কোম্পানির চলমান অভ্যন্তরীণ কোন্দল, শেয়ার জালিয়াতি, ও কর্তৃপক্ষের দুর্বল নজরদারির তীব্র নিন্দা

হোমল্যান্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্সে অবৈধ দখলবিরোধী প্রতিবাদ: কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মানববন্ধন

  • দৈনিক টার্গেট
  • প্রকাশ: ০১:৩২:৫৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫
  • ৭৬ বার পঠিত হয়েছে

হোমল্যান্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স প্রধান কার্যালয়, এল্লাল চেম্বার তৃতীয় তলা, মতিঝিল বাণিজ্যিক এলাকা, ঢাকায় হোমল্যান্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্সে অবৈধ দখলবিরোধী প্রতিবাদে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের এক মানববন্ধন  অনুষ্ঠিত হয়েছে।

ঘটনার সারাংশ

সোমবার সকালে ১০২৫ ঘটিকা থেকে হোমল্যান্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের প্রায় ৪০–৫০ জন কর্মকর্তা ও কর্মচারী প্রধান কার্যালয়ের সামনে অবৈধভাবে বহিষ্কৃত কর্মকর্তাদের অফিস দখলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে রাস্তায় নামেন। মানববন্ধনের মাধ্যমে তারা কোম্পানির চলমান অভ্যন্তরীণ কোন্দল, শেয়ার জালিয়াতি, ও কর্তৃপক্ষের দুর্বল নজরদারির তীব্র নিন্দা জানান।

প্রতিবাদের মূল দাবিসমূহ

অবৈধ দখল উচ্ছেদ: গত ২৯ এপ্রিল চেয়ারম্যান জামাল উদ্দিনের নেতৃত্বে পুলিশের উপস্থিতিতে তালা ভেঙে অফিস দখল করা হয়। এই দখলদারদের মধ্যে শেয়ার জালিয়াতির অভিযোগে অভিযুক্ত ৪ পরিচালকও রয়েছেন। দখলের পর বহিষ্কৃত কর্মকর্তা শাহাদাত হোসেন ও জাকির হোসেনকে জোরপূর্বক ভারপ্রাপ্ত সিইও ও মার্কেটিং প্রধান হিসেবে বসানো হয়।

আইনি প্রক্রিয়ার সমর্থন

ভারপ্রাপ্ত সিইও আবদুল মতিনের বহিষ্কার আদালতের রুল জারির পরও অবৈধ বলে উল্লেখ করেন কর্মীরা। বর্তমানে এই মামলা বিচারাধীন থাকায় কোনো একতরফা পদক্ষেপ গ্রহণযোগ্য নয়।

গ্রাহক ও কর্মী স্বার্থ রক্ষা

কোম্পানির আর্থিক সংকটের কারণে ১৪ লাখ টাকার বীমা দাবি পরিশোধ না করা, ভ্যাট ফাঁকি (৪ কোটি টাকা), এবং লাইফ ফান্ডে ৩৯ কোটি টাকা হ্রাসের মতো অনিয়ম চলছে।

ঘটনার পটভূমি

আর্থিক পতন: গত ৬ বছরে প্রিমিয়াম সংগ্রহ ২৭% (৩৭.২৫ কোটি টাকা) কমেছে, বিনিয়োগ হ্রাস পেয়েছে ৫৯.৭৭ কোটি টাকা, এবং লাইফ ফান্ড সংকুচিত হয়েছে ৩৯.০৪ কোটি টাকা।

পরিচালকদের কোন্দল: ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে ৭ প্রবাসী পরিচালককে গ্রেপ্তারের মাধ্যমে কোম্পানি দখলের কৌশল নেওয়া হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। এ ঘটনায় প্রবাসী বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়েছে।

ওয়েবসাইটে ভুল তথ্য: কোম্পানির ওয়েবসাইটে পরিশোধিত মূলধন ১৮ কোটি টাকা দেখানো হলেও প্রকৃত পরিমাণ মাত্র ৩ কোটি টাকা।

