আমাদের সামনে এখনও অনেক লক্ষ্যবস্তু রয়েছে। দ্রুত শান্তি না এলে আমরা সেগুলোতে নিখুঁতভাবে আঘাত করব

মার্কিন হুঁশিয়ারি: শান্তি না এলে ইরানের জন্য অপেক্ষা করছে ‘বড় ট্র্যাজেডি’, বহু লক্ষ্যবস্তু এখনও বাকি

  • দৈনিক টার্গেট
  • প্রকাশ: ১১:১২:০৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২২ জুন ২০২৫
  • ৬২ বার পঠিত হয়েছে

ডোনাল্ড ট্রাম্প

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানকে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, শান্তি না আসলে দেশটির জন্য অপেক্ষা করছে এক ভয়াবহ ট্র্যাজেডি। ইরানের তিনটি পরমাণু স্থাপনায় হামলার পর রোববার জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে ট্রাম্প স্পষ্ট করেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হাতে এখনও অনেক লক্ষ্যবস্তু বাকি রয়েছে এবং প্রয়োজনে সেগুলোতে দ্রুত আঘাত হানা হব।

শান্তি নয়তো ধ্বংস: “এই অবস্থা আর চলতে পারে না। হয় শান্তি আসবে, নয়তো ইরানের জন্য এমন এক ট্র্যাজেডি নেমে আসবে, যা গত আট দিনে দেখা ঘটনাগুলোর চেয়েও ভয়াবহ হবে,” বলেছেন ট্রাম্প ।

লক্ষ্যবস্তু অবশিষ্ট: “মনে রাখবেন, আমাদের সামনে এখনও অনেক লক্ষ্যবস্তু রয়েছে। দ্রুত শান্তি না এলে আমরা সেগুলোতে নিখুঁতভাবে আঘাত করব,” তিনি যোগ করেন ।

সামরিক সক্ষমতার দম্ভ: “বিশ্বে কোনো সামরিক বাহিনীই আজকের মতো অভিযান চালাতে পারত না,” বলেই তিনি হামলাকে “অসাধারণ সামরিক সাফল্য” আখ্যা দেন।

২২ জুন ভোরে ইরানের ফোরদো, নাতানজ ও ইসফাহানের তিনটি পরমাণু স্থাপনায় মার্কিন বিমান হামলা চালায়। ট্রাম্প দাবি করেন, এতে ইরানের পারমাণবিক সমৃদ্ধকরণ ক্ষমতা “সম্পূর্ণ ধ্বংস” হয়েছে এবং এটি ইরানকে “রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের পৃষ্ঠপোষক” হিসেবে চিহ্নিত করার অভিযানের অংশ । হামলায় **বি-২ বম্বার** ব্যবহারের কথাও উল্লেখ করা হয়, যা রাডার ফাঁকি দেয়ার ক্ষমতা রাখে।

ইসরায়েলের ভূমিকা: ট্রাম্প ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, “আমরা একসাথে এমন একটি দল হিসেবে কাজ করেছি, যা ইতিহাসে বিরল” ।

পাকিস্তানের সতর্কতা: ইরান-মার্কিন উত্তেজনার মধ্যে পাকিস্তান ইরানের সঙ্গে সব সীমান্ত “অনির্দিষ্টকালের জন্য” বন্ধ করেছে। পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েলের পারমাণবিক সক্ষমতা নিয়েও সতর্ক করেছেন ।

মার্কিন অভ্যন্তরীণ সমালোচনা: ডেমোক্র্যাট কংগ্রেসম্যান রো খন্না অভিযোগ তোলেন যে ট্রাম্প কংগ্রেসের অনুমোদন ছাড়াই এই হামলা চালিয়েছেন, যা “অন্তহীন যুদ্ধের ফাঁদ” তৈরি করতে পারে।

ট্রাম্পের মতে, ইরান যদি শান্তির পথে না আসে, তাহলে পরবর্তী হামলা “আরও সহজ ও ব্যাপক” হবে । মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ ও জেনারেল ড্যান কেইন ২৩ জুন একটি প্রেস ব্রিফিংয়ে হামলার বিস্তারিত তুলে ধরবেন।

