আজ ৩ জুন বিশ্বব্যাপী পালিত হচ্ছে ‘বিশ্ব বাইসাইকেল দিবস’। জাতিসংঘ ২০১৮ সালে এই দিনটিকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেওয়ার পর থেকে প্রতি বছর দিনটি পালিত হয়ে আসছে।
মূলত স্বাস্থ্য, পরিবেশ এবং টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যেই সাইকেল ব্যবহারের গুরুত্ব তুলে ধরতেই দিবসটিকে পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নানা আয়োজনের মাধ্যমেই আজকের দিনটি উদযাপন করা হয়। বাংলাদেশেও দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন সংগঠন ও সাইকেলপ্রেমীদের উদ্যোগে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা, সচেতনতামূলক র্যালি ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন শহরে আজ সকাল থেকেই সাইকেল র্যালি বের হয়, যাতে শত শত সাইকেলপ্রেমী অংশগ্রহণ করেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাইসাইকেল হলো একটি পরিবেশবান্ধব ও স্বাস্থ্যসম্মত যানবাহন। এটি একদিকে যেমন বায়ু দূষণ রোধে সহায়ক, তেমনি মানুষের দৈহিক সুস্থতা বজায় রাখতেও কার্যকর। দিনে অন্তত ৩০ মিনিট সাইকেল চালালে হৃদরোগ, ডায়াবেটিস ও স্থূলতার ঝুঁকি অনেকাংশে কমে যায়।
পরিবেশবাদী সংগঠনগুলো বলছেন, নগরায়নের কারণেই যানজট ও বায়ু দূষণ দিন-দিন বেড়েই চলেছে। এই পরিস্থিতিতে সাইকেল হতে পারে একটি কার্যকর বিকল্পধারা। তবে এর জন্য সাইকেল লেন, নিরাপদ রাস্তা ও যথাযথ অবকাঠামো গড়ে তোলার দাবি জানিয়েছেন তারা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. শাহিনুর রহমান বলেন, “নগরজীবনে সাইকেলের ব্যবহার বাড়ানো গেলে পরিবেশের ওপর চাপ অনেক কমে যাবে। সরকার চাইলে পরিকল্পিতভাবেই সাইকেল ব্যবহারে উৎসাহিত দিতে পারে।”
এদিকে তরুণ সমাজেরই অনেকে এখন সাইকেলকে জীবনযাপনের অংশ হিসেবে গ্রহণ করছেন। কেউ স্বাস্থ্যচর্চা, কেউ বা পরিবেশ সচেতনতার অংশ হিসেবে প্রতিদিন সাইকেল ব্যবহার করছেন।
বিশ্ব বাইসাইকেল দিবসে এবারের প্রতিপাদ্য ছিল “সুস্থ জীবন, সবুজ পৃথিবী সাইকেল চালাই নিরবিচারে।”
দিবসটি উপলক্ষে সরকার এবং বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা সচেতনতামূলক বার্তা প্রচার করছেন।
পরিবেশ রক্ষায় এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি বাসযোগ্য পৃথিবী গড়তে আমাদের প্রত্যেককেই সচেতন হতে হবে। সেই লক্ষ্যে সাইকেল হতে পারেন এক অনন্য সহযাত্রী। বিশ্ব বাইসাইকেল দিবসের মূল বার্তাই হলো স্বাস্থ্য ও পরিবেশ রক্ষায় সকলে মিলে বাইসাইকেল চালানোকে উৎসাহিত করা।