ক্ষমতাসীন দলের সহায়তায় ব্যালট বাক্স রাতেই ভরার অভিযোগ আদালতে তুলে ধরলেন সাবেক সিইসি কেএম নূরুল হুদা

রাতেই ভোট: সিইসি হুদার স্বীকারোক্তি

  • দৈনিক টার্গেট
  • প্রকাশ: ০১:৫২:২০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২ জুলাই ২০২৫
  • ২৯ বার পঠিত হয়েছে

কে এম নুরুল হুদা আদালত

২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে চাঞ্চল্যকর স্বীকারোক্তি দিয়েছেন সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদা।

মঙ্গলবার ১ জুলাই ঢাকার একটি আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে তিনি বলেন, “দিনের ভোট রাতে হয়ে গেছে।” তিনি অভিযোগ করেন, তৎকালীন সরকারের সরাসরি হস্তক্ষেপে, প্রশাসনের একাংশ এবং ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের কর্মীদের সহায়তায় নির্বাচনে ব্যাপক অনিয়ম সংঘটিত হয়েছে।

বিএনপি দায়েরকৃত রাষ্ট্রদ্রোহ ও ভোট ডাকাতির মামলায় গ্রেফতার হওয়ার পর দুই দফায় আট দিনের রিমান্ড শেষে মঙ্গলবার পিবিআই পরিদর্শক সৈয়দ সাজেদুর রহমান আদালতে নূরুল হুদাকে হাজির করেন। এ সময় ‘স্বেচ্ছায়’ জবানবন্দি দিতে চাওয়ায় তা রেকর্ডের জন্য আবেদন করা হয়। অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াদুর রহমান তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন।

জবানবন্দিতে কেএম নূরুল হুদা বলেন, “অনেক কেন্দ্রে ৯০ থেকে ১০০ শতাংশ ভোট পড়েছে, যা আমার কাছে গ্রহণযোগ্য মনে হয়নি। অনেক ব্যালট বাক্স রাতেই ভরে গেছে। ক্ষমতাসীন দলের নেতৃত্বে পুলিশ, রিটার্নিং ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তাদের সহায়তায় এসব ঘটনা ঘটেছে।”

তিনি আরো বলেন, “আমি ও আমার লোকদের অন্ধকারে রেখে এমন অনিয়ম করা হয়েছে। গেজেট প্রকাশের পর নির্বাচন বাতিলের ক্ষমতা আমার ছিল না। আমি মিডিয়ার সামনেও এ নিয়ে অসন্তোষ জানিয়েছিলাম।”

নূরুল হুদা জবানবন্দিতে অভিযোগ করেন, “রিটার্নিং অফিসার এবং সহকারী রিটার্নিং অফিসাররা নির্বাচন কমিশনকে অন্ধকারে রেখে কাজ করেছেন। গোয়েন্দা সংস্থাও মাঠ দখলে রেখে ‘দিনের ভোট রাতে’ সম্পন্ন করতে সহায়তা করেছে।”

নিজের ভাগিনা এসএম শাহজাদা সাজু আওয়ামী লীগের প্রার্থী হওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “ভাগিনার নির্বাচনে আমার কোনো সংশ্লিষ্টতা ছিল না। তবে সম্পর্কের কারণে কিছুটা প্রাধান্য পেয়েছে।”

তিনি অভিযোগ করেন, “মাঠপর্যায়ের সব কর্মকর্তা তৎকালীন ইসি সচিব হেলালুদ্দীনের অধীনে ছিলেন। তিনি আওয়ামী লীগের পক্ষে প্রভাব বিস্তার করেছেন এবং নির্বাচন পরিচালনায় নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।”

উল্লেখ্য, গত ২২ জুন কেএম নূরুল হুদাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এরপর দুই দফায় তাকে চারদিন করে রিমান্ডে নেওয়া হয়। রিমান্ড শেষে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।

অন্যদিকে, আরেক সাবেক সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়ালকেও গত ২৫ জুন মগবাজার থেকে গ্রেফতার করা হয়। তারও তিন দিনের রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

