হিমাগারে মজুতে প্রতি ডজন ডিমে খরচ মাত্র ১ টাকা ২০ পয়সা। অথচ এই সামান্য বিনিয়োগেই এক শ্রেণির ব্যবসায়ীরা লাভ করছেন ২৩ টাকা। ভোক্তাকে জিম্মি করে মুনাফা করার এই প্রবণতাকে অযৌক্তিক বলছে বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন।
এক ডজন ডিম কিনতে গুনতে হয় দেড়শো টাকা; যা মধ্যবিত্তের সংসার খরচে যেন মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা। ভোক্তাকে স্বস্তি দেয়ার নামে হিমাগারে ডিম রাখলেও, সেই ক্রেতার কাঁধেই চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে অতিরিক্ত দাম। ১ লাখ ডিম ৩ মাসের জন্য হিমাগারে রাখতে ব্যয় হয় ২৫-৩০ হাজার টাকা। বাজারে চাহিদা কমে গেলে নষ্ট হওয়া থেকে বাঁচাতে সংরক্ষণ করা হলেও পরে দাম বেড়ে যায় বলে জানিয়েছে পাইকাররা।
এব্যাপারে বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুমন হাওলাদার বলেন, প্রতি হালি ডিম সংরক্ষণে ৪০ পয়সা ব্যয় করে ভোক্তার পকেট থেকে বাড়তি আদায় করা হচ্ছে ৮ টাকা, যা অযৌক্তিক। তাছাড়া ডিমের দামের এই ওঠানামার পেছনে সিন্ডিকেটের হাত থাকতে পারে বলে মনে করেন তিনি।
ডিম সংরক্ষণকে ইতিবাচক হিসেবে দেখলেও দেশে এখনও সেই মানের হিমাগার নেই দাবি করে ব্যবসায়ীদের এই উদ্যোগকে বাজার কারসাজির অংশ হিসেবে দেখছেন ভোক্তার ডিজি।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, ডিম সংরক্ষণের নামে বাজারকে অস্থির করে তোলা হচ্ছে। একেকটা হিমাগারে ৩০ লাখ বা ৫০ লাখ করে ডিম রাখা হচ্ছে। ভোক্তা অধিকারই এখন পর্যন্ত ১ কোটির ওপর ডিম উদ্ধার করেছে। ডিম সংরক্ষণ করা ভালো জিনিস হলেও, বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত পরিপূর্ণ ডিমের সংরক্ষণাগার তৈরি হয়নি।
তবে, নিয়ম মেনেই ডিম সংরক্ষণ করা হচ্ছে বলে দাবি করেন কোল্ড স্টোরেজ মালিক সমিতির সভাপতি মোস্তফা আজাদ বাবু। একদিকে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর হিমাগারে অযৌক্তিকভাবে অভিযান চালাচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি। আবার হিমাগারে ডিম সংরক্ষণে কারসাজি থাকতে পারে বলেও স্বীকার করেন। এক্ষেত্রে সরকারের স্পষ্ট নীতিমালা চান মোস্তফা আজাদ বাবু।
ডিমের জন্য বিশেষায়িত হিমাগার গড়ে তুলতে সরকার দ্রুত উদ্যোগ না নিলে অসাধু ব্যবসায়ীদের তৎপরতা বাড়বে বলেও শঙ্কা সংগঠনটির।