ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) নবনির্বাচিত কার্যনির্বাহী পরিষদের প্রথম সভায় গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ডাকসুর পাঁচ নেতাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেটে সদস্য হিসেবে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা, প্রশাসন ও ছাত্রকল্যাণ–সংক্রান্ত নীতি নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে এই সিনেট।
Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!আজ রোববার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে অনুষ্ঠিত সভায় এই মনোনয়ন চূড়ান্ত করা হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন ডাকসুর সভাপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমদ খান।
মনোনীত পাঁচ নেতা হলেন- সহসভাপতি (ভিপি) আবু সাদিক কায়েম, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) এস এম ফরহাদ, সহসাধারণ সম্পাদক (এজিএস) মহিউদ্দিন খান, পরিবহন সম্পাদক আসিফ আবদুল্লাহ এবং সদস্য সাবিকুন নাহার তামান্না।
সভা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ডাকসুর ভিপি আবু সাদিক কায়েম বলেন- আমরা নেতা নই, প্রতিনিধি। জয়-পরাজয়ের হিসাব ভুলে শিক্ষার্থীরা যাতে যেকোনো সমস্যা আমাদের সঙ্গে নির্দ্বিধায় ভাগ করতে পারেন, সেটাই আমাদের লক্ষ্য। আমরা সবার জন্য কাজ করব।
তিনি আরও জানান- সিনেটে অন্তর্ভুক্তির মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীদের স্বার্থ রক্ষায় নতুন মাত্রা যোগ হবে।
ডাকসুর সাধারণ সম্পাদক এস এম ফরহাদ বলেন- আমরা সবাই ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শ থেকে এলেও শিক্ষার্থীদের স্বার্থই হবে আমাদের একমাত্র অঙ্গীকার। শিগগিরই বিভাগভিত্তিক স্বল্পমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হবে।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, আবাসিক শিক্ষার্থীদের জন্য হলে আলাদা ফোরাম থাকলেও অনাবাসিক শিক্ষার্থীরা প্রায়ই নানা সমস্যায় পড়েন। এ বিষয়টি মাথায় রেখে পরিবহন সম্পাদককে সিনেটে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
সহসাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন খান বলেন- আমরা চাই শিক্ষার্থীদের একাডেমিক ও প্রশাসনিক সমস্যাগুলো দ্রুত সমাধান হোক। সিনেটে থেকে সে কাজ করার সুযোগ পাবো।
পরিবহন সম্পাদক আসিফ আবদুল্লাহ জানান, অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের যাতায়াত সমস্যা দীর্ঘদিনের। তিনি বলেন- আমি চেষ্টা করব পরিবহন সংকট নিরসন ও নতুন উদ্যোগ বাস্তবায়নে।
সদস্য সাবিকুন নাহার তামান্না বলেন- মহিলা শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা, আবাসন ও স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা আমাদের বড় চ্যালেঞ্জ। সিনেটে থেকে এ বিষয়ে কার্যকর প্রস্তাব দেব।
সভায় উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমদ খান বলেন- ডাকসু হলো শিক্ষার্থীদের সর্ববৃহৎ প্ল্যাটফর্ম। শিক্ষার্থীদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট যেকোনো বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ডাকসুর সঙ্গে সমন্বয় করবে।
তিনি আরও জানান, চলতি মাসেই ডাকসুর পূর্ণাঙ্গ কর্মপরিকল্পনা প্রকাশ করা হবে। পাশাপাশি সিনেট সদস্যদের নাম শিগগিরই গেজেট আকারে প্রকাশ করা হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী সংস্থা। এখানে শিক্ষক, প্রশাসন ও ছাত্র প্রতিনিধি একসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামগ্রিক নীতি, বাজেট, একাডেমিক উন্নয়ন এবং প্রশাসনিক কর্মকাণ্ডের বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। ডাকসু থেকে মনোনীত সদস্যরা সেখানে শিক্ষার্থীদের মতামত ও স্বার্থ তুলে ধরার সুযোগ পান।
ডাকসুর নবনির্বাচিত নেতাদের এই মনোনয়ন শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশার জায়গা তৈরি করেছে। এখন দেখার বিষয়, তারা নিজেদের প্রতিশ্রুতি কতটা কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন করতে পারেন এবং কীভাবে শিক্ষার্থীদের আস্থা ধরে রাখতে সক্ষম হন।