চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সপ্তম ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচন চলতি বছরের আগস্ট-সেপ্টেম্বর মাসে অনুষ্ঠিত হতে পারে। এই লক্ষ্যে কাজ করছে কর্তৃপক্ষ। তবে শিক্ষার্থীদের চাওয়ার প্রেক্ষিতে সময় এগিয়েও আসতে পারে।
গঠনতন্ত্র সিন্ডিকেট সভায় পাসের পর জুনের শেষে ঘোষণা হতে পারে তফসিল। এরই মধ্যে সক্রিয় বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন। শিক্ষার্থীদের নানা অধিকার আদায়ে কর্মসূচি পালন করছে তারা।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চাকসু নির্বাচনের লক্ষ্যে উপ-উপাচার্য প্রশাসন অধ্যাপক ড. মোঃ কামাল উদ্দিনকে আহ্বায়ক করে একটি গঠনতন্ত্র প্রণয়ন কমিটি গঠন করা হয়। এই কমিটি ২০টির অধিক সভার আয়োজন করে একটি খসড়া তৈরি করেছে। এর আগে শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠনের পক্ষ থেকে গঠনতন্ত্র সংস্কারের প্রস্তাবনা চাওয়া হয়। সংস্কারের প্রস্তাবনা সমন্বয় করে একটি চূড়ান্ত গঠনতন্ত্র প্রণয়ন করবে এই কমিটি।
গঠনতন্ত্র প্রণয়ন কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মোঃ কামাল উদ্দিন বলেন, সমাবর্তনের আগে বিভিন্ন ক্লাব ও ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠনের নেতারা লিখিত সংস্থার প্রস্তাবনা দেয়। সেগুলো নিয়ে আমরা দ্রুত সময়ের মধ্যে খসড়া তৈরি করি। খসড়ার বড় অংশে তাদের কোনো আপত্তি নেই। তবে তারা আরো কিছু যুক্ত করেছে।
গত ২৬ মে পর্যন্ত গঠনতন্ত্র বিষয়ে লিখিত মতামত নিয়েছি।
চাকসু ভবন সংস্কার বা নতুন নির্মাণ করা হবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখানে বিভিন্ন ক্লাবের রুম রয়েছে। নির্বাচিত সম্পাদকগুলোকে তাদের সঙ্গে সমন্বয় করে থাকতে হতে পারে। চাকসু ভবন যেহেতু চাকসুকেন্দ্রিক, সেহেতু ক্লাবগুলোর রুম অন্য কোথাও স্থানান্তর করা হতে পারে। কিন্তু আমরা বসে নেই। নতুন চাকসু ভবন নির্মাণের জন্য ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট প্রোপোজাল (ডিপিপি) তৈরি করছি।
তফসিল ঘোষণা কবে হতে পারে এ বিষয়ে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. মনির উদ্দিন বলেন, গঠনতন্ত্র সিন্ডিকেট সভায় পাস হলে চূড়ান্ত হয়ে যাবে। তবে সিন্ডিকেট সভা জুনের ২০-২২ তারিখের দিকে অনুষ্ঠিত হতে পারে। এরপর নির্বাচন কমিশন তফসিল ঘোষণা করতে পারবে। তারা গঠনতন্ত্র চূড়ান্ত হওয়ার অপেক্ষায় আছে।
এদিকে, চাকসু নির্বাচনকে ঘিরে বেশ সক্রিয় রয়েছে বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা। শিক্ষার্থীদের নানা অধিকার আদায়ে কর্মসূচি পালন করতে দেখা যাচ্ছে ছাত্রদল এবং ইসলামী ছাত্রশিবিরকে। এ ছাড়া গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ, ছাত্র অধিকার পরিষদ, ইসলামী ছাত্র আন্দোলনসহ বিভিন্ন ছাত্র ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতারাও নানা ইস্যুতে তৎপর রয়েছেন।
শাখা ছাত্রদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি মামুনুর রশিদ মামুন বলেন, আমরা সব সময়ই চাকসু নির্বাচন চাই। এর আগে বিভিন্ন মিডিয়াতে এ বিষয়ে কথা বলেছি এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে স্মারকলিপি জমা দিয়েছি।
ছাত্রশিবিরের সভাপতি মোহাম্মদ ইব্রাহিম বলেন, চাকসুকে ঘিরে উপাচার্যকে স্মারকলিপি প্রদান, সংবাদ সম্মেলন, গঠনতন্ত্র সংস্কার সবকিছু মিলে আমরা ছাত্রশিবিরের পক্ষ থেকে ছাত্র সংসদ বাস্তবায়ন হোক সে বিষয়ে অগ্রগামী ভূমিকা পালন করেছি।
বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের যুগ্ম-আহ্বায়ক মাহফুজুর রহমান বলেন, আমরা মনে করি একমাত্র চাকসু নির্বাচনের মাধ্যমে ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের বৈধ প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত এবং গণতান্ত্রিক পরিবেশ অক্ষুণ্ণ রাখা সম্ভব।