বন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে জেলেদের বিস্ফোরক অভিযোগ তদন্তের দাবি

সুন্দরবনে টাকার বিনিময়ে মাছ ধরার অবৈধ সুযোগ বিক্রির অভিযোগ

🌍 মহিলা বিশ্বকাপ ২০২৫ 🏆

⏳ সময় গণনা চলছে...

সুন্দরবনের নিষিদ্ধ এলাকায় টাকার বিনিময়ে মাছ ধরার সুযোগ করে দেওয়া এবং পরে বেশি টাকা না পেলে জেলেদের আটক করে চালান দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বন বিভাগের কিছু অসাধু কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।

Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!

খুলনার কয়রা উপজেলার ৪ নম্বর কয়রা গ্রামের মৎস্যজীবী মোঃ রজব আলী সোমবার সকালে কয়রা প্রেসক্লাবের হলরুমে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ তুলে ধরেন।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, পশ্চিম সুন্দরবনের খুলনা রেঞ্জের ভ্রমোরখালী টহলফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল হাকিম দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে এ ধরনের কর্মকাণ্ড বহুগুণে বেড়ে গেছে। সুন্দরবনের ওই অংশটি সরকার কর্তৃক অভয়ারণ্য এলাকা ঘোষিত হওয়ায় সেখানে জেলেদের প্রবেশ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। তবুও দায়িত্বে থেকে ওই কর্মকর্তা আব্দুল হাকিম গরিব জেলেদের প্রভাবিত করে সেখানে ঢোকার ও মাছ ধরার অনুমতি দেন এবং বিনিময়ে নেন “গোন চুক্তি” অনুযায়ী টাকা প্রতি দশ দিনে এক গোন।

রজব আলী জানান, নৌকা প্রতি ১০ হাজার টাকা করে তাদের ১০টি নৌকার জন্য প্রতিবার গোনের আগে ওই কর্মকর্তার হাতে নগদ এক লাখ টাকা দিতে হতো। সে মোতাবেক প্রায় ৮-১০ দিন আগে আব্দুল হাকিম কয়রা সদরে এসে একটি হোটেলে অবস্থানকালে মহাজনের উপস্থিতিতে তার হাতে গোন চুক্তির অগ্রিম বাবদ নগদ ৮০ হাজার টাকা দেওয়া হয়। এরপর তারা বনে প্রবেশ করে মাছ ধরতে থাকেন।

কিন্তু আগাম টাকা নেওয়া সত্ত্বেও গত ২ অক্টোবর ওই কর্মকর্তা তাদের সাতজন জেলেকে আটক করে টহলফাঁড়িতে নিয়ে যান। সেখানে আরও বেশি টাকা দাবি করে তাদের অবৈধভাবে দুই দিন আটক করে রাখেন। জেলেরা টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে ৫ অক্টোবর বন আদালতের মাধ্যমে মামলা দিয়ে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়। এ ঘটনার পর বাকিরা বিপদ বুঝে পালিয়ে বাড়ি ফিরে আসেন।

Google News দৈনিক টার্গেটের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল

রজব আলী আরো জানান, দীর্ঘদিন ধরে সুন্দরবনের বিভিন্ন নদ-নদীতে কিছু বন কর্মকর্তা প্রভাবিত চুক্তির মাধ্যমে জেলেদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে মাছ ধরার অনুমতি দেন। কিন্তু কিছুদিন পর আরও বেশি টাকা দাবির উদ্দেশ্যে একই জেলেদের আটক করে নৌকা, জাল ও মাছ জব্দ করেন এবং আদালতে চালান দেন। এতে নিরীহ জেলেরা চরম আর্থিক ক্ষতির শিকার হচ্ছেন।

তিনি বলেন, বন বিভাগের কিছু কর্মকর্তার এই অনৈতিক আচরণে বনজীবী সম্প্রদায়ের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। তারা প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নদীতে নামছেন, অথচ সঠিক পাশ ও পারমিট থাকা সত্ত্বেও কর্মকর্তাদের অবৈধ অর্থদাবি মেনে নিতে বাধ্য হচ্ছেন।

রজব আলী আরো বলেন, “আমরা নিয়ম মেনে রাজস্ব দিয়ে মাছ ধরতে চাই, কিন্তু বন বিভাগের কিছু অসাধু কর্মকর্তা আমাদের কাছ থেকে জোর করে টাকা নিচ্ছেন। টাকা না দিলে তারা নৌকা ও মাছ জব্দ করে মামলা দিয়ে দিচ্ছেন।”

তিনি এ সময় সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে বন বিভাগের অনিয়ম ও দুর্নীতি তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান। পাশাপাশি সুন্দরবনের জেলেদের বৈধভাবে মাছ ধরার সুযোগ ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।

সংবাদ সম্মেলনে উপকূলীয় এলাকার আরও বেশ কয়েকজন জেলে উপস্থিত ছিলেন। তারা বন বিভাগের নির্দিষ্ট কয়েকজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে একই ধরনের অভিযোগ করেন এবং সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানান।

WhatsApp

আমাদের WhatsApp চ্যানেল ফলো করুন

ফলো করুন

দৈনিক টার্গেট

আমাদের ফেসবুক পেজটি ফলো করুন সর্বশেষ খবর পেতে।

ফলো করুন

বন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে জেলেদের বিস্ফোরক অভিযোগ তদন্তের দাবি

সুন্দরবনে টাকার বিনিময়ে মাছ ধরার অবৈধ সুযোগ বিক্রির অভিযোগ

প্রকাশ: ০৩:১৯:১৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ৬ অক্টোবর ২০২৫

🌍 মহিলা বিশ্বকাপ ২০২৫ 🏆

⏳ সময় গণনা চলছে...