ট্রাম্পের এই বক্তব্য কেবল ইরান নয়, গোটা মধ্যপ্রাচ্যের জন্যই উত্তপ্ত পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন:

১. কূটনৈতিক অচলাবস্থা: হামলার মাধ্যমে যেকোনো আলোচনার পথ প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে।

২. প্রতিশোধের আশঙ্কা: ইরান যদি পাল্টা হামলা চালায়, তবে আঞ্চলিক সংঘাত ছড়িয়ে পড়তে পারে ।

৩. গ্লোবাল নিউক্লিয়ার নিরাপত্তা: ইরানের পরমাণু স্থাপনা ধ্বংসের দাবি পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার নিয়ন্ত্রণ চুক্তি (এনপিটি)-এর ভবিষ্যতকে অনিশ্চিত করেছে।

আমি বিশ্বকে জানাতে পারি, এই হামলা এক অসাধারণ সামরিক সাফল্য। এখন ইরানের উচিত শান্তির পথে আসা” -ডোনাল্ড ট্রাম্প।

ট্রাম্প এই হামলাকে ২০২০ সালে ইরানের জেনারেল কাসেম সোলেইমানিকে হত্যার “ধারাবাহিকতা” বলে বর্ণনা করেছেন । তবে তাৎক্ষণিক প্ররোচনা হিসেবে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি ও ইসরায়েলকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগকে তিনি চালিকাশক্তি হিসেবে উল্লেখ করেন।

ভাষণের শেষে ট্রাম্প বলেছেন, “আমি সবাইকে ধন্যবাদ জানাতে চাই, বিশেষ করে সৃষ্টিকর্তাকে। আমরা তোমায় ভালোবাসি, সৃষ্টিকর্তা” । এই মন্তব্য ধর্মীয় রক্ষণশীল আমেরিকান ভোটারদের উদ্দেশ্যেই করা হয়েছে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন। তবে ইরানের পরমাণু স্থাপনায় হামলা এবং হুঁশিয়ারি বৈশ্বিক শান্তির জন্য নতুন সংকট তৈরি করেছে, যার প্রভাব এখন শুধু সময়ই বলতে পারবে।

আমাদের সামনে এখনও অনেক লক্ষ্যবস্তু রয়েছে। দ্রুত শান্তি না এলে আমরা সেগুলোতে নিখুঁতভাবে আঘাত করব

মার্কিন হুঁশিয়ারি: শান্তি না এলে ইরানের জন্য অপেক্ষা করছে ‘বড় ট্র্যাজেডি’, বহু লক্ষ্যবস্তু এখনও বাকি

প্রকাশ: ১১:১২:০৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২২ জুন ২০২৫

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানকে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, শান্তি না আসলে দেশটির জন্য অপেক্ষা করছে এক ভয়াবহ ট্র্যাজেডি। ইরানের তিনটি পরমাণু স্থাপনায় হামলার পর রোববার জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে ট্রাম্প স্পষ্ট করেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হাতে এখনও অনেক লক্ষ্যবস্তু বাকি রয়েছে এবং প্রয়োজনে সেগুলোতে দ্রুত আঘাত হানা হব।

শান্তি নয়তো ধ্বংস: “এই অবস্থা আর চলতে পারে না। হয় শান্তি আসবে, নয়তো ইরানের জন্য এমন এক ট্র্যাজেডি নেমে আসবে, যা গত আট দিনে দেখা ঘটনাগুলোর চেয়েও ভয়াবহ হবে,” বলেছেন ট্রাম্প ।

লক্ষ্যবস্তু অবশিষ্ট: “মনে রাখবেন, আমাদের সামনে এখনও অনেক লক্ষ্যবস্তু রয়েছে। দ্রুত শান্তি না এলে আমরা সেগুলোতে নিখুঁতভাবে আঘাত করব,” তিনি যোগ করেন ।

সামরিক সক্ষমতার দম্ভ: “বিশ্বে কোনো সামরিক বাহিনীই আজকের মতো অভিযান চালাতে পারত না,” বলেই তিনি হামলাকে “অসাধারণ সামরিক সাফল্য” আখ্যা দেন।

