আজ ২৩ জুন, দেশের সবচেয়ে প্রাচীন ও বৃহৎ রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ৭৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। ১৯৪৯ সালের এই দিনে ঢাকার রোজ গার্ডেনে যাত্রা শুরু করেছিল দলটি। সাধারণত এই দিনটিকে ঘিরে সারাদেশে দলীয় কার্যালয়গুলোতে বিভিন্ন কর্মসূচি, শোভাযাত্রা, আলোচনা সভা ও বর্ণাঢ্য আয়োজন অনুষ্ঠিত হলেও এবার চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন।
বর্তমানে বাংলাদেশে দায়িত্বে রয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, যা দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার দায়িত্বে রয়েছে। এই সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সকল রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন। এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়ে দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে পূর্বনির্ধারিত সব কর্মসূচিও স্থগিত করা হয়েছে।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা এই নিষেধাজ্ঞাকে গণতন্ত্র ও রাজনৈতিক অধিকার হরণের শামিল বলে মন্তব্য করেছেন। তারা বলছেন, “৭৬ বছরের দীর্ঘ ইতিহাসের এই দিনটিকে ঘিরে আমাদের যে আবেগ ও সম্মান, তা আজ পদদলিত হয়েছে একটি অগণতান্ত্রিক ব্যবস্থার কারণে।”
অন্যদিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, বর্তমান সময় দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে রাজনৈতিক দলের কর্মকাণ্ড সাময়িকভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তারা আরো জানায়, নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের লক্ষ্যে দেশে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখাই তাদের মূল লক্ষ্য।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস
১৯৪৯ সালে প্রতিষ্ঠার পর দলটি বিভিন্ন সময় দেশের স্বাধীনতা আন্দোলন, গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা ও উন্নয়নে মুখ্য ভূমিকা পালন করেছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে দলটি বাংলাদেশের স্বাধীনতার নেতৃত্ব দেয়। এরপর আওয়ামী লীগ দীর্ঘ রাজনৈতিক চড়াই-উতরাই পেরিয়ে একাধিকবার রাষ্ট্রক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়।
সর্বশেষ দলটি টানা তিন মেয়াদে রাষ্ট্রক্ষমতায় ছিল। তবে নানা রাজনৈতিক সংকট, আন্দোলন ও বিরোধী পক্ষের দাবির মুখে অবশেষে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়, যা বর্তমান সময় পর্যন্ত দেশের প্রশাসন পরিচালনা করছে।
আজকের দিনটি বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে এক গভীর বার্তা বহন করছে। একদিকে ৭৬ বছরের ঐতিহ্যবাহী দলটির জন্মদিন, অন্যদিকে কোনো আয়োজন নেই, নেই উড়ন্ত পতাকা বা নেতাকর্মীদের পদচারণা। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এ ধরনের রাজনৈতিক নিষেধাজ্ঞা দেশের গণতান্ত্রিক চর্চার জন্য এক অশনি সংকেত।