সুন্দরবনের নিষিদ্ধ এলাকায় টাকার বিনিময়ে মাছ ধরার সুযোগ করে দেওয়া এবং পরে বেশি টাকা না পেলে জেলেদের আটক করে চালান দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বন বিভাগের কিছু অসাধু কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।

Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!

খুলনার কয়রা উপজেলার ৪ নম্বর কয়রা গ্রামের মৎস্যজীবী মোঃ রজব আলী সোমবার সকালে কয়রা প্রেসক্লাবের হলরুমে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ তুলে ধরেন।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, পশ্চিম সুন্দরবনের খুলনা রেঞ্জের ভ্রমোরখালী টহলফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল হাকিম দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে এ ধরনের কর্মকাণ্ড বহুগুণে বেড়ে গেছে। সুন্দরবনের ওই অংশটি সরকার কর্তৃক অভয়ারণ্য এলাকা ঘোষিত হওয়ায় সেখানে জেলেদের প্রবেশ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। তবুও দায়িত্বে থেকে ওই কর্মকর্তা আব্দুল হাকিম গরিব জেলেদের প্রভাবিত করে সেখানে ঢোকার ও মাছ ধরার অনুমতি দেন এবং বিনিময়ে নেন “গোন চুক্তি” অনুযায়ী টাকা প্রতি দশ দিনে এক গোন।

রজব আলী জানান, নৌকা প্রতি ১০ হাজার টাকা করে তাদের ১০টি নৌকার জন্য প্রতিবার গোনের আগে ওই কর্মকর্তার হাতে নগদ এক লাখ টাকা দিতে হতো। সে মোতাবেক প্রায় ৮-১০ দিন আগে আব্দুল হাকিম কয়রা সদরে এসে একটি হোটেলে অবস্থানকালে মহাজনের উপস্থিতিতে তার হাতে গোন চুক্তির অগ্রিম বাবদ নগদ ৮০ হাজার টাকা দেওয়া হয়। এরপর তারা বনে প্রবেশ করে মাছ ধরতে থাকেন।

কিন্তু আগাম টাকা নেওয়া সত্ত্বেও গত ২ অক্টোবর ওই কর্মকর্তা তাদের সাতজন জেলেকে আটক করে টহলফাঁড়িতে নিয়ে যান। সেখানে আরও বেশি টাকা দাবি করে তাদের অবৈধভাবে দুই দিন আটক করে রাখেন। জেলেরা টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে ৫ অক্টোবর বন আদালতের মাধ্যমে মামলা দিয়ে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়। এ ঘটনার পর বাকিরা বিপদ বুঝে পালিয়ে বাড়ি ফিরে আসেন।

Google News দৈনিক টার্গেটের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল

রজব আলী আরো জানান, দীর্ঘদিন ধরে সুন্দরবনের বিভিন্ন নদ-নদীতে কিছু বন কর্মকর্তা প্রভাবিত চুক্তির মাধ্যমে জেলেদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে মাছ ধরার অনুমতি দেন। কিন্তু কিছুদিন পর আরও বেশি টাকা দাবির উদ্দেশ্যে একই জেলেদের আটক করে নৌকা, জাল ও মাছ জব্দ করেন এবং আদালতে চালান দেন। এতে নিরীহ জেলেরা চরম আর্থিক ক্ষতির শিকার হচ্ছেন।

তিনি বলেন, বন বিভাগের কিছু কর্মকর্তার এই অনৈতিক আচরণে বনজীবী সম্প্রদায়ের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। তারা প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নদীতে নামছেন, অথচ সঠিক পাশ ও পারমিট থাকা সত্ত্বেও কর্মকর্তাদের অবৈধ অর্থদাবি মেনে নিতে বাধ্য হচ্ছেন।

রজব আলী আরো বলেন, “আমরা নিয়ম মেনে রাজস্ব দিয়ে মাছ ধরতে চাই, কিন্তু বন বিভাগের কিছু অসাধু কর্মকর্তা আমাদের কাছ থেকে জোর করে টাকা নিচ্ছেন। টাকা না দিলে তারা নৌকা ও মাছ জব্দ করে মামলা দিয়ে দিচ্ছেন।”

তিনি এ সময় সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে বন বিভাগের অনিয়ম ও দুর্নীতি তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান। পাশাপাশি সুন্দরবনের জেলেদের বৈধভাবে মাছ ধরার সুযোগ ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।

সংবাদ সম্মেলনে উপকূলীয় এলাকার আরও বেশ কয়েকজন জেলে উপস্থিত ছিলেন। তারা বন বিভাগের নির্দিষ্ট কয়েকজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে একই ধরনের অভিযোগ করেন এবং সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানান।

WhatsApp

আমাদের WhatsApp চ্যানেল ফলো করুন

ফলো করুন