প্রতিবাদে অংশগ্রহণকারীদের বক্তব্য

লুৎফুন্নাহার আলো(সাবেক উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক): “গত এপ্রিলে চেয়ারম্যানের সমর্থকরা আমার অফিসে ঢুকে আমাকে শারীরিকভাবে আক্রমণ করে। আদালতের রুল উপেক্ষা করে এখন তারা কোম্পানির নিয়ন্ত্রণ নিচ্ছে!”।

একজন অনামী কর্মী: “২৫ বছরেও পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হতে পারেনি হোমল্যান্ড। পরিচালকদের লুটপাটে আমরা আর গ্রাহকদের টাকা দিতে পারছি না।”

প্রভাব ও সম্ভাব্য ফলাফল

বিনিয়োগকারীদের আস্থাহানি: প্রবাসী পরিচালকদের গ্রেপ্তার ও অভ্যন্তরীণ কোন্দলে দেশে বিনিয়োগে নিরুৎসাহিত হচ্ছেন প্রবাসীরা।

নিয়ন্ত্রকের ভূমিকাঃ বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) এখনো কার্যকর হস্তক্ষেপ করেনি, যা সংকটকে তীব্রতর করছে।

ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা: প্রতিবাদীরা জানিয়েছেন, আদালতের রায় না পাওয়া পর্যন্ত তারা মানববন্ধন চালিয়ে যাবেন। তবে অফিস ত্যাগের সময় চেয়ারম্যান জামাল উদ্দিনের “ডিসপোজাল”-এর ওপর নির্ভর করছে তাদের পরবর্তী পদক্ষেপ।

মন্তব্য

“হোমল্যান্ডের সংকট কেবল আর্থিক নয়, এটি নৈতিক পতনেরও প্রতীক। আইডিআরএ’র জরুরি হস্তক্ষেপ না পেলে এই প্রতিষ্ঠানের পতন বীমা খাতের ভিত্তি নাড়িয়ে দেবে,”।

কোম্পানির চলমান অভ্যন্তরীণ কোন্দল, শেয়ার জালিয়াতি, ও কর্তৃপক্ষের দুর্বল নজরদারির তীব্র নিন্দা

হোমল্যান্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্সে অবৈধ দখলবিরোধী প্রতিবাদ: কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মানববন্ধন

প্রকাশ: ০১:৩২:৫৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫

হোমল্যান্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স প্রধান কার্যালয়, এল্লাল চেম্বার তৃতীয় তলা, মতিঝিল বাণিজ্যিক এলাকা, ঢাকায় হোমল্যান্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্সে অবৈধ দখলবিরোধী প্রতিবাদে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের এক মানববন্ধন  অনুষ্ঠিত হয়েছে।

ঘটনার সারাংশ

সোমবার সকালে ১০২৫ ঘটিকা থেকে হোমল্যান্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের প্রায় ৪০–৫০ জন কর্মকর্তা ও কর্মচারী প্রধান কার্যালয়ের সামনে অবৈধভাবে বহিষ্কৃত কর্মকর্তাদের অফিস দখলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে রাস্তায় নামেন। মানববন্ধনের মাধ্যমে তারা কোম্পানির চলমান অভ্যন্তরীণ কোন্দল, শেয়ার জালিয়াতি, ও কর্তৃপক্ষের দুর্বল নজরদারির তীব্র নিন্দা জানান।

প্রতিবাদের মূল দাবিসমূহ

অবৈধ দখল উচ্ছেদ: গত ২৯ এপ্রিল চেয়ারম্যান জামাল উদ্দিনের নেতৃত্বে পুলিশের উপস্থিতিতে তালা ভেঙে অফিস দখল করা হয়। এই দখলদারদের মধ্যে শেয়ার জালিয়াতির অভিযোগে অভিযুক্ত ৪ পরিচালকও রয়েছেন। দখলের পর বহিষ্কৃত কর্মকর্তা শাহাদাত হোসেন ও জাকির হোসেনকে জোরপূর্বক ভারপ্রাপ্ত সিইও ও মার্কেটিং প্রধান হিসেবে বসানো হয়।

