Site icon দৈনিক টার্গেট

কপোতাক্ষের চর খুড়ে প্রকৃতিক সম্পদ শামুক উত্তোলন, হুমকিতে বেঁড়েবাঁধ

Oplus_131072

খুলনার কয়রায় কপোতাক্ষ নদের বিভিন্ন স্থানে অবৈধভাবে শামুক উত্তোলনের মহোৎসব চলছে। প্রশাসনের নাকের ডগায় এই শামুক বিক্রিও হচ্ছে। কয়রা সদর ইউনিয়নের গোবরা গ্রামের সোনাপাড়া নামক স্থানে প্রতিনিয়ত অবৈধ শামুক উত্তোলন চলছে। মেশিনের সাহায্যে ভরাট চরের আট দশ ফুট গভীর থেকে থেকে মাটি খুঁড়ে ঝিনুক উত্তোলন করায় এই অঞ্চলে ভয়াবহ নদীভাঙ্গনসহ প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।

Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!

সরেজমিনে দেখা যায়, কপোতোক্ষ নদের ভাঙ্গন কবলিত স্থানের ১৫০ মিটারের মধ্যে অত্যাধুনিক মেশিনের মাধ্যমে বালু এবং মাটির নিচে থাকা শামুক ৮-১০ ফুট গভীর থেকে পাইপের মাধ্যমে উত্তোলন করা হচ্ছে । অত্যাধুনিক মেশিন হওয়ার কারণে ট্রলারে শামুক এবং বালু ও মাটি নদীতে পড়ে।এভাবে ভাঙ্গনের কূল থেকে শামুক উত্তোলন কার্যক্রম চলমান থাকলে ভয়াবহ ভঙ্গনের সৃষ্টি হয়ে বাধ ধসে আবারো প্লাবিত হবে উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষ। বিনষ্ট হবে কোটি কোটি টাকার সম্পদ ।

স্থানীয় বাসিন্দা মোশারফ হোসেন বলেন, গোবরা গ্রামের কপোতাক্ষ নদের চরে আমার বসত বাড়ির পিছন থেকে একটি চক্র ৮/১০ ইঞ্জিন চালিত ট্রলারের মাধ্যমে প্রতিনিয়ত অবৈধভাবে বালু এবং শামুক উত্তোলন হয়, বিষয়টি বিভিন্ন মাধ্যমে প্রশাসনের কাছে পৌঁছালে ও প্রশাসন ব্যবস্থা নিচ্ছেনা। আমরা এলাকাবাসী এক হয়ে প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করলে আমাদের নামে রাজনৈতিক দলের ট্যাগ লাগিয়ে চাঁদাবাজ বলে বিভিন্নভাবে হয়রানি করার চেষ্টা করছে। এভাবে যদি তারা প্রতিনিয়ত মাটি খুঁড়ে ঝিনুক উত্তোলন করতে থাকে তাহলে আমার বসতবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হবে। পরিবার পরিজন নিয়ে মাথা গোজার ঠাইটুকু হারিয়ে যাবে।

স্থানীয় আরো এক বাসিন্দা বলেন, আমার নিজস্ব কোন জমি নেই রাস্তার বাইরে বসবাস করি গত শনিবার সকাল দশটার দিকে নদীর চরে আমার বসত বাড়িসংলগ্ন চর থেকে অবৈধভাবে শামুক উত্তোলন করছিল, আমরা এলাকাবাসী এক হয়ে প্রতিরোধ করার চেষ্টা করে তাদেরকে সচেতন করে ছেড়ে দেই। এভাবে শামুক উত্তোলন করলে ভাঙ্গন সৃষ্টি হয়ে আমাদের ঘরবাড়ি নদীর সাথে মিশে যাবে।কিন্তু পরবর্তীতে জানতে পারি প্রভাবশালী নেতা এবং সাংবাদিক পরিচয়ধারি ব্যক্তি এই চক্রের মূল হোতা। গ্রামবাসী মিলে এই শামুক উত্তোলন বন্ধ করার কথা বলায় বিভিন্ন হুমকি ধামকি অব্যাহত রেখেছে।

চক্রটি পুনরায় চরের মাটি খুঁড়ে ঝিনুক উত্তোলন না করতে পারে সেজন্য এলাকাবাসী প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় একাধিক জেলে বলেন, আমরা নদীর চরে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করি এভাবে বালু ও শামুক উত্তোলন করায় নদী ভাঙ্গনের ফলে চর নষ্ট হয়ে আমাদের জীবিকা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে ।

এলাকাবাসী জানান, গত এক দশকে তিন বারের বেশি গোবরা এলাকা নদী ভাঙ্গনের কবলে পড়ে উপজেলা সদরসহ বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়ে রাস্তাঘাট ঘরবাড়ি গাছপালা অফিস আদালত প্লাবিত হয়ে কোটি কোটি টাকার সম্পদ বিনষ্ট হয়েছে। এভাবে চরের ভরাট স্তরের মাটি খুঁড়ে শামুক ঝিনুক উত্তোলনের ফলে নদী ভাঙ্গনের সৃষ্টি হচ্ছে। তাছাড়া শামুক ঝিনুক প্রকৃতির সম্পদ এই সম্পদ বিনষ্ট হওয়ায় প্রকৃতি হারিয়ে ফেলছে তার ভারসাম্য যে কারণে প্রতিনিয়ত প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে পড়ে নিঃস্ব হচ্ছে উপকূলের লাখ লাখ মানুষ।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রভাবশালী নেতার ছত্রছায়ায় তারা অবৈধ ভাবে বালু ও শামুক,ঝিনুক উত্তোলন করে চলেছে। এবার এলাকাবাসীর প্রতিরোধের মুখে তারা পালিয়ে গেলেও স্থানীয় ওই নেতার কমিশন বন্ধ হাওয়ায় বিভিন্নভাবে হুমকি ধামকি অব্যাহত রেখেছে। তারা পুনারায় আবারো শামুক ঝিনুক উত্তোলন করার হুমকি দিচ্ছে।

কাশীয়াবাদ ফরেস্ট স্টেশন কর্মকর্তা নাছির উদ্দীন বলেন, কপোতাক্ষ নদী থেকে শামুক উত্তোলন করা অপরাধ, এধরণের অভিযোগ পেলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকি।

WhatsApp

আমাদের WhatsApp চ্যানেল ফলো করুন

ফলো করুন
Exit mobile version