তরুণদের নেতৃত্বাধীন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) অবশেষে নির্বাচনী প্রতীক হিসেবে ‘শাপলা কলি’ নিতে সম্মত হয়েছে। রোববার (২ নভেম্বর) বিকেলে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) সঙ্গে বৈঠক শেষে এ সিদ্ধান্তের কথা জানান দলের মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী।
Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “আমরা এখন ‘শাপলা কলি’ প্রতীক নিয়েই নির্বাচনে অংশ নিতে প্রস্তুত। আগামী জাতীয় নির্বাচনে ধানের শীষের সঙ্গে শাপলা কলির প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে।”
এদিন এনসিপির প্রতিনিধি দল নির্বাচন ভবনে গিয়ে সিইসির সঙ্গে প্রায় এক ঘণ্টাব্যাপী আলোচনা করে। দলের যুগ্ম আহ্বায়ক খালে খালেদ সাইফুল্লাহ এবং যুগ্ম সদস্য সচিব জহিরুল ইসলাম মুসা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। নির্বাচন কমিশনের সচিব আখতার আহমেদও আলোচনায় অংশ নেন।
দীর্ঘ টানাপোড়েনের পর সমাধান
গত ৩০ অক্টোবর নির্বাচন কমিশন (ইসি) তাদের প্রতীকের তালিকা সংশোধন করে ‘শাপলা কলি’ যুক্ত করে গেজেট প্রকাশ করে। এর আগে এনসিপি ‘শাপলা’ প্রতীক চেয়ে আবেদন জানালেও ইসি সেটি অন্তর্ভুক্ত করেনি। বিকল্প হিসেবে কমিশন নতুন প্রতীক হিসেবে ‘শাপলা কলি’ প্রস্তাব দেয়।
তবে প্রাথমিকভাবে দলটি এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে জানায়, তারা শুধু ‘শাপলা’ প্রতীকেই নির্বাচন করতে চায়। এমনকি কিছু নেতার অভিযোগ ছিল, ইসি নাকি ইচ্ছাকৃতভাবে “শাপলা কলি” যুক্ত করে দলটিকে “অপরিপক্ব বা শিশুতোষ” বোঝানোর চেষ্টা করেছে।
প্রতীকের জন্য দীর্ঘ আবেদন ও আলোচনার পথচলা
গত ২২ জুন এনসিপি নিবন্ধনের আবেদন জমা দেয় এবং তিনটি প্রতীক প্রস্তাব করে- শাপলা, কলম ও মোবাইল ফোন। পরে ৩ আগস্ট ও ২৪ সেপ্টেম্বরের চিঠিতে তারা তাদের পছন্দ সংশোধন করে জানায়, তারা সাদা বা লাল শাপলা প্রতীক চায়। কিন্তু ২৩ সেপ্টেম্বর ইসি যখন নির্বাচনি প্রতীকের সংখ্যা ৬৯ থেকে বাড়িয়ে ১১৫ করে, তখনও ‘শাপলা’ তালিকায় রাখা হয়নি।
এরপরও দলটি একাধিকবার ইসির সঙ্গে বৈঠক করে এবং প্রতীক নির্বাচনের সময়সীমা বাড়ানোর অনুরোধ জানায়। প্রথমে ৭ অক্টোবর পর্যন্ত সময় দিলেও, পরে তা বাড়িয়ে ১৯ অক্টোবর পর্যন্ত করা হয়।
তবে এনসিপি তখনও ‘শাপলা’ প্রতীকের ব্যাপারে অনড় অবস্থান নেয় এবং ইসির কাছে জানতে চায়— কোন মানদণ্ডে প্রতীক অন্তর্ভুক্ত বা বাদ দেওয়া হয়।
অবশেষে সমঝোতার পথে তরুণদের দল
দীর্ঘ আলোচনার পর অবশেষে এনসিপি ‘শাপলা কলি’ প্রতীক গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়। নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর ভাষায়, “আমরা জনগণের স্বার্থে আপস করেছি। তরুণদের প্রতিনিধিত্বের প্রতীক হিসেবে ‘শাপলা কলি’ও আমাদের আদর্শের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।”
দলটির নেতারা মনে করছেন, প্রতীক নিয়ে অচলাবস্থা শেষ হওয়ায় এখন তারা নির্বাচনী প্রস্তুতিতে সম্পূর্ণ মনোযোগ দিতে পারবেন।
আগামী জাতীয় নির্বাচনে ধানের শীষ ও শাপলা কলি প্রতীকের মধ্যে যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে উঠবে, তা রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন এক প্রতীকী লড়াই হিসেবে দেখা হচ্ছে।
দৈনিক টার্গেট 






















