বাংলাদেশে বর্তমানে অনুমোদিত বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫০টি। তবে এর মধ্যে পূর্ণ সম্প্রচারে রয়েছে মাত্র ৩৬টি চ্যানেল। বাকি ১৪টি প্রতিষ্ঠান এখনো সম্প্রচারের প্রস্তুতি পর্যায়ে রয়েছে।
Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!সম্প্রতি অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে আরো দুটি নতুন টেলিভিশন চ্যানেলকে সম্প্রচারের লাইসেন্স দিয়েছে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়- ‘নেক্সট টিভি’ ও ‘লাইভ টিভি’।
নতুন দুই চ্যানেলের অনুমোদন
তথ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, নতুন নীতিমালা প্রণয়নের প্রক্রিয়া চলমান থাকায় আগের নীতিমালা অনুযায়ীই এই দুটি লাইসেন্স অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
‘নেক্সট টিভি’-র লাইসেন্স পেয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক মো. আরিফুর রহমান তুহিন। তিনি ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে জাতীয় নাগরিক কমিটিতে যোগ দেন। সাংবাদিকতা পেশা থেকেই তিনি রাজনীতিতে যুক্ত হন।
অন্যদিকে, ‘লাইভ টিভি’-র লাইসেন্স পেয়েছেন আরিফুর রহমান নামের আরেক ব্যক্তি, যিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট থেকে পড়াশোনা শেষ করে দীর্ঘদিন গণমাধ্যমে কাজ করেছেন। তিনি নাগরিক কমিটির সদস্য ছিলেন, যদিও পরবর্তীতে এনসিপিতে যোগ দেননি।
পূর্ববর্তী সরকারের সময়ে লাইসেন্সপ্রাপ্তি
তথ্য মন্ত্রণালয়ের একাধিক সূত্রে জানা গেছে, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সাড়ে ১৫ বছরে মোট ২৮টি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলকে লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে। এই চ্যানেলগুলোর অধিকাংশই সরকারঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী, সাংবাদিক ও রাজনীতিবিদদের মালিকানাধীন।
বেসরকারি টিভি প্রতিষ্ঠার অনুমোদন দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয় ১৯৯৮ সালে, যখন প্রথমবারের মতো বেসরকারি টেলিভিশন স্থাপন ও পরিচালনার নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়।
১৯৯৬–২০০১ মেয়াদে আওয়ামী লীগ সরকার ৩টি চ্যানেল, বিএনপি–জামায়াত জোট সরকারের সময়ে ১০টি চ্যানেল, আর ২০০৯ সালের পর থেকে বিভিন্ন পর্যায়ে ২৫টির বেশি চ্যানেল অনুমোদন পায়।
অনুমোদনের প্রক্রিয়া ও শর্ত
বেসরকারি স্যাটেলাইট টেলিভিশন পরিচালনার লাইসেন্স পেতে হলে যেকোনো বাংলাদেশি নাগরিক আবেদন করতে পারেন। এ জন্য প্রার্থীদের দিতে হয় জাতীয় পরিচয়পত্র, প্রতিষ্ঠানের গঠনতন্ত্র, ইনকরপোরেশন সনদ, ট্রেড লাইসেন্স, আয়কর সনদ, ব্যাংক সলভেন্সি সার্টিফিকেট, প্রকল্প প্রস্তাবনা এবং ৩০০ টাকার নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে চ্যানেল পরিচালনার অঙ্গীকারনামা।
আবেদন জমা পড়লে তা প্রথমে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যাচাই করে, পরে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সুপারিশে অনুমোদন দেওয়া হয়। লাইসেন্স মঞ্জুর হলে বিটিআরসি থেকে ‘ফ্রিকোয়েন্সি ক্লিয়ারেন্স’ নিতে হয়, যা সরকারের চূড়ান্ত অনুমতির ওপর নির্ভরশীল।
আইপি টিভি ও নতুন আবেদনসমূহ
বর্তমানে দেশে ১৫টি আইপি টিভি (ইন্টারনেট প্রটোকল টেলিভিশন) আনুষ্ঠানিকভাবে অনুমোদিত রয়েছে। এছাড়া আরও বেশ কিছু নতুন চ্যানেল অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে, যেগুলোর বিষয়ে মন্ত্রণালয় পর্যবেক্ষণ করছে।
দীর্ঘদিন ধরে সম্প্রচার খাতে নতুন নীতিমালা প্রণয়নের দাবি থাকলেও তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি। তবুও সরকারের অনুমোদন প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে। নতুন যুক্ত হওয়া ‘নেক্সট টিভি’ ও ‘লাইভ টিভি’ সম্প্রচার শুরু করলে দেশে সক্রিয় বেসরকারি টেলিভিশনের সংখ্যা আরও বাড়বে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
দৈনিক টার্গেট 