২২ জুন ভোরে ইরানের ফোরদো, নাতানজ ও ইসফাহানের তিনটি পরমাণু স্থাপনায় মার্কিন বিমান হামলা চালায়। ট্রাম্প দাবি করেন, এতে ইরানের পারমাণবিক সমৃদ্ধকরণ ক্ষমতা “সম্পূর্ণ ধ্বংস” হয়েছে এবং এটি ইরানকে “রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের পৃষ্ঠপোষক” হিসেবে চিহ্নিত করার অভিযানের অংশ । হামলায় **বি-২ বম্বার** ব্যবহারের কথাও উল্লেখ করা হয়, যা রাডার ফাঁকি দেয়ার ক্ষমতা রাখে।

ইসরায়েলের ভূমিকা: ট্রাম্প ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, “আমরা একসাথে এমন একটি দল হিসেবে কাজ করেছি, যা ইতিহাসে বিরল” ।

পাকিস্তানের সতর্কতা: ইরান-মার্কিন উত্তেজনার মধ্যে পাকিস্তান ইরানের সঙ্গে সব সীমান্ত “অনির্দিষ্টকালের জন্য” বন্ধ করেছে। পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েলের পারমাণবিক সক্ষমতা নিয়েও সতর্ক করেছেন ।

মার্কিন অভ্যন্তরীণ সমালোচনা: ডেমোক্র্যাট কংগ্রেসম্যান রো খন্না অভিযোগ তোলেন যে ট্রাম্প কংগ্রেসের অনুমোদন ছাড়াই এই হামলা চালিয়েছেন, যা “অন্তহীন যুদ্ধের ফাঁদ” তৈরি করতে পারে।

ট্রাম্পের মতে, ইরান যদি শান্তির পথে না আসে, তাহলে পরবর্তী হামলা “আরও সহজ ও ব্যাপক” হবে । মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ ও জেনারেল ড্যান কেইন ২৩ জুন একটি প্রেস ব্রিফিংয়ে হামলার বিস্তারিত তুলে ধরবেন।

ট্রাম্পের এই বক্তব্য কেবল ইরান নয়, গোটা মধ্যপ্রাচ্যের জন্যই উত্তপ্ত পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন:

১. কূটনৈতিক অচলাবস্থা: হামলার মাধ্যমে যেকোনো আলোচনার পথ প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে।

২. প্রতিশোধের আশঙ্কা: ইরান যদি পাল্টা হামলা চালায়, তবে আঞ্চলিক সংঘাত ছড়িয়ে পড়তে পারে ।

৩. গ্লোবাল নিউক্লিয়ার নিরাপত্তা: ইরানের পরমাণু স্থাপনা ধ্বংসের দাবি পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার নিয়ন্ত্রণ চুক্তি (এনপিটি)-এর ভবিষ্যতকে অনিশ্চিত করেছে।

আমি বিশ্বকে জানাতে পারি, এই হামলা এক অসাধারণ সামরিক সাফল্য। এখন ইরানের উচিত শান্তির পথে আসা” -ডোনাল্ড ট্রাম্প।

ট্রাম্প এই হামলাকে ২০২০ সালে ইরানের জেনারেল কাসেম সোলেইমানিকে হত্যার “ধারাবাহিকতা” বলে বর্ণনা করেছেন । তবে তাৎক্ষণিক প্ররোচনা হিসেবে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি ও ইসরায়েলকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগকে তিনি চালিকাশক্তি হিসেবে উল্লেখ করেন।

ভাষণের শেষে ট্রাম্প বলেছেন, “আমি সবাইকে ধন্যবাদ জানাতে চাই, বিশেষ করে সৃষ্টিকর্তাকে। আমরা তোমায় ভালোবাসি, সৃষ্টিকর্তা” । এই মন্তব্য ধর্মীয় রক্ষণশীল আমেরিকান ভোটারদের উদ্দেশ্যেই করা হয়েছে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন। তবে ইরানের পরমাণু স্থাপনায় হামলা এবং হুঁশিয়ারি বৈশ্বিক শান্তির জন্য নতুন সংকট তৈরি করেছে, যার প্রভাব এখন শুধু সময়ই বলতে পারবে।