রাজধানী ঢাকায় বৃহস্পতিবার রাতে তিনটি পৃথক দুর্ঘটনায় এক মাদ্রাসা ছাত্রীসহ তিনজনের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। নিহতরা হলেন দক্ষিণখানের মাদ্রাসা ছাত্রী জান্নাত (২০), বিমানবন্দর এলাকার সোহেল (২৫) এবং কেরানীগঞ্জের লাল চান (৫৫)।
বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে দক্ষিণখান এলাকার ভাই ভাই মার্কেটের নূরানী ট্রেনিং সেন্টার মাদ্রাসার ছাদ থেকে পড়ে গুরুতর আহত হন জান্নাত। তাকে দ্রুত উত্তরার একটি হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরের পর রাত সাড়ে ১২টায় চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
মাদ্রাসার শিক্ষক মোঃ আদনান মাহমুদ জানান, জান্নাত মাদ্রাসার পাঁচতলার ছাদে কাজ করতে গিয়েছিলেন। তবে কীভাবে তিনি পড়ে যান, তা কেউ নিশ্চিত করে বলতে পারেননি।
জান্নাতের বাড়ি কিশোরগঞ্জ জেলার কুলিয়ারচরের পশ্চিম নামাপাড়া গ্রামে। তার বাবার নাম লোকমান হোসেন।
একই রাতে সাড়ে ৯টার দিকে বিমানবন্দর রেল স্টেশনের সামনে রাস্তা পারাপারের সময় ট্রেনের ধাক্কায় গুরুতর আহত হন সোহেল। পরে তাকে কুর্মিটোলা হাসপাতালে নেওয়া হয় এবং সেখান থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। রাত ১২টার দিকে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
সোহেলের স্বজন মোঃ হাসান জানান, তিনি ময়মনসিংহ জেলার গফরগাঁও উপজেলার চর মসলন্দ গ্রামের বাসিন্দা। ঢাকার কাউলায় বসবাস করতেন এবং একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে অফিস সহকারী হিসেবে কাজ করতেন।
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ এলাকায় রাত ৯টা ৩০ মিনিটে ট্রাকের ধাক্কায় গুরুতর আহত হন লাল চান। নাতি তামিমকে নিয়ে মোটরসাইকেলে কোচিং থেকে ফেরার পথে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
লাল চানকে দ্রুত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে রাত ১১টার দিকে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তার নাতি তামিম দুর্ঘটনায় অক্ষত থাকলেও শোকগ্রস্ত স্বজনরা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। লাল চানের বাড়ি দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের পিলবাগই এলাকায়।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্প ইনচার্জ মো. ফারুক জানান, লাল চানের মরদেহ ময়নাতদন্ত ছাড়াই পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। অন্যদিকে জান্নাত ও সোহেলের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।
তিনটি পৃথক দুর্ঘটনায় রাজধানীজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলোতে দুর্ঘটনার কারণ তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ভুক্তভোগীদের স্বজনরা।