মণীষ পাণ্ডের বীরত্বে ২০১৪ সালে শেষবারের মতো শিরোপা উৎসব করেছিল কলকাতা। এরপর কেটে গেছে ১০ বছর, মাঝে কয়েকবার প্লে-অফ খেললেও শিরোপার দেখা পায়নি রাসেল-নারিনরা। সেই আক্ষেপ মিটিয়ে তৃতীয়বারের মতো আইপিএল শিরোপা ঘরে তুললো শাহরুখ খানের দল। মেগা ফাইনালে সানরাজার্স হায়দরাবাদকে আট উইকেটে হারিয়েছে শ্রেয়াস আইয়াররা।
Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!আইপিএলের ফাইনাল মানেই ভরপুর রোমাঞ্চ ও নাটকীয়তায় ঠাসা। গত ১৬ আসরের পরিসংখ্যান তো তেমনটাই বলে। সেই হিসেবে এবারও জমজমাট এক ফাইনালের প্রত্যাশা ছিল ভক্তদের। কিন্তু, মেগা ফাইনালে সানরাইজার্স হায়দরাবাদের ব্যাটারদের ব্যর্থতায় সেটা আর হয়ে ওঠেনি। ম্যাড়ম্যাড়ে ফাইনালে শিরোপা জিততে খুব একটা বেগ পেতে হয়নি কলকাতাকে।
আজ রোববার (২৬ মে) চেন্নাইয়ের এম চিদাম্বারাম স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ১৮.৩ ওভারে সব উইকেট হারিয়ে স্কোরবোর্ডে ১১৩ রান তোলে হায়দরাবাদ। জবাবে গুরবাজ-ভেঙ্কটেশের ব্যাটে ১০.৩ ওভারে দুই উইকেট হারিয়ে জয় তুলে নেয় কলকাতা। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৫২ রান করেন ভেঙ্কটেশ।
১১৪ রানের সহজ লক্ষ্য তাড়ায় নেমে প্রথম বলে ৬ হাঁকিয়ে ভালো শুরুর ইঙ্গিত দেন সুনীল নারিন। তবে ক্রিজে বেশিক্ষণ থিতু হতে পারেননি তিনি। দলীয় ১১ রানের মাথায় প্যাট কামিন্সের লেন্থ ডেলিভারিতে ডিপ মিডউইকেটের ওপর তুলে মারতে গিয়ে শাহবাজের হাতে ধরা পড়েন এই ক্যারিবীয় ব্যাটার। ২ বলে ৬ রান আসে তার ব্যাট থেকে।
এরপর দুই অভিজ্ঞ ব্যাটার রহমানউল্লাহ গুরবাজ ও ভেঙ্কটেশ আইয়ার মিলে দারুন জুটি গড়ে দলকে এগিয়ে নেন। এই দুই ব্যাটারের সামনে দাঁড়াতে পারেনি হায়দরাবাদের কোনো বোলার। এই দুইজন গড়েন ৯১ রানের জুটি। অবশেষে দলীয় ১০২ রানের মাথায় শাহবাজ আহমেদের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফেরেন এই ডানহাতি ব্যাটার। আউটের আগে করেন ৩২ বলে ৩৯ রান। এরপর আর কোনো উইকেট না হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় কলকাতা।
এর আগে, ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই বিপদে পড়ে হায়দরাবাদ। মিচেল স্টার্কের অবিশ্বাস্য বোলিংয়ে দলীয় ২ রানের মাথায় হারায় ওপেনার অভিষেক শর্মার উইকেট। প্রথম ওভারেই অসি তারকার গুড লেন্থের পিচ বরাবর দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে বোল্ড হন এই বাঁহাতি ওপেনার। আউটের আগে করেন ৫ বলে ২ রান।
অভিষেকের বিদায়ের ধাক্কা সামলে ওঠার আগেই ফের বিপাকে পড়ে হায়দরাবাদ। এবার সাজঘরের পথ ধরেন দারুণ ছন্দে থাকা ট্রাভিস হেড। দ্বিতীয় ওভারে রানে খাতার খোলার আগেই ভৈবব অরোরার বলে উইকেটের পেছনে রহমানউল্লাহ গুরবাজের হাতে ক্যাচ তুলে দেন তিনি।
পরবর্তীতে এইডেন মার্করাম ও রাহুল ত্রিপাটির ব্যাটে শুরুর ধাক্কা সামাল দেওয়ার চেষ্টা করে হায়দরাবাদ। তাদের সেই প্রতিরোধ বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। পঞ্চম ওভারে ফের আঘাত হানেন স্টার্ক। এবার তুলে নেন ত্রিপাটির উইকেট। দ্বিতীয় ডেলিভারিতে স্টার্কের লাফিয়ে ওঠা বলকে মিড অফের ওপর দিয়ে তুলে মারতে গিয়ে রামানদিপের হাতে ক্যাচ তুলে দেন তিনি। ১৩ বলে মাত্র ৯ রান করে ফেরেন ত্রিপাটি।
এরপর নিতিশ কুমারকে নিয়ে দলকে এগিয়ে নেন মার্করাম। এই জুটিও খুব বেশি বড় হয়নি। দলীয় ৪৭ রানের মাথায় হারশিত রানার বলে রহমানউল্লাহ গুরবাজের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন নিতিশ (১৩)।
মাত্র ৪৭ রানের মাথায় চার উইকেট হারিয়ে পাহাড়সম চাপে পড়ে হায়দরাবাদ। সেই চাপ সামালের দায়িত্ব নেন দুই প্রোটিয়া ব্যাটার এইডেন মার্করাম ও হেনরিখ ক্লাসেন। উইকেটে তখন আশার আলো বলতে ছিলেন এই দুজনই। কিন্তু প্রতি ম্যাচে ঝড় তোলা এই তারকারাও আজ জ্বলতে পারেনি। দলীয় ৬১ রানের মাথায় আন্দ্রে রাসেল বোলিংয়ে এসেই মার্করামকে ফেরান সাজঘরে। ২৩ বলে ২০ রান করে আউট হন এই ডানহাতি ব্যাটার। মাঝে একে একে সাজঘরে ফেরেন শাহবাজ ও আব্দুল সামাদ। ক্রিজে থাকা শেষ আশা ক্লাসেনও থেমে যান। ১৬ রানে তিনি বোল্ড হওয়ার পর বড় সংগ্রহের আশাও শেষ হয়ে যায় হায়দরাবাদের।
এটি দলটির তৃতীয় আইপিএল শিরোপা। এর আগে ২০১২ ও ২০১৪ মৌসুমে শিরোপা জয়ের স্বাদ পেয়েছিল কলকাতা। সেবার সেই চ্যাম্পিয়ন দলের সদস্য ছিলেন বাংলাদেশের অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান।
দৈনিক টার্গেট 

