আইনি প্রক্রিয়ার সমর্থন

ভারপ্রাপ্ত সিইও আবদুল মতিনের বহিষ্কার আদালতের রুল জারির পরও অবৈধ বলে উল্লেখ করেন কর্মীরা। বর্তমানে এই মামলা বিচারাধীন থাকায় কোনো একতরফা পদক্ষেপ গ্রহণযোগ্য নয়।

গ্রাহক ও কর্মী স্বার্থ রক্ষা

কোম্পানির আর্থিক সংকটের কারণে ১৪ লাখ টাকার বীমা দাবি পরিশোধ না করা, ভ্যাট ফাঁকি (৪ কোটি টাকা), এবং লাইফ ফান্ডে ৩৯ কোটি টাকা হ্রাসের মতো অনিয়ম চলছে।

ঘটনার পটভূমি

আর্থিক পতন: গত ৬ বছরে প্রিমিয়াম সংগ্রহ ২৭% (৩৭.২৫ কোটি টাকা) কমেছে, বিনিয়োগ হ্রাস পেয়েছে ৫৯.৭৭ কোটি টাকা, এবং লাইফ ফান্ড সংকুচিত হয়েছে ৩৯.০৪ কোটি টাকা।

পরিচালকদের কোন্দল: ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে ৭ প্রবাসী পরিচালককে গ্রেপ্তারের মাধ্যমে কোম্পানি দখলের কৌশল নেওয়া হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। এ ঘটনায় প্রবাসী বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়েছে।

ওয়েবসাইটে ভুল তথ্য: কোম্পানির ওয়েবসাইটে পরিশোধিত মূলধন ১৮ কোটি টাকা দেখানো হলেও প্রকৃত পরিমাণ মাত্র ৩ কোটি টাকা।

প্রতিবাদে অংশগ্রহণকারীদের বক্তব্য

লুৎফুন্নাহার আলো(সাবেক উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক): “গত এপ্রিলে চেয়ারম্যানের সমর্থকরা আমার অফিসে ঢুকে আমাকে শারীরিকভাবে আক্রমণ করে। আদালতের রুল উপেক্ষা করে এখন তারা কোম্পানির নিয়ন্ত্রণ নিচ্ছে!”।

একজন অনামী কর্মী: “২৫ বছরেও পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হতে পারেনি হোমল্যান্ড। পরিচালকদের লুটপাটে আমরা আর গ্রাহকদের টাকা দিতে পারছি না।”

প্রভাব ও সম্ভাব্য ফলাফল

বিনিয়োগকারীদের আস্থাহানি: প্রবাসী পরিচালকদের গ্রেপ্তার ও অভ্যন্তরীণ কোন্দলে দেশে বিনিয়োগে নিরুৎসাহিত হচ্ছেন প্রবাসীরা।

নিয়ন্ত্রকের ভূমিকাঃ বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) এখনো কার্যকর হস্তক্ষেপ করেনি, যা সংকটকে তীব্রতর করছে।

ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা: প্রতিবাদীরা জানিয়েছেন, আদালতের রায় না পাওয়া পর্যন্ত তারা মানববন্ধন চালিয়ে যাবেন। তবে অফিস ত্যাগের সময় চেয়ারম্যান জামাল উদ্দিনের “ডিসপোজাল”-এর ওপর নির্ভর করছে তাদের পরবর্তী পদক্ষেপ।

মন্তব্য

“হোমল্যান্ডের সংকট কেবল আর্থিক নয়, এটি নৈতিক পতনেরও প্রতীক। আইডিআরএ’র জরুরি হস্তক্ষেপ না পেলে এই প্রতিষ্ঠানের পতন বীমা খাতের ভিত্তি নাড়িয়ে দেবে,”।