আদালতে মামলা চলমান থাকা সত্ত্বেও কয়রার সুন্দরবন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মোটা অংকের টাকা নিয়ে নিয়োগ পরীক্ষায় দ্বিতীয় স্থানে থাকা মনিরা পারভিন কে আয়া পদে গোপনে নিয়োগ দেয়ায়, নিয়োগ পরীক্ষায় সর্বোচ্চ মার্কস পেয়ে প্রথম স্থানে থাকা রোজিনা খাতুন বাদী হয়ে মহাপরিচালক মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর ঢাকা সহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
সরজমিন ও অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ইং ৯/১০/২০২১ তারিখে সুন্দরবন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে লিখিত ও মৌখিক নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ওই পরীক্ষায় ৬ জন প্রার্থী অংশগ্রহণ করে। তার মধ্যে ভান্ডারপোল গ্রামের রুহুল কুদ্দুস গাজীর কন্যা রোজিনা খাতুন অংশগ্রহণ করে এবং পরীক্ষায় সে সর্বোচ্চ ১৯ মার্কস পেয়ে মেধা তালিকায় প্রথম স্থান অধিকার করে। পরবর্তীতে স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি রোজিনার কাছে মোটা অংকের টাকা দাবি করে সে টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করায় তার নিয়োগে তালবাহানা ও কালক্ষেপণ করতে থাকে। এরমধ্যে ওই নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নেওয়া একজন প্রার্থীকে দিয়ে ওই নিয়োগের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করান। খুলনা জেলা জজ আদালতের মামলা নং ( দেঃ আপিল মামলা নং ৫৯/২৪। এদিকে ওই স্কুল ম্যানেজিং কমিটির মেয়াদ মাত্র ২ মাস বাকি আছে এই সুযোগে সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে নিয়োগ পরীক্ষায় দ্বিতীয় স্থানে থাকা মাহমুদুল হাসানের স্ত্রী মনিরা পারভিন কে গোপনে নিয়োগ প্রদান করেছে।
ভুক্তভোগী রোজিনা খাতুন বলেন, নিয়মতান্ত্রিকভাবে আমি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে সর্বোচ্চ ১৯ মার্কস পেয়ে মেধা তালিকায় প্রথম স্থান অধিকার করি আমার প্রতিদ্বন্দ্বী দ্বিতীয় স্থানে থাকা মনিরা পারভীনের প্রাপ্ত মার্কস ১১, আমি সর্বোচ্চ মার্কস পেয়েও প্রধান শিক্ষক ও স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি কে টাকা দিতে না পারায় আমার চাকরিটা হলো না। তিনি বিধি বহির্ভূতভাবে দেয়া নিয়োগ বাতিল সহ উক্ত জোকসাজসে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।
এ বিষয়ে জানতে ওই বিদ্যালয়ে গেলে বিদ্যালয়টির সহকারী প্রধান শিক্ষক মোঃ শফিকুল ইসলাম জানান প্রধান শিক্ষক ছুটিতে আছেন । স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিকে না পেয়ে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে কথা হলে তিনি বলেন বিধি অনুযায়ী তাকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে বলেই তিনি ব্যস্ত আছি বলে ফোন কেটে দেন। বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষকের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করেও রিসিভ করেননি।
এ ব্যাপারে আয়া পদে সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত মনিরা পারভীনের সাথে কথা বলতে চাইলেও সহকারী প্রধান শিক্ষক মোঃ শফিক তার সাথে গণমাধ্যম কর্মীদের কথা বলতে দেইনি। আমরা কথা বলতে চাইলেও তিনি সাফ জানিয়ে দেন তার সাথে কথা বলা যাবে না।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ আবুল কালাম আজাদ বলেন এই নিয়োগের বিষয়টা শুনেছি তবে প্রধান শিক্ষক বা ম্যানেজিং কমিটির কেউ আমাকে জানায়নি তৃতীয় পক্ষ আমাকে জানাইছে শুনেছি ওই নিয়োগের বিষয়ে আদালতে মামলা আছে তারপরেও স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক কিভাবে নিয়োগ দিল আমার জানা নেই।