিক ভারসাম্যহীনদের ওপর এটি বাধ্যতামূলক নয়।
৪. নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হতে হবে: ঈদুল আযহার দিন ও তার আগের রাত পর্যন্ত যিনি নিজের প্রয়োজনের অতিরিক্ত নিসাব পরিমাণ (বর্তমানে প্রায় সাড়ে সাত তোলা সোনা বা সাড়ে বায়ান্ন তোলা রূপার সমমূল্যের সম্পদ) মালিক হন, তাঁর ওপর কুরবানী করা ওয়াজিব হয়।
৫. মুসাফির না হওয়া: কেউ যদি সফরে থাকেন, তাহলে তার ওপর কুরবানী ওয়াজিব নয়। তবে ইচ্ছা করলে করতে পারেন।
নারী-পুরুষ উভয়ের জন্যই প্রযোজ্য
অনেকের মধ্যে একটি ভুল ধারণা আছে যে কেবল পুরুষদেরই কুরবানী দিতে হয়। কিন্তু ইসলামী শরীয়তের মতে, উপরোক্ত শর্তগুলো যেকোনো নারীর মধ্যে পূর্ণ হলে, তাঁর ওপরও কুরবানী ওয়াজিব হয়।
যারা কুরবানী করবেন না, তাদের জন্য করণীয় কী?
যাদের ওপর কুরবানী ওয়াজিব নয়, তাদের জন্য কুরবানী না করায় কোনো গোনাহ নেই। তবে যারা সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও কুরবানী করেন না, তাদের ব্যাপারে হাদীসে কঠোর সতর্কবাণী এসেছে। মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) বলেন, “যে ব্যক্তি সামর্থ্য থাকার পরও কুরবানী করে না, সে যেন আমাদের ঈদগাহে না আসে।” (ইবনে মাজাহ)
ঈদুল আযহার কুরবানী কেবল একটি প্রথা বা উৎসবের অংশ নয়; এটি মহান আল্লাহর প্রতি আনুগত্য, তাকওয়া এবং ত্যাগের প্রতীক। তাই যাদের ওপর এটি ওয়াজিব হয়েছে, তাদের যথাযথভাবে এই ইবাদত আদায় করা উচিত।