Site icon দৈনিক টার্গেট

স্বামীর ঋণের দায়ে ধর্ষিতা গৃহবধূ বিষপানে আত্মহত্যা

কুড়িগ্রামের রাজীবপুরে স্বামীর ২০ হাজার টাকা ঋণের দায়ে দুইমাস ধরে দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন এক গৃহবধূ। স্বামী টাঙ্গাইলে দিনমজুর হিসেবে কাজ করতেন। অভাবের কারণে এই ঋণ নিয়েছিলেন।

বাড়ি ফিরে শারীরিক ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত স্ত্রীকে নিয়ে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের কাছে কোন বিচার না পেয়ে মামলা করতে চান। তখন তারা বিচারের কথা বলে ২০ হাজার টাকা দিয়ে মিটমাটের কথা বলেন। এই দম্পতি তা প্রত্যাখ্যান করেন এবং পরের দিন বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। স্বামীকে বাঁচানো গেলেও গৃহবধূকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। এরকম লোমহর্ষক ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি প্রদান করেন সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরামের সভাপতি প্রকৌশলী শম্পা বসু ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. দিলরুবা নূরী।

বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, যেকোন ঘটনার সবচেয়ে ভয়াবহ প্রভাব পড়ে নারীর উপর। এ ঘটনা তার আরেকটি প্রমাণ। বিষয় ছিল টাকা পরিশোধের কিন্তু দায় পড়ল গৃহবধূর উপর। সমাজে নারী সম্পর্কিত দৃষ্টিভঙ্গী কেমন তা এই ঘটনা থেকে বোঝা যায়। ঘটনার সাথে যারা যুক্ত, মামলা করতে না দেয়া ব্যক্তিরা এবং ২০ হাজার টাকায় মিটমাট করতে চাওয়া মানুষ, প্রত্যেকেই একই দৃষ্টিভঙ্গী দ্বারা পরিচালিত। দেশের কোথাও কি নারী নিরাপদ? দিনের পর দিন ঘরে ঢুকে ৩ জন ধর্ষক ধর্ষণ করে যেতে পারে! এখানে নারীর পোশাক, আচরণের কোন দায় আপনারা দিবেন? শাসকরা তাদের শাসন অব্যাহত রাখার জন্য সমাজে ভোগবাদ, নারীর প্রতি বৈষম্যমূলক ব্যবস্থা বহাল রেখেছে। এর শিকার প্রতিনিয়ত নারীরা হচ্ছে।

নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, এলাকাগুলোতে এরকম মর্মান্তিক ভয়াবহ ফৌজদারি ঘটনাগুলোকে স্থানীয় সালিশির মাধ্যমে ফয়সালা করা হয়, যা অপরাধ। এই অপরাধেরও যদি শাস্তিমূলক ব্যবস্থা আইনগতভাবে না থাকে তাহলে গ্রামে-গঞ্জে এই সমস্ত অপরাধ বাড়তে থাকবে আর নারীরা তার বলি হতে থাকবে।

অবিলম্বে এই ঘটনার সাথে যুক্ত ব্যক্তিদের গ্রেফতার ও বিচারের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন নেতৃবৃন্দ।

Exit mobile version