ক্ষমতাসীন দলের সহায়তায় ব্যালট বাক্স রাতেই ভরার অভিযোগ আদালতে তুলে ধরলেন সাবেক সিইসি কেএম নূরুল হুদা

রাতেই ভোট: সিইসি হুদার স্বীকারোক্তি

প্রকাশ: ০১:৫২:২০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২ জুলাই ২০২৫

২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে চাঞ্চল্যকর স্বীকারোক্তি দিয়েছেন সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদা।

মঙ্গলবার ১ জুলাই ঢাকার একটি আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে তিনি বলেন, “দিনের ভোট রাতে হয়ে গেছে।” তিনি অভিযোগ করেন, তৎকালীন সরকারের সরাসরি হস্তক্ষেপে, প্রশাসনের একাংশ এবং ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের কর্মীদের সহায়তায় নির্বাচনে ব্যাপক অনিয়ম সংঘটিত হয়েছে।

বিএনপি দায়েরকৃত রাষ্ট্রদ্রোহ ও ভোট ডাকাতির মামলায় গ্রেফতার হওয়ার পর দুই দফায় আট দিনের রিমান্ড শেষে মঙ্গলবার পিবিআই পরিদর্শক সৈয়দ সাজেদুর রহমান আদালতে নূরুল হুদাকে হাজির করেন। এ সময় ‘স্বেচ্ছায়’ জবানবন্দি দিতে চাওয়ায় তা রেকর্ডের জন্য আবেদন করা হয়। অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াদুর রহমান তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন।

জবানবন্দিতে কেএম নূরুল হুদা বলেন, “অনেক কেন্দ্রে ৯০ থেকে ১০০ শতাংশ ভোট পড়েছে, যা আমার কাছে গ্রহণযোগ্য মনে হয়নি। অনেক ব্যালট বাক্স রাতেই ভরে গেছে। ক্ষমতাসীন দলের নেতৃত্বে পুলিশ, রিটার্নিং ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তাদের সহায়তায় এসব ঘটনা ঘটেছে।”

তিনি আরো বলেন, “আমি ও আমার লোকদের অন্ধকারে রেখে এমন অনিয়ম করা হয়েছে। গেজেট প্রকাশের পর নির্বাচন বাতিলের ক্ষমতা আমার ছিল না। আমি মিডিয়ার সামনেও এ নিয়ে অসন্তোষ জানিয়েছিলাম।”

নূরুল হুদা জবানবন্দিতে অভিযোগ করেন, “রিটার্নিং অফিসার এবং সহকারী রিটার্নিং অফিসাররা নির্বাচন কমিশনকে অন্ধকারে রেখে কাজ করেছেন। গোয়েন্দা সংস্থাও মাঠ দখলে রেখে ‘দিনের ভোট রাতে’ সম্পন্ন করতে সহায়তা করেছে।”

নিজের ভাগিনা এসএম শাহজাদা সাজু আওয়ামী লীগের প্রার্থী হওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “ভাগিনার নির্বাচনে আমার কোনো সংশ্লিষ্টতা ছিল না। তবে সম্পর্কের কারণে কিছুটা প্রাধান্য পেয়েছে।”

তিনি অভিযোগ করেন, “মাঠপর্যায়ের সব কর্মকর্তা তৎকালীন ইসি সচিব হেলালুদ্দীনের অধীনে ছিলেন। তিনি আওয়ামী লীগের পক্ষে প্রভাব বিস্তার করেছেন এবং নির্বাচন পরিচালনায় নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।”

উল্লেখ্য, গত ২২ জুন কেএম নূরুল হুদাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এরপর দুই দফায় তাকে চারদিন করে রিমান্ডে নেওয়া হয়। রিমান্ড শেষে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।

অন্যদিকে, আরেক সাবেক সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়ালকেও গত ২৫ জুন মগবাজার থেকে গ্রেফতার করা হয়। তারও তিন দিনের রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।