উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চতুর্থ ধাপে ৬০ উপজেলায় ভোট আজ বুধবার। ভোট গ্রহণ চলবে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। এ ধাপে ৫৪ জেলায় ভোট গ্রহণ হবে ব্যালট পেপারে আর বাকি ৬ উপজেলায় ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট হবে। নির্বাচন উপলক্ষে সংশ্লিষ্ট উপজেলাগুলোতে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।
এই ধাপে ৫৮ পৌরসভার উপজেলাগুলোতে ৭ হাজার ৮২৫টি কেন্দ্রে ভোট দেবেন ২ কোটি ১৭ লাখ ৩৪ হাজার ভোটার। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী ৭২১ প্রার্থীর মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ২৫১ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২৬৫ জন আর মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন ২০৫ জন।
সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করার সব প্রস্তুতি নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। বুধবার ১৯৭টি কেন্দ্রে পৌঁছানো হয়েছে ব্যালট পেপারসহ নির্বাচনি সরঞ্জাম। বাকি ৪ হাজার ৯৪৭ কেন্দ্রে আজ ভোরে সেগুলো পৌঁছানো হবে। নির্বাচন উপলক্ষে গতকাল থেকে তিন দিন নৌযান চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। এ ছাড়া মোটরসাইকেল চলাচলেও নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ। নির্বাচনি সাধারণ ও ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র বিবেচেনায় ১৬৬ প্লাটুন বিজিবিসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
এ ধাপের নির্বাচনে নির্বাচনি আচরণবিধি ভঙ্গের দায়ে রবিবার রাঙ্গাবালী উপজেলার তিন প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল করেছে নির্বাচন কমিশন। তারা হলেন- চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. সাইদুজ্জামান মামুন, ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী রওশন মৃধা ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী বেগম ফেরদৌসী। গত ২ জুন রবিবার বিকেলে কমিশনের তলবে হাজির হয়ে ব্যাখ্যা দেওয়া পর তাদের বিরুদ্ধে এ সিদ্ধান্ত নেয় ইসি। এ ছাড়া আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায়ে কমিশনের কাছে দুঃখ প্রকাশ রেহাই পেয়েছেন ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. মহিববুর রহমান।
চতুর্থ ধাপে এরই মধ্যে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হয়েছেন ৪ উপজেলার ৫ প্রার্থী। ইসির তফসিল অনুযায়ী, চতুর্থ ধাপে প্রথমে ভোট হওয়ার কথা ছিল ৫৫ উপজেলায়। তবে ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে কিছুদিন আগে স্থগিত ৫ উপজেলায়ও ভোট হওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। সেই হিসেবে আজ ৬০ উপজেলায় ভোট গ্রহণ হবে। এ ছাড়া নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, তৃতীয় ধাপে ভোটের সময় ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে স্থগিত আরও ২০ উপজেলার ভোট গ্রহণ করা হবে আগামী ৯ জুন।
চার ধাপে অনুষ্ঠেয় এবারের উপজেলা নির্বাচনের আগের তিন ধাপে ভোটের আনুষ্ঠানিকতা এরই মধ্যে শেষ করেছে নির্বাচন কমিশন। গত ৮ মে প্রথম ধাপে দেশের ১৩৯ উপজেলায় ভোট গ্রহণ হয়, ভোটের হার ছিল ৩৬ দশমিক ১৮ শতাংশ। গত ২১ মে দ্বিতীয় ধাপে ১৫৬ উপজেলায় ভোট হয়। ভোটের হার ছিল ৩৭ দশমিক ৬৭ শতাংশ। সবশেষ ২৯ মে তৃতীয় ধাপে ভোট গ্রহণ হয় ৮৭ উপজেলায়, ভোটের হার ৩৮ শতাংশ। বিগত তিন ধাপের নির্বাচনেই ভোটের হার ৪০ শতাংশের নিচে হওয়ায় তা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। সবশেষ চতুর্থ ও শেষ ধাপে আজ কত শতাংশ ভোটার কেন্দ্রে আনতে পারবেন প্রার্থীরা সেটাই এখন দেখার বিষয়। আর এ ধাপের ভোটের মধ্য দিয়েই শেষ হতে যাচ্ছে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের নির্বাচনের আনুষ্ঠানিকতা।