গুম ও নির্যাতনের মাধ্যমে বিচারব্যবস্থায় ভারসাম্যহীনতা সৃষ্টি হয়েছে কমিশন

গুম কমিশনের প্রতিবেদন‌ বিচারব্যবস্থার সংকট

  • দৈনিক টার্গেট
  • প্রকাশ: ১১:৫১:৫৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫
  • ৪৭ বার পঠিত হয়েছে

গুম ও নির্যাতনের বিষয়গুলোতে একটি গভীর সংকট সৃষ্টি করেছে বলে জানিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারের গঠিত গুমবিষয়ক কমিশন। তাদের দ্বিতীয় অন্তর্বর্তী প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গুমের শিকার ব্যক্তিদের কাছ থেকে জোরপূর্বক স্বীকারোক্তি আদায়ের জন্য নির্যাতন চালানো হতো, যা শুধু তাদের নাগরিক ও রাজনৈতিক জীবনকেই বিপর্যস্ত করেনি, বরং দেশের বিচারব্যবস্থার মৌলিক ভারসাম্যহীনতার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, বিগত সরকারের শাসনামলে গুম ও নির্যাতনের সংস্কৃতি এমনভাবে বিস্তার লাভ করেছিল যে, ভুক্তভোগীদের পরিবারগুলো তাদের নিজ বাড়িতেও ভীত-সন্ত্রস্ত থাকত। নির্যাতন ও জোরপূর্বক স্বীকারোক্তি আদায়ের ঘটনা অপরাধের তদন্ত প্রক্রিয়াকে বিকৃত করে কেবল সাজা নিশ্চিত করার একটি হাতিয়ারে পরিণত করেছিল।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বেআইনি আটক, নির্যাতন, এবং আইনজীবীর অনুপস্থিতিসহ প্রক্রিয়াগত লঙ্ঘনের ইঙ্গিত সত্ত্বেও গুমের ঘটনায় জোরপূর্বক স্বীকারোক্তিগুলো চূড়ান্ত প্রমাণ হিসেবে ব্যবহৃত হতো। এর ফলে বিচার প্রক্রিয়ায় মৌলিক ভারসাম্যহীনতা দেখা দেয়।

কমিশনের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, তৎকালীন শেখ হাসিনা সরকার বিচারব্যবস্থা এবং নিরাপত্তা সংস্থাকে ব্যবহার করে ভিন্নমত দমন করতে চেয়েছিল। বিরোধী রাজনৈতিক নেতা, সাহসী সাংবাদিক, শ্রমিক নেতা এবং সাধারণ নাগরিকদের ওপর ভয়ভীতি, হয়রানি ও সাজানো মামলার মাধ্যমে চাপ প্রয়োগ করা হয়েছে।

ফৌজদারি বিচারব্যবস্থায় তদন্ত সংস্থা, প্রসিকিউটর এবং বিচারকের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতা বিচার প্রক্রিয়াকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘তদন্ত প্রক্রিয়া যদি পক্ষপাতদুষ্ট হয়, তবে ন্যায়বিচার অসম্ভব হয়ে পড়ে।’

প্রতিবেদনে সুপারিশ করা হয়েছে, ফৌজদারি মামলায় তদন্ত সংস্থা, কৌঁসুলি এবং বিচারকদের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণের জন্য উপযুক্ত কাঠামো তৈরি করতে হবে। দায়িত্বে অবহেলার জন্য সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

গুমবিষয়ক কমিশনের প্রতিবেদন বিচারব্যবস্থার দুর্বলতা এবং গুম ও নির্যাতনের সংস্কৃতির প্রভাবের একটি গভীর চিত্র তুলে ধরেছে। প্রতিবেদনের সুপারিশগুলো কার্যকর হলে দেশের ন্যায়বিচারের পথ আরো সুগম হবে বলে আশা করা যায়।

গুম ও নির্যাতনের মাধ্যমে বিচারব্যবস্থায় ভারসাম্যহীনতা সৃষ্টি হয়েছে কমিশন

গুম কমিশনের প্রতিবেদন‌ বিচারব্যবস্থার সংকট

প্রকাশ: ১১:৫১:৫৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫

গুম ও নির্যাতনের বিষয়গুলোতে একটি গভীর সংকট সৃষ্টি করেছে বলে জানিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারের গঠিত গুমবিষয়ক কমিশন। তাদের দ্বিতীয় অন্তর্বর্তী প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গুমের শিকার ব্যক্তিদের কাছ থেকে জোরপূর্বক স্বীকারোক্তি আদায়ের জন্য নির্যাতন চালানো হতো, যা শুধু তাদের নাগরিক ও রাজনৈতিক জীবনকেই বিপর্যস্ত করেনি, বরং দেশের বিচারব্যবস্থার মৌলিক ভারসাম্যহীনতার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, বিগত সরকারের শাসনামলে গুম ও নির্যাতনের সংস্কৃতি এমনভাবে বিস্তার লাভ করেছিল যে, ভুক্তভোগীদের পরিবারগুলো তাদের নিজ বাড়িতেও ভীত-সন্ত্রস্ত থাকত। নির্যাতন ও জোরপূর্বক স্বীকারোক্তি আদায়ের ঘটনা অপরাধের তদন্ত প্রক্রিয়াকে বিকৃত করে কেবল সাজা নিশ্চিত করার একটি হাতিয়ারে পরিণত করেছিল।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বেআইনি আটক, নির্যাতন, এবং আইনজীবীর অনুপস্থিতিসহ প্রক্রিয়াগত লঙ্ঘনের ইঙ্গিত সত্ত্বেও গুমের ঘটনায় জোরপূর্বক স্বীকারোক্তিগুলো চূড়ান্ত প্রমাণ হিসেবে ব্যবহৃত হতো। এর ফলে বিচার প্রক্রিয়ায় মৌলিক ভারসাম্যহীনতা দেখা দেয়।

কমিশনের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, তৎকালীন শেখ হাসিনা সরকার বিচারব্যবস্থা এবং নিরাপত্তা সংস্থাকে ব্যবহার করে ভিন্নমত দমন করতে চেয়েছিল। বিরোধী রাজনৈতিক নেতা, সাহসী সাংবাদিক, শ্রমিক নেতা এবং সাধারণ নাগরিকদের ওপর ভয়ভীতি, হয়রানি ও সাজানো মামলার মাধ্যমে চাপ প্রয়োগ করা হয়েছে।

ফৌজদারি বিচারব্যবস্থায় তদন্ত সংস্থা, প্রসিকিউটর এবং বিচারকের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতা বিচার প্রক্রিয়াকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘তদন্ত প্রক্রিয়া যদি পক্ষপাতদুষ্ট হয়, তবে ন্যায়বিচার অসম্ভব হয়ে পড়ে।’

প্রতিবেদনে সুপারিশ করা হয়েছে, ফৌজদারি মামলায় তদন্ত সংস্থা, কৌঁসুলি এবং বিচারকদের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণের জন্য উপযুক্ত কাঠামো তৈরি করতে হবে। দায়িত্বে অবহেলার জন্য সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

গুমবিষয়ক কমিশনের প্রতিবেদন বিচারব্যবস্থার দুর্বলতা এবং গুম ও নির্যাতনের সংস্কৃতির প্রভাবের একটি গভীর চিত্র তুলে ধরেছে। প্রতিবেদনের সুপারিশগুলো কার্যকর হলে দেশের ন্যায়বিচারের পথ আরো সুগম হবে বলে আশা করা যায়।