বর্তমান যুগে অনলাইন জুয়ার প্ল্যাটফর্মের প্রসার ঘটছে দ্রুত হারে। বিশেষ করে “ওয়ান এক্স বেট”, “বেট৩৬৫”, “পারিম্যাচ” ইত্যাদি নামক প্ল্যাটফর্মগুলো তরুণ সমাজের মধ্যে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।
খেলাধুলা কিংবা ক্যাসিনো ভিত্তিক এই সাইটগুলো ব্যবহারকারীদের অর্থ বিনিয়োগ করে ফলাফল অনুমান করে জেতার সুযোগ দেয়। কিন্তু প্রশ্ন হলো, ইসলাম এই ধরনের কার্যকলাপ সম্পর্কে কী বলে?
ইসলামে জুয়ার অবস্থান
ইসলাম ধর্মে জুয়া সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ। কোরআন শরীফে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে:
“হে মুমিনগণ! মদ, জুয়া, মূর্তি, ভাগ্য নির্ধারণের তীরসমূহ – এসব শয়তানের অপবিত্র কাজ; সুতরাং এগুলো থেকে দূরে থাক, যাতে তোমরা সফল হতে পারো।”
(সূরা আল-মায়িদাহ, আয়াত ৯০)
এই আয়াত থেকে বোঝা যায়, জুয়া ইসলামে শুধু নিন্দনীয় নয়, এটি শয়তানের অনিষ্টকর কাজের অন্তর্ভুক্ত।
অনলাইনে বাজি ধরার ইসলামি মূল্যায়ন
অনলাইনে বাজি ধরা, যেমন – ফুটবল ম্যাচ, ক্রিকেট, ঘোড়দৌড় বা ক্যাসিনো গেমের ওপর অর্থ রেখে জেতার চেষ্টা – এগুলোও মূলত ঐতিহ্যবাহী জুয়ারই আধুনিক রূপ। এর মাধ্যমে ভাগ্য নির্ভর করে অর্থ উপার্জন করার চেষ্টা করা হয়, যা ইসলামী দৃষ্টিতে সম্পূর্ণরূপে হারাম।
ওলামায়ে কেরামের অভিমত
বিশিষ্ট আলেমগণ ও ইসলামি স্কলাররা একবাক্যে একমত যে, ওয়ান এক্স বেটের মতো প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে অর্থ বিনিয়োগ ও লাভের আশা করা ইসলামি শরিয়তের পরিপন্থী। এটি কেবল ব্যক্তি নয়, পুরো সমাজের নৈতিক অবক্ষয় ও আর্থিক বিপর্যয় ডেকে আনে।
বাংলাদেশের ইসলামী ফিকাহ বোর্ড এবং মুফতি ওলামাগণ এ বিষয়ে ফতোয়া দিয়েছেন যে, এধরনের অনলাইন জুয়া হারাম এবং তা থেকে বিরত থাকা প্রত্যেক মুসলমানের জন্য আবশ্যক।
আইন ও সামাজিক প্রভাব
বাংলাদেশের আইনেও অনলাইন জুয়া নিষিদ্ধ। আইন অনুযায়ী, অবৈধভাবে অনলাইনে টাকা লেনদেন এবং জুয়ার মাধ্যমে অর্থ উপার্জনের চেষ্টা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। অনেক সময় এই প্ল্যাটফর্মগুলো বিদেশি মুদ্রা ব্যবহারের মাধ্যমে মানি লন্ডারিংয়ের ক্ষেত্রেও ব্যবহৃত হয়, যা দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি।
ওয়ান এক্স বেটসহ যেকোনো অনলাইন জুয়া ইসলামিক শরিয়াহ অনুযায়ী হারাম এবং নৈতিকভাবে অবৈধ। মুসলমানদের উচিত এসব থেকে নিজেকে ও সমাজকে রক্ষা করা। অর্থ উপার্জনের বৈধ ও হালাল উপায় অনুসন্ধান করাই প্রকৃত ইসলামী জীবনচর্চার পথ।