২০২৪ সালের জুলাই মাসে বাংলাদেশে সংঘটিত গণ-অভ্যুত্থানের পর দেশটির প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এই রায় আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল তার বিরুদ্ধে শাস্তি ঘোষণা করেছে।
Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!মার্কিন গণমাধ্যম সিএনএন সম্প্রতি এই মৃত্যুদণ্ডকে কেন্দ্র করে একটি সম্পাদকীয় প্রকাশ করেছে। সম্পাদকীয়তে উল্লেখ করা হয়েছে, যদি ভারতের মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে প্রত্যার্পণ করা হয়, তবে তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হবে। এর কারণে ভারত এখনও তাকে ফেরত পাঠাতে অনীহা প্রকাশ করছে।
রায়ে বলা হয়েছে, গত বছরের ছাত্রদের নেতৃত্বাধীন বিক্ষোভ দমন করার সময় শেখ হাসিনা হত্যাযজ্ঞ চালানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন। আগামী ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রেক্ষাপটেও এই রায়কে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
শেখ হাসিনার রাজনৈতিক জীবন বহু উত্থান-পতনের ইতিহাস বয়ে গেছে। ১৯৭৫ সালের আগস্টে তার বাবা শেখ মুজিবুর রহমান ও পরিবারের অন্য সদস্যদের হত্যার পর পশ্চিম জার্মানিতে থাকার কারণে তিনি প্রাণে বেঁচে যান। এরপর ছয় বছর ভারতে নির্বাসনে থাকার পর ১৯৮১ সালে বাংলাদেশে ফেরার দিনটি তার কাছে একটি গুরুত্বপূর্ণ স্মৃতি হয়ে রইল।
এরপর ১৯৯৬ সালে শেখ হাসিনা প্রথমবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হন। ক্ষমতায় আসার পর তিনি ১৯৭৫ সালের হত্যাকাণ্ডের বিচার কার্যকর করেন। পরবর্তীতে একাধিক নির্বাচনে তার রাজনৈতিক যাত্রা ওঠা-নামা সহ অভ্যুত্থান, ক্ষমতার পুনরুদ্ধার এবং দীর্ঘ সময়ের জন্য শাসন অব্যাহত রাখার গল্পে ভরা।
তার শাসনামল ক্রমশ কঠোর হয়ে ওঠে। রাজনৈতিক সহিংসতা, বিরোধী দলের দমন, মিডিয়া এবং স্বতন্ত্র মতের ব্যক্তিদের উপর চাপ প্রয়োগের অভিযোগ তার শাসনকালকে বিতর্কিত করে তোলে। গত বছরের ছাত্র-জনতা আন্দোলন তার স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে সশস্ত্র ও নৃশংস প্রতিরোধে পরিণত হয়। জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থা অনুসারে, তার নির্দেশে প্রায় ১,৪০০ জন নিহত হয়।
এই পরিস্থিতিতে ভারতের ভূমিকা অত্যন্ত সংবেদনশীল হয়ে উঠেছে। শেখ হাসিনার নিরাপত্তার জন্য ভারত তাকে আশ্রয় দিয়ে রাখলেও, মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হলে আন্তর্জাতিক চাপ আরও বৃদ্ধি পাবে। বর্তমানে তিনি দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে একটি জটিল কূটনৈতিক সংকটের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, শেখ হাসিনার জীবন কেবল রাজনৈতিক ঘটনা নয়, বরং বাংলাদেশ এবং দক্ষিণ এশিয়ার আধুনিক রাজনীতির একটি সংকীর্ণ, কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। তার কর্মকাণ্ড ও পদক্ষেপ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলেছে।
দৈনিক টার্গেট 















